
নয়াদিল্লি: নীতির পাল্টা নীতি নিয়েই লড়াইয়ে বিরোধী শিবির? গত সপ্তাহে লোকসভায় ১৩০ তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যা নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে এখন বেশ টানাপোড়েন। ওই বিতর্কিত বিল অবশ্য জেপিসি কমিটির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বিবেচনা করবে কারা?
কারণ, মন্ত্রিত্ব বাতিল বিলের জন্য যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন এখন বিশ বাও জলে। এই কমিটিতে প্রতিনিধি পাঠানো নিয়ে আকার-ইঙ্গিতে আগেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছিল তৃণমূল। দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় গোটা প্রক্রিয়াটিকে ‘সময় নষ্ট’ বলে দাগিয়ে দেন। এই বিল কখনও বাস্তবায়ন হবে না বলেই দাবি করেছিলেন তিনি।
এত গেল তৃণমূলের কথা। কিন্তু ইন্ডি জোটের বাকি শরিক দলগুলি, তাদের কী মত? সূত্রে খবর, বিরোধিতার এই ‘নতুন মাত্রায়’ বাংলার তৃণমূল তাদেরও দিশারি। জোটে না থাকলেও, জেপিসিতে প্রতিনিধি না পাঠানো নিয়ে সহমত পোষণ করেছে আম আদমি পার্টি। একই পথে হাঁটার কথা ভাবছে সমাজবাদী পার্টি ও শিবসেনার উদ্ভব গোষ্ঠী।
তবে কংগ্রেসের অবস্থান নিয়ে এখনও একটু সংশয় রয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও জেপিসিতে প্রতিনিধি না পাঠানোর কথাই ভাবছে কংগ্রেস ও বিহারের প্রধান বিরোধী দল আরজেডি। বর্তমানে ওই রাজ্যেই রয়েছেন রাহুল। নির্বাচনের আগে তেজস্বীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘ভোট অধিকার যাত্রা’ বের করেছেন তিনি। সুতরাং, এই দুই পক্ষের সিদ্ধান্ত একই দিকে গড়াবে বলে ধারণা একাংশের রাজনীতিবিদের।
এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, বিরোধীরা মুখ ফিরিয়ে নিলে যৌথ সংসদীয় কমিটি কি গঠন করা সম্ভব? লোকসভার কার্যপ্রণালী অনুযায়ী, এতে কিন্তু কোনও অসুবিধা নেই। বিরোধী দলগুলি যদি জেপিসি কমিটিতে মন্ত্রিত্ব বাতিল বিল নিয়ে আলোচনার জন্য কোনও প্রতিনিধি না পাঠান, তারপর শুধু শাসক জোটের প্রতিনিধিদের বিবেচনার মাধ্যমে কমিটি লোকসভায় সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবে। তবে সেই ক্ষেত্রে ওই রিপোর্টকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে দাগানোর জায়গাও তৈরি হয়ে যাচ্ছে বিরোধীদের কাছে, এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। যেন লড়াইটা নীতির পাল্টা নীতিই।