নয়া দিল্লি: আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি পিছু হটবে না, এই বার্তা স্পষ্ট করতেই আরও একধাপ এগিয়ে গেল আন্দোলনকারীরা কৃষকরা (Farmers Protest)। তাঁবু ছেড়ে এবার দিল্লির তিকরি সীমান্তে(Tikri Border)-র পাশেই বাড়ি বানিয়ে ফেললেন কৃষকরা।
ফসল তুলতে বহু আন্দোলনকারী কৃষকই বাড়ি ফিরে যাওয়ায় আন্দোলনে ভাটা পড়েছিল। তবে কৃষক সংগঠনগুলির তরফে বারংবার জানানো হয়েছিল, প্রয়োজনে তাঁরা উৎপাদিত ফসল নষ্ট করতেও রাজি, কিন্তু আইন প্রত্যাহার না হওয়া অবধি তাঁরা আন্দোলনস্থল থেকে পিছু হটবেন না। সরকারের উদ্দেশ্যে তাঁরা বার্তা দিয়েছিলেন, আগামী অক্টোবর মাস অবধি সীমান্তেই অবস্থান বিক্ষোভ করবেন। এই সময়ের মধ্যেও যদি বিতর্কিত তিন কৃষি আইন (Farm Laws) প্রত্যাহার না করা হয়, তবে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
গত নভেম্বর মাস থেকে দিল্লির সিংঘু(Singhu), তিকরি(Tikri) ও গাজিপুর (Gazipur) সীমান্তে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। দিল্লির হাড় কাঁপানো ঠান্ডার মাঝেও তাঁরা রাস্তায় ও তাঁবুতেই দিন কাটিয়েছিলেন। তবে এবার স্থায়ী বাসস্থানই বানিয়ে ফেললেন, তাও আবার তিকরি সীমান্তের পাশেই।
আরও পড়ুন: গত বছরের স্মৃতি উসকে দেশে একদিনেই আক্রান্ত ২৪ হাজার, করোনায় মৃত্যু ১৪০ জনের
হরিয়ানার তিকরি সীমান্তের পাশেই তৈরি করা হয়েছে ইটের ছোট ছোট কাঁচা বাড়ি। তৈরি করতে খরচ পড়েছে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা। অতি সামান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে তৈরি এই বাড়িগুলি তৈরির খরচ বাঁচাতে কৃষকরা নিজেরাও হাত লাগিয়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, দিল্লির চরম আবহাওয়ার বিষয়টিকে মাথায় রেখেই এই বাড়িগুলি তৈরি করা হয়েছে। একইসঙ্গে আন্দোলন প্রত্যাহার না করা নিয়ে সরকারকে কড়া বার্তাও দিচ্ছেন কৃষকরা।
এই বিষয়ে কিষাণ সোশ্যাল আর্মির প্রতিনিধি অনিল মালিক বলেন, “এই বাড়িগুলি কৃষকদের মতোই শক্তিশালী। আপাতত ২৫টি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। আগামিদিনে এক থেকে দুই হাজার বাড়ি বানানো হবে।”
Kisan Social Army has constructed a permanent shelter at Tikri border as protest against farm laws continues
“These houses are strong, permanent just like the will of the farmers. 25 houses built, 1000-2000 similar houses to be built in coming days,”Anil Malik, Kisan Social Army pic.twitter.com/4ZudQTIAqj
— ANI (@ANI) March 13, 2021
বিগত কয়েক মাসে কৃষকদের সঙ্গে কেন্দ্র ১১ দফা বৈঠক করলেও কোনও সুরাহা মেলেনি। সরকারের তরফে আগামী এক থেকে দেড় বছরের জন্য আইন স্থগিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হলেও আন্দোলনকারী কৃষকরা আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় থেকেছেন। এরইমাঝে প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্রাক্টর মিছিল ঘিরে দিল্লিতে হিংসা ছড়ানোয় সীমান্তগুলিতে কংক্রিটের ব্যারিকেড, কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সম্প্রতি আন্দোলনের ১০০ দিন পূরণ হতেই কৃষকরা প্রতিবাদ প্রদর্শনে কুণ্ডলী-মানেসর-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়ে দখল করে এবং টোলপ্লাজাগুলি দিয়ে বিনা করেই গাড়ি যাতায়াত করতে দেয়। আগামী ২৬ মার্চ ফের ভারত বনধের ডাক দিয়েছে আন্দোলনকারী কৃষকরা।