নয়া দিল্লি: দীপাবলির তিনদিন পার হলেও এখনও ধোঁয়াশার (Smog) চাদরেই ঢাকা দিল্লি (Delhi)। বাতাসের গুণমানে কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও “বিপজ্জনক” (Severe) পর্যায়েই রয়েছে। দীপাবলিতে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ হলেও একদিনেই যে পরিমাণ বাজি পোড়ানো হয়েছে, তাতে ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়েছে দিল্লিবাসী।
রবিবার সকালেও বাতাসের গুণমান বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (Air Quality Index) দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী গুরগাঁও, নয়ডা, গাজিয়াবাদ শহরে ‘বিপদজনক’ মাত্রাতেই ছিল। সবথেকে খারাপ বাতাস গুরগাঁওতে, সেখানে বাতাসের গুণমান ৪৬০, এরপরই গাজিয়াবাদে ৪৫৮, নয়ডায় ৪৫৫, ফরিদাবাদে বাতাসের গুণামানের মাত্রা ৪৪৯ -এ দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া ও বায়ুর গুণমান পূর্বাভাস ও গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দিল্লিতে বাতাসের গুণমান ৪৩৬। গতকালের তুলনায় বাতাসের গুণমান কিছুটা উন্নত হলেও তা এখনও সাধারণ মানুষের জন্য বিপদজনক পর্যায়েই রয়েছে।
দিল্লির পার্শ্ববর্তী রাজ্য হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের বাতাসের স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে দূষণের প্রভাব। রবিবারের তথ্য অনুযায়ী, দুই রাজ্যেই বাতাসের গুণমান খারাপ থেকে অতি খারাপের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। এই দুই রাজ্যে বাজি পোড়ানোর পাশাপাশি বিগত কয়েকদিন ধরেই ফসল কাটার পরে ক্ষেতে যে অবশিষ্ট অংশ থাকে, তা পোড়ানোর কারণে দূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
১ জানুয়ারি অবধি দিল্লিতে বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেই বিধিনেষেধকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দীপাবলির দিন দেদার বাজি পোড়ানো হয়েছে গোটা দিল্লি জুড়েই। পরদিন সকাল থেকেই ধোঁয়াশার পুরু আস্তরণে আকাশ ঢাকা পড়েছে। কমেছে দৃশ্যমানতা। জাতীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্য অনুযায়ী, দীপাবলির পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার দিল্লিতে বাতাসের গুণগত মানের সূচকের গড় পৌঁছে গিয়েছিল ৪৬২ তে।
শনিবারও আকাশের অবস্থা একই ছিল। ভোর ৬টা নাগাদ বাতাসের গুণগত মানের হার ছিল ৫৩৩, যার ফলে “অতি ভয়ঙ্কর” পর্যায়ে পৌঁছেছে দিল্লির বাতাস। পার্শ্ববর্তী নয়ডা, গুরুগ্রাম, গাজিয়াবাদ ও গ্রেটার নয়ডায় বাতাসের গুণমান আরও খারাপ বলেই জানা গিয়েছে। আনন্দ বিহার ও ফরিদাবাদে বাতাসের গুণমান ৬০০-এ পৌঁছয় গতকাল।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই বায়ুদূষণের সঙ্গে লড়ছে রাজধানী। প্রতি বছরই শীতের শুরুতে শ্বাসকষ্ট সহ একাধিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাসিন্দা। প্রতিবারই দূষণকেই দায়ী করা হয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাস্তায় জল ছেটানো শুরু হয়েছে। জোড়-বিজোড় পদ্ধতিতে গাড়ি চালানো হবে কিনা, তা নিয়েও ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে সরকার।
বাজি পোড়ানো বন্ধ হলেও এখনও শুকনো খড় পোড়ানো জারি থাকায় আগামী কয়েকদিনও বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ কমবে না বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তারা যেন বাড়িতেই থাকেন। একাধিক হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট, চোখ-গলা জ্বালা সহ নানা সমস্যা নিয়ে রোগী ভর্তির সংখ্যাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।