Delhi Air Pollution: কুণ্ডলী পাকিয়ে উঠছে ধোঁয়া,ধেয়ে আসছে দিল্লির দিকেই! নাসার উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ল ভয়ঙ্কর দৃশ্য!
NASA Satellite Image of Delhi Air Pollution: গত ১১ নভেম্বর তোলা ওই উপগ্রহ চিত্রে দিল্লির দিকে নজর দিলে, সেখানেও দেখা গিয়েছে রাজধানী ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি ধোঁয়ায় সম্পূর্ণ ঘেরা।
নয়া দিল্লি: দীপাবলির আনন্দের পরই বিপদ নেমে এসেছে দিল্লির আকাশে। ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণে (Air Pollution) ঢেকেছে দিল্লি সহ সংলগ্ন রাজ্যগুলি (Delhi NCR)। এই পরিস্থিতিতেই আরও ভয়ঙ্কর চিত্র উঠে আসল নাসা(NASA)-র উপগ্রহ চিত্রে (Satellite Image)। দেকা গিয়েছে পঞ্জাব (Punjab) ও হরিয়ানা(Haryana)-য় ন্যাড়াপোড়া (Stubble Burning) বা ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানোর কারণে তৈরি ধোঁয়া নদীর স্রোতের মতো এগিয়ে আসছে দিল্লির দিকেই।
গত ১১ নভেম্বর তোলা ওই উপগ্রহ চিত্রে দিল্লির দিকে নজর দিলে, সেখানেও দেখা গিয়েছে রাজধানী ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলি ধোঁয়ায় সম্পূর্ণ ঘেরা। ছবিতে যে লাল চিহ্নগুলি দেখা গিয়েছে, তার মাধ্যমে দেখানো হয়েছে যে, কোথায় কোথায় বড় মাপে আগুন জ্বলছে। দেখা গিয়েছে, পঞ্জাব, হরিয়ানা ও পাকিস্তানের কিছু অংশেই মাইলের পর মাইল জমিতে ন্যাড়াপোড়ার কারণেই এই দূষণ তৈরি হচ্ছে।
Smoke from crop fires in northern India blanketed Delhi and contributed to soaring levels of air pollution. https://t.co/Pe30imj6xV pic.twitter.com/RyNEmVcbXx
— NASA Earth (@NASAEarth) November 18, 2021
নাসার এক বৈজ্ঞানিক জানিয়েছেন, ফসলের অবশিষ্ট অংশ পোড়ানোর কারণে যে ভয়ঙ্কর দূষণের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে ওই একদিনেই কমপক্ষে ২ কোটিরও বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছে। পবন গুপ্তা নামক ওই বৈজ্ঞানিক বলেন, “১১ নভেম্বরের ওই বিশাল পরিমাণ কালো ধোঁয়া এবং ওই এলাকায় জনসংখ্য়ার বিচার করে বলা যায়, কমপক্ষে ২ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ দূষণের কারণে প্রভাবিত হয়েছেন।”
দীপাবলির পর থেকেই শীর্ষে পৌঁছেছে দিল্লির দূষণের মাত্রা। বিগত দুই সপ্তাহ ধরেই দিল্লি ও সংলগ্ন রাজ্যগুলির বাতাসের গুণমান বিপজ্জনক থেকে অতি খারাপ পর্যায়ের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। দূষণের কারণে আপাতত এক সপ্তাহের জন্য দিল্লির সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের তরফে দূষণ নিয়ন্ত্রণে অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২১ নভেম্বর অবধি দিল্লির সমস্ত সরকারি অফিসের অন্তত ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রেও একই নির্দেশিকা অনুসরণের অনুরোধ করা হয়েছে।
এছাড়াও, দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে আগামী ২১ নভেম্বর অবধি সমস্ত ধরনের নির্মাণকাজে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। দিল্লিতে ট্রাক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে আপাতত। দূষণ রোধে দিল্লিতে দীর্ঘদিন ধরেই মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। বর্তমানে দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলিকে দৃশ্যমান দূষণকারী গাড়ি ও পিইউসি (Pollution Under Control) সার্টিফিকেট ছাড়া গাড়িগুলিকে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দিল্লির সীমানার ৩০০ কিলোমিটারের মধ্যে যে ১১টি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্ল্যান্ট রয়েছে, তাদের মধ্যে ৬টি প্ল্যান্ট আপাতত দূষণ নিয়ন্ত্রণে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এগুলি আগামী ৩০ নভেম্বর অবধি বন্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
মূলত নভেম্বর মাসে প্রতি বছরই দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পায় দিল্লি ও সংলগ্ন রাজ্যগুলিতে। দীপাবলিতে দেদার বাজি পোড়ানো ও ফসল কাটার পর অবশিষ্ট অংশ জ্বালিয়ে দেওয়ার কারণে বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এরইমধ্যে শীতের প্রবেশ হয়ে যাওয়ায় হাওয়া চলাচলও কমে যায়। ফলে কুয়াশার সঙ্গে বিষাক্ত ধূলিকণা মিশে ধোঁয়াশা তৈরি করে।
তবে দূষণের জন্য একা কৃষকদের দোষারোপ করা উচিত নয়। শিল্পাঞ্চল ও যানবাহন থেকেও দিল্লিতে ব্যাপক মাত্রায় দূষণ হয়, এ কথা সুপ্রিম কোর্টও জানিয়েছে।