নাগাল্যান্ড : ভুলবশত গুলিতে মৃত্যু ১৪ জন নিরপরাধ গ্রামবাসীর। শনিবার বিকেলের সেই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সব মহলই। সেনাবাহিনীর তরফে বিবৃতি প্রকাশ করা হলেও প্রশ্ন উঠেছে একাধিক। এরই মধ্যে সরব হয়েছেন নাগাল্যান্ডের বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী তেমজেন ইম্মা আলং। তাঁর দাবি, গোয়েন্দাদের তথ্য নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তা নিছকই অজুহাত। এই ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ বা ‘যুদ্ধাপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে তেমজেন ইম্মা আলং বলেন, ‘নিরীহ সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে এই ঘটনা গণহত্যার সামিল। শান্তির মাঝে এ যে যুদ্ধের অপরাধ। না।’ তিনি উল্লেখ করেছেন নিরীহ মানুষগুলো ছিলেন পরিশ্রমী শ্রমিক। তাঁরা দিনের শেষে নিজেদের কাজের জায়গা থেকে ফিরছিলেন। তাঁদের কাছে কোনও আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল না। সুতরাং, এটি শান্তির সময় যুদ্ধের সমতুল্য।
আলং একটি বিবৃতিতে অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই অপরাধের জন্য দাবি অসম রাইফেলসের কর্মীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। অসম রাইফেলসের সদস্যদের জবাবদিহি করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সেনা বাহিনীর সদস্যরা কেন বুঝতে পারেনি যে পিকআপ ট্রাকে নিরস্ত্র নিরীহ মানুষ ছিল। কী করে কমান্ডিং অফিসার এই নির্দেশ দিলেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
গোটা ঘটনাটিকে বিজেপি একটি হতাশাজনক ঘটনা বলেও চিহ্নিত করেছেন এই নেতা। এ দিন কেন্দ্রীয় সরকার ও নাগাল্যান্ড সরকারের কাছে নিহতের আত্মীয়দের জন্য দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি। নিহতদের আত্মার চিরশান্তিরও কামনা করেছেন আলং।
নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সীমান্তবর্তী তিরু গ্রামে অনুপ্রবেশ রুখতে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর অভিযান চালায়। আর সেই অভিযানেই ঘটে যায় ‘ভুল’। শনিবার রাতে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন নিরপরাধ গ্রামবাসী। প্রাথমিকভাবে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন গ্রামবাসী এবং একজন সেনা জওয়ান।
শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ সেনার একটি দল তিরু-ওটিং সড়কের উপর একটি পিক-আপ ট্রাককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ট্রাকটিতে আটজন আরোহী ছিলেন – তাঁদের মধ্যে ছয়জন ঘটনাস্থলেই মারা যান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বাকি দুজনও মারা যান। প্রাথমিকভাবে অনুমান, ট্রাকে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় কয়লা খনির শ্রমিক। এই ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার সকালেই টুইটে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন তিনিও। ওই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন : Nagaland Firing: স্থানীয় পুলিশ, অসম রাইফেলকে না জানিয়েই অভিযান? কোথায় ভুল করল প্যারা স্পেশাল ফোর্স?