শ্মশানে মৃতদেহের স্তূপ, ফুরিয়ে যাচ্ছে চিতা জ্বালানোর কাঠ, রাজ্যের হিসাবে বলছে অন্য কথা!

ভোপালের একটি শ্মশানেই করোনাবিধি মেনে সোমবার ৩৭টি মৃতদেহের সৎকার করা হয়েছে। সেখানে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সে দিন গোটা রাজ্যে মোট ৩৭জন রোগীর মৃত্যুর হয়েছে।

শ্মশানে মৃতদেহের স্তূপ, ফুরিয়ে যাচ্ছে চিতা জ্বালানোর কাঠ, রাজ্যের হিসাবে বলছে অন্য কথা!
শ্মশানে করোনা রোগীর দেহ সৎকারের প্রস্তুতি। ছবি:PTI
Follow Us:
| Updated on: Apr 14, 2021 | 12:07 PM

ভোপাল: একের পর এক চিতা জ্বলছে। শ্মশানের বাইরে অ্যাম্বুলেন্স ও শববহনকারী গাড়ির লম্বা লাইন। চার-পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মৃতদেহের সৎকার করতে পারছেন না পরিবার-পরিজনেরা। যেখানে একদিনেই একটি শ্মশানে ৩৭টি দেহ পোড়ানো হয়েছে, সেখানে রাজ্যের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গোটা রাজ্যে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৩৭জনের। এমনটাই তথ্যের গরমিল উঠে এসেছে মধ্য প্রদেশে(Madhya Pradesh)।

ভোপাল(Bhopal)-র বাধবাধা শ্মশানঘাটের ডোম জানান, ১৯৮৪ সালে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার সময় শেষবার এই রকম মৃতদেহের স্তূপ দেখা গিয়েছিল। নিজের ভাইয়ের সৎকার করতে আসা এক ব্যক্তি বলেন, “যখন গ্যাস দুর্ঘটনা ঘটেছিল। তখন ক্লাস নাইনে পড়তাম। সেই সময় এরকম ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছিলাম। আজ চার ঘণ্টার মধ্যেই কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০টি মৃতদেহ দেখলাম।” আরেক ব্যক্তি জানান, তিন-চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না, কারণ শ্মশানে কোনও জায়গাই খালি নেই।

একই অভিযোগ ডোমদেরও। কাঠ শেষ হয়ে যাওয়া থেকে শুরু হয়ে একের পর এক মৃতদেহ পোড়ানোয় হাতে ফোস্কা পড়ে যাওয়া- সবই হচ্ছে। মৃতদেহে পোড়ানোর এতটাই চাপ যে দুপুরে খাবার খাওয়ার সময়টুকুও তাঁরা পাচ্ছেন না।

তবে সরকারি হিসাব বলছে অন্য কথা। যেখানে ভোপালের একটি শ্মশানেই করোনাবিধি মেনে সোমবার ৩৭টি মৃতদেহের সৎকার করা হয়েছে। সেখানে সরকারি তথ্য অনুযায়ী, সে দিন গোটা রাজ্যে মোট ৩৭জন রোগীর মৃত্যুর হয়েছে। এর আগে ৮ এপ্রিলও ভোপালে মোট ৪১টি দেহ করোনাবিধি মেনে সৎকার করা হলেও রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী সে দিন রাজ্যে মোট ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৯ এপ্রিলও একই চিত্র। ভোপালেই ৩৫টি দেহ সৎকার হলেও রাজ্যের হিসাবে ২৩জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছিল।

চলতি মাসে বাকি দিনগুলি, অর্থাৎ ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিলের হিসাবেও একই ধরনের গরমিল দেখা গিয়েছে। শ্মশানের হিসাবে ৫৬টি দেহ করোনাবিধি মেনে সৎকার হলেও রাজ্যের হিসাবে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরের দিন অর্থাৎ ১১ এপ্রিলও ৬৮জনের দেহ সৎকার হয় ভোপালের শ্মশানে। কিন্তু সরকারি হিসাব অনুযায়ী আগের দিনের মতোই ২৪জনের মৃত্যু হয়েছে।

এই বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা মন্ত্রী বিশ্বাস সারাঙ্গকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকারের মৃতের সংখ্যা লুকিয়ে লাভ কী? এরজন্য আমাদের আলাদাভাবে কোনও পুরস্কার তো দেওয়া হবে না।”

আরও পড়ুন: সিবিএসই পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন নমো