অম্বানীকাণ্ডের পর্দাফাঁস, সচিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার ২ পাসপোর্ট সামনে আনল ভুয়ো এনকাউন্টারের ছক!

ঈপ্সা চ্যাটার্জী |

Apr 14, 2021 | 1:09 PM

এটিএস ও এনআইএ মনসুখ হিরেনের কাছে পৌঁছতেই ভয় পান সচিন ভাজ়ে। সমস্ত তথ্য ফাঁস করে দিতে পারে, এই ভয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁকেও খুন করে মুম্বইয়ের একটি জলাশয়ে দেহটি ফেলে দেওয়া হয়। আত্মহত্যা প্রমাণ করতে একটি চিঠিও ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তাঁর পকেটে।

অম্বানীকাণ্ডের পর্দাফাঁস, সচিনের বাড়ি থেকে উদ্ধার ২ পাসপোর্ট সামনে আনল ভুয়ো এনকাউন্টারের ছক!
সচিন ভাজ়ে। (ফাইল ছবি: PTI)

Follow Us

মুম্বই: অম্বানীকাণ্ডে ধীরে ধীরে হচ্ছে পর্দা ফাঁস। “এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট” নামে খ্য়াত সচিন ভাজ়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া দুটি পাসপোর্ট নিয়ে জেরা করতেই বেরিয়ে এল নতুন তথ্য।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শিল্পপতি মুকেশ অম্বানী(Mukesh Ambani)-র বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল বিস্ফোরক বোঝাই একটি গাড়ি। তদন্তে নেমে এনআইএ(NIA) প্রথমে আটক ও পরে গ্রেফতার করে মুম্বইয়ের ক্রাইম ব্রাঞ্চ শাখার পুলিশ অফিসার সচিন ভাজ়ে(Sachin Vaze)-কে। একের পর এক ঘটনাস্থানে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নিমার্ণ করা হয়। একইসঙ্গে তল্লাশি চালানো হয় ধৃত অফিসারের বাড়িতেও।

তদন্তকারী সংস্থার তরফে প্রথমে জানানো হয়েছিল যে সচিন ভাজ়ের বাড়ি থেকে পিস্তল ও ৬০টি বুলেট উদ্ধার করা হয়েছে। সম্প্রতি তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, তাঁর বাড়ি থেকে দুটি পাসপোর্টও উদ্ধার হয়েছিল। সেই পাসপোর্টের সূত্র ধরেই তদন্তে এল নয়া মোড়।

এক তদন্তকারী অফিসার জানান, গাড়ি ব্যবসায়ী মনসুখ হিরেন নয়, প্রথমে সচিন ভাজের পরিকল্পনা ছিল পাসপোর্টের মালিক ওই দুই ব্যক্তিকে দিয়ে বিস্ফোক অম্বানীর বাড়ি অ্যান্টিলিয়া(Antilia)-র সামনে রাখানোর। বিস্ফোরণ হোক বা না হোক, তদন্তে নেমেই ওই দুই ব্যক্তিকে প্রথমে গ্রেফতার ও পরে এনকাউন্টার করতেন তিনি। ওই দুই ব্যক্তির নামে আগে নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় কেউ সন্দেহও করত না।

আরও পডুন: মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে ‘ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন’! চিন্তায় স্বাস্থ্যমহল

তবে ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রদান হওয়ায় সচিনের ঘাড়ে আগে থেকেই একাধিক মামলার তদন্তভার ছিল। ফলে সঠিক পরিকল্পনা করে উঠতে পারেননি তিনি। সেই কারণেই গাড়ি ব্যবসায়ী মনসুক হিরেনকে “বলির পাঁঠা” হিসাবে বেছে নেওয়া হয়। তাঁর সাহায্যেই বিস্ফোরক বোঝাই গাড়িটি মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে রাখা হয়েছিল। স্করপিও গাড়িটির পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা ইনোভা গাড়িতে বসেই গোটা ঘটনার উপরে নজর রাখছিলেন সচিন ভাজে়।

এতদূর অবধি পরিকল্পনা ঠিকভাবে চললেও মুম্বইয়ের অপরাধ দমন শাখা তদন্তভার নেওয়াতেই হিসাবে গণ্ডগোল হয়ে যায়। তড়িঘড়ি প্রমাণ লোপাট করতে গাড়ির নম্বর প্লেট, এমনকি চেসিস নম্বর বদলে ফেললেও ইনসুরেন্স কোম্পানির স্টিকারই তদন্তকারী সংস্থাকে মনসুখ হিরেনের কাছে পৌঁছে দেয়। নিজের কুকীর্তি ধামাচাপা দিয়েই সিসিটিভি ফুটেজ(CCTV Footage) সহ হার্ড ডিস্ক, ল্যাপটপ ও একাধিক নম্বর প্লেট নদীতে ফেলে দেন সচিন ভাজ়ে। তবে মনসুখ হিরেন সমস্ত তথ্য ফাঁস করে দিতে পারে, এই ভয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁকেও খুন করে মুম্বইয়ের একটি জলাশয়ে দেহটি ফেলে দেওয়া হয়। আত্মহত্যা প্রমাণ করতে একটি চিঠিও ঢুকিয়ে দেওয়া হয় তাঁর পকেটে।

আরও পডুন: শ্মশানে মৃতদেহের স্তূপ, ফুরিয়ে যাচ্ছে চিতা জ্বালানোর কাঠ, রাজ্যের হিসাবে বলছে অন্য কথা!

Next Article