‘বুয়া আ রহি হ্যায়- খিদমত করো’, কীসের কোড ওয়ার্ড ছিল এটা? এরপর যা হয়েছিল, তাতে গায়ে কাঁটা দিতে বাধ্য
Kargil War: কার্গিলের খাড়াই পাহাড়ে বাতালিক সেক্টরে মুনতো ঢালোয় ছিল পাক সেনার অস্থায়ী সাপ্লাই সেন্টার। ভারতে অনুপ্রবেশ করে প্রথম মুনতো ঢালোয় ঘাঁটি গাড়ে পাক সেনা। এখান থেকে অন্য সেক্টরে ছড়িয়ে পড়া শুরু করে।
নয়া দিল্লি: আগে চলো, আগে চলো – টার্গেট হ্যায় মুনতো ঢালো। এটাই নির্দেশ। রেডিও বার্তায় ভেসে আসছিল অন্য কিছু। বুয়া আ রহি হ্যায়- খিদমত করো, খিদমত করো। বুয়া মানে মুনতো ঢালো। ১৬ জুন, সকাল সাড়ে সাতটা। একই সময়ে বায়ুসেনার চার পাইলটের কাছে একই মেসেজ। চার পাইলট বুঝে যান, অপারেশনে গ্রিন সিগন্যাল মিলেছে। ৪ জনকে একটা নির্দিষ্ট মিশন দেওয়া হয়েছিল। কার্গিলের মুনতো ঢালোয় বোমা ফেলে, পাক ঘাঁটি উড়িয়ে দিতে হবে। এবং কাজটা শেষ করে নিরাপদে ফিরে আসতে হবে।
বায়ুসেনার যে পাইলটরা কার্গিল অপারেশনে ছিলেন, তাঁদের বড় অংশের বক্তব্য – ১৬ ও ১৭ জুন মুনতো ঢালোয় অভিযানই ছিল মোড় ঘোরানো মুহূর্ত। কারণ কার্গিলের খাড়াই পাহাড়ে বাতালিক সেক্টরে মুনতো ঢালোয় ছিল পাক সেনার অস্থায়ী সাপ্লাই সেন্টার। ভারতে অনুপ্রবেশ করে প্রথম মুনতো ঢালোয় ঘাঁটি গাড়ে পাক সেনা। এখান থেকে অন্য সেক্টরে ছড়িয়ে পড়া শুরু করে। তবে খাবার, অস্ত্র সহ যাবতীয় রসদ এখান থেকেই যাচ্ছিল।
সাপ্লাই লাইন কেটে দিতে এই মুনতো ঢালোর উপর আঘাত হানার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু আঘাত হানবে কে? সেনাকর্তাদের হাতে কোনও অপশনই ছিল না। তাঁরা আফসোস করছিলেন, হাতে সেরা অস্ত্র বলতে মিরাজ টু থাউজ্যান্ড। মিরাজের তো ৩২ হাজার ফুট উপরে পাহাড়ের উপর অপারেশন চালানোর ক্ষমতা নেই। সেটা করলে গেলে যে কোনও মুহূর্তে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা।
সেই সময় বায়ুসেনার চার পাইলট এগিয়ে এসেছিলেন। যা হয় হোক, মুনতো ঢালোয় অপারেশন চালাতেই হবে। তত্কালিন বায়ুসেনা প্রধান টিপনিস প্রথমে অনুমতি দিতে চাননি। পরে রাজি হন। কোড মেসেজে অনুমোদন এলে, ১৬ জুন সকালে অপারেশনে নামে চারটি মিরাজ টু থাউজ্যান্ড।
আধ ঘণ্টা পরে হামলা চালায় মিগ স্কোয়াড। ১৭ জুন আবারও বিমান হামলা। মিরাজ যে ওই উচ্চতায় অপারেশন চালাতে সক্ষম, সেটাই কারও জানা ছিল না। মিরাজ কামাল করেছিল। বায়ুসেনার পাইলটরা অসাধ্যসাধন করেছিলেন।
এত উচ্চতায় পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূল হয় যে, প্রশিক্ষিত পাইলটেরও বিমানের ভিতর দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বায়ুসেনার পাইলটরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। মুনতো ঢালোর অপারেশনই প্রথম ইঙ্গিত দেয়, কার্গিল যুদ্ধে জয় আর বেশি দূরে নয়। ওই চার পাইলটের একজন অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল দিলীপ পট্টনায়েক। তিনিই এই অভিযানের অজানা কাহিনি তুলে ধরেছেন সম্প্রতি।