Nagaland Firing: স্থানীয় পুলিশ, অসম রাইফেলকে না জানিয়েই অভিযান? কোথায় ভুল করল প্যারা স্পেশাল ফোর্স?
Civilians death in Nagaland: ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাধিক সূত্র মারফত খবর, ওই অভিযানের বিষয়ে নাকি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কিংবা অসম রাইফেলসের কাছে কোনও তথ্যই ছিল না।
নয়া দিল্লি : নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশ রুখতে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর অভিযান চলাকালীন বড়সড় ‘ভুল’। এক মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। অভিযানে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন নিরপরাধ গ্রামবাসী। প্রাথমিকভাবে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন গ্রামবাসী এবং একজন সেনা জওয়ান।
নাগাল্যান্ডে ভারতীয় সেনা বাহিনীর প্যারা স্পেশাল ফোর্সের এলিট ইউনিটের ওই অভিযান ঘিরে এখন তোলপাড় হচ্ছে গোটা দেশ। নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের জঙ্গি ভেবে ভুল করেছিলেন জওয়ানরা৷ আর তারই পরিণতি, ১৩ জন নিরপরাধ গ্রামবাসীর মৃত্যু। এ এক ভয়ঙ্কর ভুল। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। উত্তেজিত গ্রামবাসীদের একাংশ চড়াও হয় জওয়ানদের উপর। তাতে একজন সেনা জওয়ানও প্রাণ হারিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মোট ১৪ জনের মৃত্যু। কিন্তু ঠিক কোন জায়গাটাই ভুলটা করে ফেলেছিল সেনা?
ঘটনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একাধিক সূত্র মারফত খবর, ওই অভিযানের বিষয়ে নাকি স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কিংবা অসম রাইফেলসের কাছে কোনও তথ্যই ছিল না। তাহলে কি পুলিশ বা অসম রাইফেলসকে না জানিয়েই এই অভিযান শুরু করা হয়েছিল? এমন প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। অথচ ওই এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে পুলিশ এবং অসম রাইফেলস।
তার উপর এই মন এলাকাটি হল নাগা গোষ্ঠী এনএসসিএন(কে) এবং অসমের আলফার (ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম) ঘাঁটি। মন জেলাটির সঙ্গে মায়ানমারের আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে এবং সেইসঙ্গে অসমের সঙ্গে অন্তর্দেশীয় সীমা করে। দীর্ঘদিন ধরে এই ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এলাকাটি অত্যন্ত অস্থির এবং স্পর্শকাতর বলে পরিচিত।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ সেনার একটি দল তিরু-ওটিং সড়কের উপর একটি পিক-আপ ট্রাককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ট্রাকটিতে আটজন আরোহী ছিলেন – তাঁদের মধ্যে ছয়জন ঘটনাস্থলেই মারা যান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বাকি দুজনও মারা যান। প্রাথমিকভাবে অনুমান, ট্রাকে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই স্থানীয় কয়লা খনির শ্রমিক। সূত্রের খবর, ট্রাক থেকে কোনওরকম অস্ত্র বা গোলাবারুদ উদ্ধার হয়নি।
এর পরই পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যায়। প্রায় কয়েকশো গ্রামবাসী হাতে পাথর, দা নিয়ে জওয়ানদের উপর চড়াও হয় বলে সূত্রের খবর। জওয়ানরা আত্মরক্ষার্থে ফের গুলি চালায়। তাতে আরও অন্তত ৫ জন গ্রামবাসী নিহত হন বলে সূত্রের খবর। জখম হন আরও অনেকে। গ্রামবাসীদের অতর্কিত হামলায় সাত জওয়ান জখম হন। মৃত্যু হয় এক কমান্ডোর।
নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নেফিউ রিও ঘটনার সময় দিল্লিতে ছিলেন। ঘটনার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি রাজ্যে ফিরে এসেছেন তিনি। শীঘ্রই নাগাল্যান্ড মন্ত্রিসভার এক বৈঠক ডাকতে পারেন তিনি। সূত্রের খবর, আগামিকাল নাগাল্যান্ডের কোহিমায় শীর্ষ সেনা আধিকারিক, পুলিশ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকদের বৈঠক বসতে চলেছে। কোনওরকম গুজব বা ভুয়ো খবর যাতে ছড়িয় না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই মন জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা এবং এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আজ সন্ধ্যায়, মন শহরের পরিস্থিতি ফের নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা অসম রাইফেলসের ক্যাম্প ঘেরাও করে। পুলিশ সূত্র জানা গিয়েছে, তাঁরা ক্যাম্পের একটি অংশে আগুন লাগানোর চেষ্টা করেন।