AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

গরু সম্পর্কে জ্ঞান কত? যাচাই করতে পরীক্ষা দেবে ৫ লাখেরও বেশি পড়ুয়া!

রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের পাঠ্যসূচি (Syllabus)-তে বলা হয়েছে, দেশী গরুর কুঁজে এমন বিশেষ কিছু উপাদান থাকে যা সূর্যরশ্মি শোষণ করে তাকে সোনায় পরিণত করে। সেই কারণেই দুধের রঙ কিছুটা হলুদ হয়।

গরু সম্পর্কে জ্ঞান কত? যাচাই করতে পরীক্ষা দেবে ৫ লাখেরও বেশি পড়ুয়া!
ফাইল চিত্র।
| Updated on: Feb 21, 2021 | 2:16 PM
Share

কলকাতা: দেশীয় গরুর উপকারিতা সম্পর্কে কতটা জানেন দেশবাসী, তা পরীক্ষা করতেই আগামী বৃহস্পতিবার হতে চলেছে “দেশীয় গো বিজ্ঞান” পরীক্ষা (Indigenous cow science Exam)। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় গ্রান্ট কমিশন (University Grants Commission)-র তরফে দেশের ৯০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চাযদের চিঠি পাঠানো হয়েছে পড়ুয়াদের এই পরীক্ষায় অংশ নিতে উৎসাহিত করার জন্য। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ (Rashtriya Kamdhenu Aayog)-র তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য আবেদন পাঠিয়েছেন।

দেশবাসীর মধ্যে গো-সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ও গো-পালনে উৎসাহিত করতে ২০১৯ সালে জাতীয় পশুপালন মন্ত্রকের তরফে রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ নামক একটি কমিটি তৈরি করা হয়। সেই কমিটির তরফেই দেশীয় গরু সম্পর্কে সাধারণের জ্ঞান যাচাই করতে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। মোট ১৩টি ভাষায় অনলাইনেই এই পরীক্ষা হবে। সকল পরীক্ষার্থীকে অংশগ্রহণের জন্য সার্টিফিকেটও দেওয়া হবে। এই প্রথমবার এমন কোনও পরীক্ষা হতে চলেছে। গত ১৫ জানুয়ারি পরীক্ষার দিনঘোষণা থেকেই পাঠ্যসূচি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল।

কী রয়েছে পাঠ্যসূচিতে?

গরুর দুধে সোনার উপস্থিতি থেকে শুরু করে গোবর ব্যবহারে পরমাণু শক্তি থেকে সুরক্ষা-সবই বলা হয়েছে পাঠ্যসূচিতে। একসময়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ গরুর দুধে সোনার উপস্থিতির দাবি করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এদিকে, রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের পাঠ্যসূচি (Syllabus)-তে সেই দাবিকেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, দেশী গরুর কুঁজে এমন বিশেষ কিছু উপাদান থাকে যা সূর্যরশ্মি শোষণ করে তাকে সোনায় পরিণত করে। সেই কারণেই দুধের রঙ কিছুটা হলুদ হয়।

আরও পড়ুন: ‘আবদুল কালামকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছিলেন মোদীই’

একইসঙ্গে বলা হয়েছে, ভারত ও রাশিয়ায় পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে ক্ষতিকারক বিকিরণ থেকে রক্ষা পেতে গোবর ব্যবহার করা হয়। উদাহরণ হিসাবে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার (Bhopal Gas Tragedy) কথাও বলা হয়েছে। কামধেনু আয়োগের দাবি, ওই দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষের মৃত্যু হলেও যাদের বাড়ির দেওয়ালে ঘুটে লাগানো ছিল, তাঁরা ওই ক্ষতিকারক গ্যাসের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।

বিদেশী গরুর তুলনায় দেশী গরু বুদ্ধিমান ও নম্র হয়, সেকথাও বলা হয়েছে এই পাঠ্যসূচিতে। দেশী গরু সর্বক্ষণ নিজেদের গা চেটে পরিষ্কার রাখে বলেই তাদের থেকে কোনও রোগ ছড়ায় না। দেশী গরুদের মধ্যে আবেগ-অনুভূতিও রয়েছে। সে কারণেই দেশী গরুর সামনে অচেনা কেউ উপস্থিত হলে তারা উঠে দাঁড়ায়, কিন্তু বিদেশি গরুদের মধ্যে কোনও অনুভূতিই নেই।

গো-বিজ্ঞানের পরীক্ষা সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের চেয়ারম্যান ভাল্লাভাই কাঠিরিয়া (Vallabhai Kathiria) বলেন, “এতে অবৈজ্ঞানিক কোনও বিষয় নেই। দেশীয় প্রজাতির গরুদের উপকারিতা সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে চাই আমরা। সেই কারণেই এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।” গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইউজিসির তরফে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কামধেনু গৌ-বিজ্ঞান প্রচার প্রসার পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়। এই পরীক্ষাকে সমর্থন জানানো হয়েছে এবিভিপির তরফ থেকেও। কলকাতার এবিভিপির ভাইস প্রেসিডেন্ট আদিত্য দাস বলেন, “আমরা নিজেদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করেছি। সাধারণ মানুষের কাছে গরু সম্পর্কে জ্ঞান, অজানা তথ্য, অর্থনৈতিক উপকারিতার বিষয়ে তথ্য তুলে ধরা হবে। এরপরের সিদ্ধান্ত নেবে সাধারণ মানুষ।”

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ামক সংস্থার কাছ থেকে এইধরনের নোটিস পেয়ে কার্যত ক্ষুব্ধ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) অধ্যাপক-পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক পার্থ রায় বলেন, “গবেষণার জন্য কেন্দ্র ৬০ কোটি টাকা দিতে পারছে না, কিন্তু নির্দিষ্ট একটি চিন্তাধারা পড়ুয়াদের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।”

আরও পড়ুন: কোন পথে পরবর্তী সেনা প্রত্যাহার? সূত্র খুঁজতে ১৬ ঘণ্টা ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করল ভারত-চিন