নয়া দিল্লি: এক সময় তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী। সঙ্গে বেশ কিছুদিন ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ। একে একে সে সব পদ হারালেও মাঝের সাড়ে তিন বছর তিনি কাটিয়েছিলেন গেরুয়া শিবিরে। রাজধানীর ভোটার আইকার্ড-ধারী বাসিন্দাও হয়ে উঠেছিলেন। তাই দিল্লির ঠিকানায় তাঁর আঁচড় পড়েনি। কিন্তু পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুলে প্রত্যাবর্তনের কয়েক মাসের মধ্যেই দিল্লির বাড়ি হারাতে হল মুকুল রায়কে।
রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্ব। ১৮১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউর এই বাংলোই গত কয়েক বছর ধরে মুকুলের রাজধানীর ঠিকানা হয়ে থেকেছে। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকেই সেই বাড়ি খালি করা শুরু করে দিল্লি পুলিশ। শনিবারের মধ্যে মুকুলের নেমপ্লেট খুলে ফেলা হয়। চলতি বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগেও যে বাড়িটা জনসমাগমে গমগম করছিল, সেখানে এখন কার্যত শ্মশানের নিস্তব্ধতা।
মুকুলের গাড়ি, আসবাবপত্র, ড্রাইভার, ব্যক্তিগত দেহরক্ষী, সবাইকেই কার্যত বের করে দেওয়া হয়েছে ওই বাড়ি থেকে। ফলে আপাতত দিল্লিতে কোনও ঠিকানা রইল না মুকুলের। তবে কাকতালীয় বিষয়টি হচ্ছে, মুকুলের এই বাড়ির পাশেই যে বাংলোটি রয়েছে তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মুকুলের বাড়ির ঠিকানা ১৮১ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউ। অভিষেক থাকেন ১৮৩ নম্বর সাউথ অ্যাভিনিউতে।
রাজনীতির বহু উথাল-পাথাল ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী থেকেছে মুকুলের এই বাড়ি। আগে যখন তিনি তৃণমূলে ছিলেন, তখন দিল্লি গেলে এই বাড়িতেই থাকতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে সেখানে দেখা করতে আগমন ঘটেছে অগণিত বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীর। আবার একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুকুলের এই বাসভবনেই দলবদলের ‘মেলা’ লাগতে দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Kolkata Covid 19: ফিরতে পারে কন্টেনমেন্ট জ়োন! এক মাসেই শহরের আক্রান্ত বেড়ে দ্বিগুণ
কিন্তু সেসব এখন অতীত। আপাতত ভোটার কার্ডে মুকুলের ঠিকানা কাঁচরাপাড়া। রাজনীতির ঠিকানা তৃণমূল। তাই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে নতুন করে কোনও অবতারে না এলে দিল্লিতে আপাতত মুকুলের ঠিকানা খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে আজ নয়তো কাল এই বাড়ি যে তাঁকে ছাড়তেই হতো, সেটা একপ্রকার ধরা-বাঁধা ছিল।
আরও পড়ুন: Bhawanipur Bypoll: বুথপ্রতি দু’জন করে এজেন্ট! তৃণমূলের চেনা ছকেই মমতাকে ফাঁদে ফেলতে চায় বিজেপি
কারণ ঘর ওয়াপসির পর থেকেই লাগাতার তাঁকে ওই বাড়ি ছাড়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্যসভার হাউস কমিটি। মুকুল একাধিকবার অতিরিক্ত সময়ও চেয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সময় দিল না রাজ্যসভা। সরকারি নির্দেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দিল্লি পুলিশ দিয়ে খালি করা হল মুকুলের আস্তানা।
আরও পড়ুন: Cut Money: ‘আত্মহত্যা ছাড়া রাস্তা নেই,’ কাটমানির জ্বালায় অতিষ্ঠ বৃদ্ধ দম্পতির চিঠি বিডিও-কে