
নয়াদিল্লি: গত মাস চারেকে তাঁর নানা মন্তব্যে চাপানউতোর বেড়েছে। কখনও তিনি দাবি করেন, অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতিতে তাঁর হাত রয়েছে। কখনও রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেন। কিন্তু, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চাপের কাছে যে ভারত মাথা নত করবে না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। একইসঙ্গে ভারত বিশ্ব দরবারে বুঝিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানের অনুরোধে আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। সেখানে তৃতীয় পক্ষের কোনও অবদান নেই। এই আবহে জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করল, সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্প একাধিকবার ফোন করলেও কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ভারত ও আমেরিকার মধ্যে শুল্ক নিয়ে চাপানউতোর চলছে। আমেরিকায় ভারতীয় পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্কের কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য, রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ না করার জন্যই অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। শুল্ক নিয়ে চাপানউতোরের মধ্যেই মোদীকে ট্রাম্প চারবার ফোন করেছিলেন বলে দাবি করেছে ফ্রাঙ্কফুর্টার অলগেমেইন নামে জার্মানির একটি সংবাদমাধ্যম। ওই সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, গত কিছুদিনে কমপক্ষে চারবার মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু, মোদী কথা বলেননি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বারবার নিজের বন্ধু বলে সম্বোধন করে এসেছেন মোদী। কিন্তু, ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পর ট্রাম্প নানা সময় নানা মন্তব্য করে চলেছেন। ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতির পর তিনি দাবি করেন, এই সংঘর্ষবিরতিতে তাঁর হাত রয়েছে। এই নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। কিন্তু, সংসদের বাদল অধিবেশনে মোদী স্পষ্ট করে দেন, ভারত কারও কথায় সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়নি। সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “গত ৯ মে (ভারত-পাক সংঘর্ষবিরতির আগের দিন) মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স আমার সঙ্গে ৩-৪ বার যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, আমি সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত থাকায় কথা হয়নি। পরে আমি তাঁকে ফোন করেছিলাম। তখন তিনি আমাকে সতর্ক করেন যে পাকিস্তান বড় আক্রমণ করতে পারে। আমি জানিয়েছিলাম, পাকিস্তান গুলি চালালে আমরা গোলা চালাব।”
ট্রাম্পের শুল্ক চাপানোর ঘোষণাতেও যে ভারত বিচলিত নয়, ট্রাম্পের নাম না নিয়েই গত কয়েকদিনে একাধিকবার বুঝিয়ে দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেন, “আমাদের উপর যতই চাপ প্রয়োগ করা হোক না কেন, তা সহ্য করার জন্য আমাদের শক্তি বৃদ্ধি করবে ভারত।” দেশের স্বার্থ যে সবার আগে, তাও বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কূটনীতিকরা বলছেন, জার্মানির সংবাদমাধ্যমের খবর সত্য হলে, এটা স্পষ্ট যে ট্রাম্পের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেননি মোদী।