নয়া দিল্লি: কয়েক দিন আগেই প্রশাসক হিসেবে ২০ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। দেশ ব্যাপী একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প পেয়েছে তাঁর স্নেহের ছোঁয়া। এমন কোনও দিকে নেই যেদিকে তাঁর নজর নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এহেন এক বর্ণময় চরিত্র নিজের প্রশাসনিক জীবনে নানা ঘাত প্রতিঘাত অতিক্রম করে দেশের শীর্ষস্তরে পৌঁছেছেন। ক্ষমতা আসীন হয়ে আমাদের দেশের সংস্কৃতি রক্ষায় বিভিন্ন মন্দিরে গুরুত্ব তিনি ভুলে যাননি। তিনি ভালই বোঝেন দেশের লড়াইয়ের ঐতিহ্যকে বহন করে এনেছে এই মন্দিরগুলি। তাই বিভিন্ন মন্দির উন্নয়নে ছিল তাঁর বিশেষ নজর।
মোদীর দায়িত্ব নেওয়ার আগে, দেশের সরকার ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন মন্দির সংরক্ষণের বিষয়ে যথেষ্ট উদাসীন ছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই সরকারের গাফিলতিতে সেই মন্দিরগুলির জরাজীর্ণ অবস্থা ক্রমেই প্রকট হয়ে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অবস্থার পরিবর্তন হয়। মন্দির সংরক্ষণ ও নির্মাণে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
রাম মন্দির
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের দীর্ঘ ৭০ বছরের অপেক্ষার অবসান হয়। ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে রায় দেয় দেশের সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের রায়ের পরই উদ্যোগী হয়ে ওঠেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। আপামোর হিন্দুদের স্বপ্ন পূরণ করে ২০২০ সালের ৫ অগস্ট স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাতেই উদ্বোধন হয় রাম মন্দিরের। শুধুমাত্র মন্দির নির্মাণ নয়, অযোধ্যার এই এলাকে দেশের উল্লেখযোগ্য তীর্থক্ষেতে পরিণত করতে সবরকম পদক্ষেপ করছে মোদী সরকার।
কাশী বিশ্বনাথ করিডর
কাশী ভগবান শিবের বিশ্ববিখ্যাত মন্দির। কিন্তু জাগ্রত মন্দির হিসেবে খ্যাতির পাশাপাশি অপরিচ্ছন্নতার জন্য কুখ্যাতি ছিল কাশীর। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর কাশীর পুরানো রাস্তা গুলির নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে। এরপরেই ২০১৯ সালে মার্চ মাসে এই এলাকার উন্নয়নের জন্য কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্পের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। যখন এই প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিল, তখন এই প্রকল্প অসম্ভব মনে হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে খুব সহজে কাশী বিশ্বনাথ সংস্কারের জন্য জমি অধিগ্রহনের কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পে সেই এলাকার ঐতিহ্যও রক্ষিত হবে।
সোমনাথ মন্দির
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী সোমনাথ মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু করেন। সম্প্রতি সমুদ্রের তীরে অবস্থিত এই মন্দিরে উদ্বোধন করেন নরেন্দ্র মোদী। এর পাশাপাশি মন্দির সংলগ্ন এলাকাতে একটি সংগ্রহশালাও চালু করা হয়েছে। সোমনাথ মন্দিররে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, তাই এই মন্দির উন্নয়নে বাড়তি নজর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
কেদারনাথ মন্দির
উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ মন্দিরও বারবার নরেন্দ্র মোদীর গুরুত্ব পেয়েছেন। প্রার্থনা করতে সেখানে অনেকবারই ছুটে যেতে দেখা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে আদিগুরু শঙ্করাচার্যের মূর্তি উন্মোচনও করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। শঙ্করাচার্যের মূর্তির সঙ্গে সংস্কার করা কেদারনাথ মন্দিরের একটি দিকও উদ্বোধন করেন তিনি। মোদীর ছোঁয়াতে বদলে গিয়েছে কেদারনাথের রূপ।
চারধাম যোজনা
উত্তরাখণ্ডে চারধাম নিয়েও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছে মোদী সরকারকে। যমুনোত্রী, গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ ও বদ্রীনাথ এই চারধামই তীর্থযাত্রীদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। কিন্তু পাহাড়ে কোলে অবস্থিত হওয়ায় প্রাকৃতিক কারণে মাঝে মধ্যেই এখানে আসতে তীর্থ যাত্রীদের সমস্যা হত। সেই দিকেই ছিল প্রধানমন্ত্রীর নজর। যেকোনও আবহাওয়ার অনুকুল রাস্তা সেখানে তৈরি করেন তিনি। নতুন রাস্তা গুলি তৈরি হওয়ার ফলে সেখানে পর্যটকদের যাতায়াত অনেকে বেশি সহজ হয়ে গিয়েছে। শুধু রাস্তা নয়, এই এলাকাতে রেলের উন্নয়নেরও ওপরে নজর দিয়েছে সরকার। ঋষিকেশ ও কর্ণপ্রয়াগের মধ্যে রেল পথ ২০২৫ সালের মধ্য সম্পূর্ণ তৈরি করা হবে।