নয়া দিল্লি : দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন একের পর এক নেতা। সৌমিত্র খাঁ-সহ দলের অনেক রাজ্য নেতা বিজেপি নেতৃত্বের পরিচালন ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ বা দলীয় পদ ছেড়েছেন। তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, দলের শৃঙ্খলা সবার আগে। দলের এই দ্বন্দ্ব নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সরব হয়েছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। আর আজ টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বঙ্গ বিজেপির এই দ্বন্দ্ব নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে একগুচ্ছ বার্তা দিলেন। বাঙালির প্রতিষ্ঠিত দল বাংলায় “প্রতিষ্ঠা” না পাওয়ায় ক্ষোভও ধরা পড়ল তাঁর গলায়।
এই দলীয় কোন্দল মিটবে কীভাবে-
অনুপম হাজরা বলেন, “লোকজনকে নিয়ে বসতে হবে। প্রত্যন্ত গ্রামের কর্মী থেকে দলের বিধায়ক, সাংসদরা তাঁদের কথা বলতে পারেন, এরকম ফোরাম দরকার। দলীয় সভা বা মিটিংয়ে বলার জায়গা তাঁরা পান না। রাজ্য নেতৃত্ব তাঁদের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেন।”
অনুপম হাজরা বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক। তিনি রাজ্য বিজেপির কোন্দল নিয়ে সরব হওয়ার পর রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, অনুপম হাজরার কথা তিনি শুনবেন। সেজন্য তাঁকে পশ্চিমবঙ্গে আসতে হবে। এই নিয়ে অনুপম বলেন, “কে কী বলল তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যাঁদের জন্য কথাগুলো বলেছি, বিজেপির সেই পুরোনা কর্মীরা মাঠে ঘাটে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিজেপি করেন। আমি সোশাল মিডিয়ায় আমার বক্তব্য রাখার পর তাঁরা বলছেন, একেবারে সত্যি কথা বলেছেন। এরপর রাজ্য নেতৃত্বে কে কী বললেন, তাকে গুরুত্ব দিতে আমি নারাজ।”
রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দলের একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ উঠেছে দলের মধ্যে। এই অবস্থায় তাঁকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই নিয়ে অনুপম বলেন, “কেন বারবার ওনার নাম উঠে আসে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যখন ডেকে পাঠিয়েছেন, তখন সেই রহস্যের উন্মোচন হবে। পরিস্থিতি যখন খুবই শোচনীয় হয়ে যায়, তখনই শীর্ষ নেতৃত্ব ডেকে পাঠান।”
সমস্যাটা বিজেপি-র না রাজ্য বিজেপির-
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে আক্রমণ করে অনুপম বলেন, “সমস্যাটা রাজ্য বিজেপির। যে মানুষগুলো রাজ্য বিজেপি করতে স্বচ্ছন্দবোধ করছেন না, তাঁরা বিকল্প বেছে নিচ্ছে। এটা কেন হবে? তৃণমূল আমাদের রাজনৈতিক শত্রু। তারপর যদি ঘরের মধ্যে পরিবেশ এমন হয়, যেখানে মনে হয় ঘরের বাইরে বেরিয়ে যাই। অন্য কোথাও রাজনীতি করি। তাহলে কী করে হবে। বঙ্গ বিজেপিতে কেন এমন দমবন্ধ পরিবেশ থাকবে, যেখানে এই দলকে যাঁরা ভালবাসেন, তাঁরা অন্য রাজ্যে গিয়ে বিজেপি করবেন।”
বাংলায় বাড়ি হলেও তিনি এখন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা। নিজের কথা বোঝাতেই কি অন্য রাজ্যে গিয়ে বিজেপি করার কথা বললেন? তা জানা না গেলেও পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ ধরা পড়ল। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের কথা তুলে ধরে বললেন, “সংগঠনকে মজবুত করতে হবে। কারণ, বিজেপি বাঙালি প্রতিষ্ঠিত দল। সেই দলকে বাংলাতেই প্রতিষ্ঠা করতে পারলাম না। এটা আমাদের আক্ষেপ।”
আরও পড়ুন : Nadda Attacks Congress : সন্ত্রাসবাদীদের ‘বন্ধু’ কংগ্রেস, রাহুল-সনিয়াদের ‘অল-আউট’ আক্রমণে নাড্ডা