নয়া দিল্লি: চালক ছাড়াই গড়াবে মেট্রোর চাকা। ভারতে প্রথম চালকবিহীন মেট্রোর (Driverless Metro) সূচনা হল দিল্লির মেজেন্টা লাইনে। উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। একইসঙ্গে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড (National Common Mobility Card)-র উদ্বোধনও করলেন তিনি।
দিল্লি মেট্রোর আধিকারিকরা জানান, যাবতীয় ভুলত্রুটি এড়িয়েই এই মেট্রো সম্পূর্ণভাবে যন্ত্রচালিত ও অটোমেটিক হবে। আপাতত পশ্চিম দিল্লির জনকপুরী থেকে নয়ডার বোটানিক্যাল গার্ডেন অবধি চলাচল করবে চালকবিহীন মেট্রো। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তা দিল্লির পিঙ্ক লাইন অবধি সম্প্রসারিত করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, “আজ থেকে তিনবছর আগে মেজেন্টা লাইনের উদ্বোধন করেছিলাম। আজ চালকবিহীন মেট্রোর উদ্বোধনের সুযোগ পেলাম। এর থেকেই বোঝা যায় ভারত কত দ্রুত উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০১৪ সালে আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর মোট পাঁচটি শহরে মেট্রোরেলের সুবিধা ছিল। বর্তমানে ১৮টি শহরে এই পরিষেবা রয়েছে, অর্থাৎ তিন গুণ পরিষেবা বৃদ্ধি পেয়েছে। বেড়েছে যাত্রীর সংখ্যাও, প্রায় ৫ গুণ বেশি যাত্রী বর্তমানে মেট্রোয় যাতায়াত করেন। ২০২৫ সালের মধ্যে ২৫টিরও বেশি রাজ্যে চালু হবে মেট্রো পরিষেবা।”
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ১৩৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে অনুপস্থিত খোদ রাহুল, টুইট বাণ বিজেপির
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আগে ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানো হত না। কিন্তু আধুনিক চিন্তাভাবনা বলে, নগরায়ন বা শহুরীকরণকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে না দেখে সুযোগ হিসাবে ব্যবহার করা উচিত। দেশের এগিয়ে যাওয়ার জন্য উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি। ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত। কোটি কোটি ভারতের আশা পূরণের পদক্ষেপ। আমাদের দেশে শহুরেকরণ বিষয়টিকে একটা উন্নতির ধাপ হিসেবে ধরে নিয়ে কাজ করেছে আমাদের সরকার। গোটা দেশের অবগঠন ঠিক করা দরকার। মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করা জরুরি। বহু নতুন প্রকল্প যেমন ওয়াটার মেট্রো, নিও মেট্রোর শুরুর কাজও জোরকদমে চলছে।”
Next-generation infrastructure for Delhi. Watch. https://t.co/LK789BkE3x
— Narendra Modi (@narendramodi) December 28, 2020
তিনি আরও বলেন, “দূষণ কম করতেও মেট্রো পরিষেবা অত্যন্ত জরুরি। মেড ইন ইন্ডিয়ার হাত ধরে বিদেশি বিনিয়োগ কমিয়ে দেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। চারটি বড় কোম্পানি মেট্রো তৈরির কাজ করছে। চালকবিহীন মেট্রোসহ অন্যান্য প্রকল্পগুলি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’র পাশাপাশি ‘আত্মনির্ভর ভারত’-র পথেও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে।”
ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ডের ঘোষণা করে তিনি বলেন, “যেকোনও ধরনের যাতায়াতের জন্য থাকছে একটি কার্ড, ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড। এক দেশ, তাই এক কার্ড। এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত। ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান ট্যাক্স’ এবং ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান রেশন কার্ড’-র মতোই আরও অনেক প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তারই একটি অংশ হল এই মোবিলিটি কার্ড। এতে যাত্রীরা বিনা বাধায় একটি কার্ডের মাধ্যমেই যেকোনও ধরনের পরিবহন ব্যবস্থার সাহায্যে সহজেই যাতায়াত করতে পারবেন। আমাদের রাজধানীকে এগিয়ে যেতে হবে। লড়াই আছে, চ্যালেঞ্জও আছে। কিন্তু সকলকে নিয়ে এগিয়ে যেতেই হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, ন্যাশনাল কমন মোবিলিটি কার্ড আপাতত দিল্লির এয়ারপোর্ট এক্সপ্রেস লাইনে কার্যকর হবে। দেশের যেকোনও প্রান্তের রুপে ডেবিট কার্ডের (RuPay-Debit Card) ব্যবহার করে যাত্রীরা এই রুটে যাতায়াত করতে পারবেন। ২০২২ সালের মধ্যে দিল্লির সম্পূর্ণ মেট্রো পরিষেবাতেই এই কার্ড কার্যকর করা হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে টিকিটের পাশাপাশি টোল ট্যাক্স ও কেনাকাটা অবধিও করা যাবে।
আরও পড়ুন: আর্থিক তছরুপ মামলায় সঞ্জয় রাউতের স্ত্রীকে তলব ইডির, টুইটে হুমকি শিবসেনা নেতার