Pahalgam Tourist Attack Investigation report: হামলার নির্দেশ দিয়েছিল ISI, প্ল্যান করে লস্কর! তদন্তের রিপোর্টে আর কী উঠে এল?
Pahalgam Tourist Attack Investigation report: আইএসআই-এর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশে লস্কর-ই-তৈয়বা এই হামলার ছক কষে থাকতে পারে। ধারণা, পাকিস্তানে লস্করের সদর দপ্তরে এই হামলার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করা হয়ে থাকতে পারে।

২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলার তদন্তবার সামলাচ্ছে জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ)। তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে NIA পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) এর মধ্যে একটি অপারেশনাল যোগসূত্রের কথা ইঙ্গিত করেছিল।
ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে এনডিটিভি সূত্রে খবর আইএসআই-এর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশে লস্কর-ই-তৈয়বা এই হামলার ছক কষে থাকতে পারে। ধারণা, পাকিস্তানে লস্করের সদর দপ্তরে এই হামলার সম্পূর্ণ পরিকল্পনা করা হয়ে থাকতে পারে।
হামলার মূল হোতা দুই সন্ত্রাসী, হাশিম মুসা (ওরফে সুলেমান) এবং আলি ভাই (ওরফে তালহা ভাই)। দুজনেই পাকিস্তানি নাগরিক এমনকি হাশিম মুসা পাক প্যারা ফোর্সের প্রাক্তন কম্যান্ডো বলেও জানা গিয়েছে। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ ক্রে জানা গিয়েছে দুই আক্রমণকারীই পাকিস্তান-ভিত্তিক হ্যান্ডলারদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ বজায় রেখেছিল। হামলার সময়, অস্ত্র সরবরাহ সব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশ আসে বর্ডারের ওপার থেকেই।
হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে সন্ত্রাসীরা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছিল বলেও জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার্স (OGW) এর একটি নেটওয়ার্ক তাদের সহায়তা করেছিল বলেও জানা গিয়েছে। তইিমধ্যেই ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরাই জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়া, যাতায়াতের ব্যবস্থা করা এমনকি প্রয়োজনীয় লজিস্টিক পৌঁছে দিয়ে যাবতীয় সাহায্য করে।
ইতিমধ্যেই এনআইএ ফরেনসিক এবং ইলেকট্রনিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে বলে খবর। অপরাধস্থল থেকে উদ্ধার করা ৪০টিরও বেশি কার্তুজ ব্যালিস্টিক এবং রাসায়নিক বিশ্লেষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তকারীরা আক্রমণস্থলের থ্রিডি ম্যাপিংও করেছেন। বৈসরন উপত্যকার মোবাইল টাওয়ার থেকে ডাম্প ডেটা বের করেছেন।
হামলার আগে কয়েক দিন এই অঞ্চলে স্যাটেলাইট ফোনের কার্যকলাপ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বৈসরন এবং তার আশেপাশে কমপক্ষে তিনটি স্যাটেলাইট ফোন চালু ছিল। যার মধ্যে দুটি থেকে আসা সংকেতগুলি সনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
মোট ২,৮০০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে এনআইএ এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ২ মে পর্যন্ত, ১৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সন্দেহভাজন ওজিডব্লিউ এবং জামাত-ই-ইসলামির মতো নিষিদ্ধ গোষ্ঠী এবং হুরিয়ত কনফারেন্সের বিভিন্ন উপদলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
কুপওয়ারা, পুলওয়ামা, সোপোর, অনন্তনাগ এবং বারামুল্লা সহ একাধিক জেলায় অভিযান চালানো হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় সন্ত্রাসী পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে সাহায্য করার সন্দেহে বেশ কয়েকজন ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে।
১৯৯৯ সালের আইসি-৮১৪ হাইজ্যাক মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মুশতাক আহমেদ জারগার ওরফে ল্যাট্রামের বাসভবনে তল্লাশি চালানো হয়েছে। বর্তমানে পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাস কার্যকলাপ পরিচালিত করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আক্রমণকারীদের গতিবিধি সনাক্ত করার জন্য এনআইএ পহেলগাঁওয়ের আশেপাশের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট এবং অনান্য জনবহুল এলাকা থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। প্যাটার্ন ম্যাপিংয়ের জন্য পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলির নিরাপত্তা চেকপয়েন্টগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।
হামলার সময়রেখা পুনর্নির্মাণের জন্য নিহতদের পরিবার, পোনি অপারেটর এবং খাদ্য বিক্রেতা সহ বাকি প্রত্যক্ষদর্শীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। অনেকেই জানিয়েছেন হামলাকারীরা পরে প্রচারের উদ্দেশ্যে ঘটনাটি রেকর্ড করার জন্য শরীরে ক্যামেরা আগিয়ে রেখেছিল। এই সব তথ্য ফরেনসিক তদন্তের অধীনে নথিভুক্ত রয়েছে।
