নয়া দিল্লি: গুরুনানক জয়ন্তীতে দেশবাসীর উদ্দেশে বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন(Farm Laws) প্রত্য়াহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ রাখতে গিয়ে তিনি প্রথমেই বলেন, আজ গুরুনানকের জন্মবার্ষিকী। আমরা বরাবরই কৃষকদের সুবিধার কথা ভেবেই কাজ করেছি। কৃষকদের মঙ্গল কামনা করেই কৃষি আইন আনা হয়েছিল। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও কিছু সংখ্যক কৃষককে আমরা বোঝাতে পারিনি। তাই আমরা এই তিন আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ দিনের বক্তব্যের শুরুতেই তিনি সকলকে গুরুনানক জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান। একইসঙ্গে দেড় বছর পর করতারপুর করিডর খুলে যাওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন। গুরু নানকের কথা উল্লেখ করেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গুরুনানকজী বলেছিলেন সেবাই জীবনের ধর্ম। আমাদের সরকারও এই কথা অনুধাবন করেই চলে। বছরের পর বছর ধরে দেশের ছেলেমেয়েরা যে স্বপ্নগুলি দেখেছিল, তা আজ পূরণ করার চেষ্টা করছে সরকার।”
এরপরই কৃষকদের নিয়ে কথা বলা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার পাঁচ দশকের জীবনে কৃষকদের পরিশ্রম, নানা প্রতিবন্ধকতাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। সেই কারণেই দেশবাসীরা যখন আমায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দেন, তখন আমরা কৃষি বিকাশ ও কৃষক কল্যাণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিই। দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছেই এই কথাটি অজানা যে, আমাদের দেশের ১০০ জন কৃষকের মধ্যে ৮০ জনই ছোট কৃষক। তাদের কাছে দুই হেক্টরেরও কম জমি রয়েছে। এই ছোট কৃষকদের সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। ওনাদের পুরো জীবন এই ছোট্ট জমিই। এই জমির ভরসাতেই তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। আমরাও কৃষকদের মঙ্গল কামনাতেই সয়েল হেলথ কার্ড, ইউরিয়া, উন্নত মানের বীজ প্রদান করে সাহায্য করেছি। ফসল বীমা যোজনার অধীনে আরও কৃষকদের আনা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কৃষক কল্যাণে অঙ্গীকারবদ্ধ আমাদের সরকার। ফসল বীমা যোজনার অধীনে বিগত চার বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে কৃষকরা। বীমা ও পেনশনের সুবিধাও আনা হয়েছে। সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। এমএসপিও বাড়ানো হয়েছে, ই-নাম যোজনার অধীনে মাণ্ডিগুলিকে এনে কৃষকদের দেশের যেকোনও প্রান্তে ফসল বিক্রি করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্র সরকারের কৃষি বাজেট আগের সরকাারের তুলনায় পাঁচগুণ বাড়ানো হয়েছে।”
কৃষি আইন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের অবস্থা যাতে উন্নত হয়, সামাজিক অবস্থান যাতে আরও শক্তিশালী হয়, সেই উদ্দেশ্য় নিয়েই তিন কৃষি আইনের সূচনা করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল দেশের কৃষক, বিশেষত ছোট কৃষকরা যাতে নায্য দামে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারেন। বহু বছর ধরেই এই দাবি উঠে আসছিল। এর আগেও বহু সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করেছিল। এ বারও সংসদে আলোচনার মাধ্য়মেই এই আইনগুলি আনা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা ও সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাদের সকলকে ধন্যবাদ।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আমাদের সরকার কৃষকদের কল্যাণের কথা ভেবেই, দেশের উন্নতির কথা ভেবেই এই আইন এনেছিল। আমাদের উদ্দেশ্য পবিত্র হলেও কিছু কৃষকদের এই কথা বোঝাতে পারিনি। কৃষকদের এক অংশই এর বিরোধিতা করলেও, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশের কৃষিবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের নতুন তিন কৃষি আইনের সুবিধা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। আমরা দুই বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। আইনের যে অংশ গুলি নিয়ে তাদের সমস্যা ছিল, তা সংশোধনের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। এরইমধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছয়। এই ঘটনাগুলি সকলেরই জানা।”
কৃষকদের কোনও রকম দোষ না দিয়ে, ক্ষমা চেয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হয়তো আমাদের প্রচেষ্টাতেই কোনও খামতি রয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই আমরা কৃষকদের বোঝাতে পারিনি। আমি গোটা দেশকে জানাচ্ছি যে আমরা তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চলতি মাসের শেষেই যে সংসদ অধিবেশন শুরু হচ্ছে, তাতে কৃষি আইন প্রত্যাহার করার যাবতীয় কাজ শেষ হবে। আমি আন্দোলনরত কৃষক ভাইদের অনুরোধ করছি, এ বার আপনারা ঘরে ফিরে যান, আপনাদের চাষের জমিতে ফিরে যান। আসুন আমরা সবাই মিলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি।”
তবে কেবল আইন প্রত্যাহারই নয়, কৃষকদের জন্য জিরো বাজেট কৃষিকাজ প্রকল্পের ঘোষণাও করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, চাষের সময়কে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বদল আনা সহ একাধিক বিষয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যেই একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কৃষক, কৃষিবিজ্ঞানী সহ বিভিন্ন গবেষকরা থাকবেন।”
নয়া দিল্লি: গুরুনানক জয়ন্তীতে দেশবাসীর উদ্দেশে বড় ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। বিতর্কিত তিন কৃষি আইন(Farm Laws) প্রত্য়াহারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। এ দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ রাখতে গিয়ে তিনি প্রথমেই বলেন, আজ গুরুনানকের জন্মবার্ষিকী। আমরা বরাবরই কৃষকদের সুবিধার কথা ভেবেই কাজ করেছি। কৃষকদের মঙ্গল কামনা করেই কৃষি আইন আনা হয়েছিল। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও কিছু সংখ্যক কৃষককে আমরা বোঝাতে পারিনি। তাই আমরা এই তিন আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ দিনের বক্তব্যের শুরুতেই তিনি সকলকে গুরুনানক জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান। একইসঙ্গে দেড় বছর পর করতারপুর করিডর খুলে যাওয়ায় আনন্দ প্রকাশ করেন। গুরু নানকের কথা উল্লেখ করেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গুরুনানকজী বলেছিলেন সেবাই জীবনের ধর্ম। আমাদের সরকারও এই কথা অনুধাবন করেই চলে। বছরের পর বছর ধরে দেশের ছেলেমেয়েরা যে স্বপ্নগুলি দেখেছিল, তা আজ পূরণ করার চেষ্টা করছে সরকার।”
এরপরই কৃষকদের নিয়ে কথা বলা শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার পাঁচ দশকের জীবনে কৃষকদের পরিশ্রম, নানা প্রতিবন্ধকতাকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। সেই কারণেই দেশবাসীরা যখন আমায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দেন, তখন আমরা কৃষি বিকাশ ও কৃষক কল্যাণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিই। দেশের অধিকাংশ মানুষের কাছেই এই কথাটি অজানা যে, আমাদের দেশের ১০০ জন কৃষকের মধ্যে ৮০ জনই ছোট কৃষক। তাদের কাছে দুই হেক্টরেরও কম জমি রয়েছে। এই ছোট কৃষকদের সংখ্যা ১০ কোটিরও বেশি। ওনাদের পুরো জীবন এই ছোট্ট জমিই। এই জমির ভরসাতেই তাদের জীবন অতিবাহিত হয়। আমরাও কৃষকদের মঙ্গল কামনাতেই সয়েল হেলথ কার্ড, ইউরিয়া, উন্নত মানের বীজ প্রদান করে সাহায্য করেছি। ফসল বীমা যোজনার অধীনে আরও কৃষকদের আনা হয়েছে।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “কৃষক কল্যাণে অঙ্গীকারবদ্ধ আমাদের সরকার। ফসল বীমা যোজনার অধীনে বিগত চার বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে কৃষকরা। বীমা ও পেনশনের সুবিধাও আনা হয়েছে। সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়েছে। এমএসপিও বাড়ানো হয়েছে, ই-নাম যোজনার অধীনে মাণ্ডিগুলিকে এনে কৃষকদের দেশের যেকোনও প্রান্তে ফসল বিক্রি করার সুবিধা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কেন্দ্র সরকারের কৃষি বাজেট আগের সরকাারের তুলনায় পাঁচগুণ বাড়ানো হয়েছে।”
কৃষি আইন প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কৃষকদের অবস্থা যাতে উন্নত হয়, সামাজিক অবস্থান যাতে আরও শক্তিশালী হয়, সেই উদ্দেশ্য় নিয়েই তিন কৃষি আইনের সূচনা করা হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল দেশের কৃষক, বিশেষত ছোট কৃষকরা যাতে নায্য দামে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারেন। বহু বছর ধরেই এই দাবি উঠে আসছিল। এর আগেও বহু সরকার এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করেছিল। এ বারও সংসদে আলোচনার মাধ্য়মেই এই আইনগুলি আনা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকরা ও সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তাদের সকলকে ধন্যবাদ।”
তিনি আরও যোগ করে বলেন, “আমাদের সরকার কৃষকদের কল্যাণের কথা ভেবেই, দেশের উন্নতির কথা ভেবেই এই আইন এনেছিল। আমাদের উদ্দেশ্য পবিত্র হলেও কিছু কৃষকদের এই কথা বোঝাতে পারিনি। কৃষকদের এক অংশই এর বিরোধিতা করলেও, তা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। দেশের কৃষিবিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞরা কৃষকদের নতুন তিন কৃষি আইনের সুবিধা বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। আমরা দুই বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। আইনের যে অংশ গুলি নিয়ে তাদের সমস্যা ছিল, তা সংশোধনের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। এরইমধ্যে বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছয়। এই ঘটনাগুলি সকলেরই জানা।”
কৃষকদের কোনও রকম দোষ না দিয়ে, ক্ষমা চেয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হয়তো আমাদের প্রচেষ্টাতেই কোনও খামতি রয়ে গিয়েছে। সেই কারণেই আমরা কৃষকদের বোঝাতে পারিনি। আমি গোটা দেশকে জানাচ্ছি যে আমরা তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চলতি মাসের শেষেই যে সংসদ অধিবেশন শুরু হচ্ছে, তাতে কৃষি আইন প্রত্যাহার করার যাবতীয় কাজ শেষ হবে। আমি আন্দোলনরত কৃষক ভাইদের অনুরোধ করছি, এ বার আপনারা ঘরে ফিরে যান, আপনাদের চাষের জমিতে ফিরে যান। আসুন আমরা সবাই মিলে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করি।”
তবে কেবল আইন প্রত্যাহারই নয়, কৃষকদের জন্য জিরো বাজেট কৃষিকাজ প্রকল্পের ঘোষণাও করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, চাষের সময়কে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বদল আনা সহ একাধিক বিষয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যেই একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা থাকবেন। কৃষক, কৃষিবিজ্ঞানী সহ বিভিন্ন গবেষকরা থাকবেন।”