দেরাদুন : প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জন্য জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীকে গ্রফতার করল উত্তরাখন্ড পুলিশ। বৃহস্পতির তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগী হলেন উত্তরপ্রদেশ শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান। জিতেন্দ্র নারায়ণ গত মাস অবধি ওয়াসিম রিজভি নামেই পরিচিত ছিলেন। গত ডিসেম্বরের ১৭ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত হরিদ্বারে ধর্ম সংসদ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সংসদেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধর্ম সংসদের একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তারপর সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপরই ২৩ শে ডিসেম্বর এই ঘটনা সংক্রান্ত কেস নথিভুক্ত হয়। চলতি সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে এই কেস নিয়ে পদক্ষেপ পদক্ষেপের বিষয়ে সওয়াল করে। অবশেষে গতকাল অভিযুক্তদের মধ্যে একজনকে গ্রেফতার করে হরিদ্বার থানার পুলিশ। সূত্রের খবর, হরিদ্বার পুলিশ স্টেশনের স্টেশন হাউস অফিসার রাকেন্দ্র কাঠাইত জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশ ও উত্তরাখন্ডের সীমান্ত এলাকা নারসেইন থেকে ত্যাগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই রাজ্যেই আগামী মাসে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই নির্বাচনে ব্যক্তি পরিচয় একটি বড় ইস্যু। স্টেশন হাউস অফিসার জানিয়েছেন যে, ত্যাগীর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ধর্ম সংসদে প্ররোচনামূলক মন্তব্যের জেরে জবলপুরের স্থানীয়রা তাঁর বিরুদ্ধে কেস ফাইল করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, জিতেন্দ্র নারায়ণ ত্যাগীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রুজু হয়েছে।
হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন সূত্রে খবর, ত্যাগীর গ্রেফতার প্রসঙ্গে হরিদ্বারের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট যোগেন্দ্র সিং রাওয়াত জানিয়েছেন, তিনি একের পর এক অপরাধ করছিলেন। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত অন্যান্যদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই মামলায় প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ধারা ধর্ম, জাতি, জন্মস্থান, বাসস্থান, ভাষা ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঘৃণা প্রচার করা এবং সম্প্রীতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ক্ষতিকর কাজ করার সাথে সম্পর্কিত।
এই ধর্ম সংসদের ব্যবস্থাপক যাতি নরসিংহনন্দ পুলিশের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করেছেন। ত্যাগীর গ্রেফতারের সময় তিনি উপস্থিত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সনাতন ধর্মকে দুর্বল করার জন্য এটি একটা গোপন কর্মসূচি। নরসিংহনন্দ এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা করে জানিয়েছেন তিনি অনশনে বসবেন। আজ থেকে হরিদ্বারের ‘হর কি পাউরি’ তে তিনি অনশনে বসবেন বলে জানিয়েছেন। এই ঘটনায় নরসিংহনন্দ পাঁচজন অভিযুক্তের মধ্যে একজন। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নরসিংহনন্দ। তিনি বলেছেন যে, তিনি ধর্মসংসদে এমন কিছু বলেননি যা কোনও মহিলাকে অপমান বা অসম্মান করে। এই মামলায় অভিযুক্ত বাকি তিন জন হলেন, পূজা শকুন পাণ্ডে, ধর্মদাস মহারাজ এবং সাগর সিন্ধু মহারাজ।