Rahul Gandhi: ১০ বছর আগে যদি কাগজটা ছিঁড়ে না ফেলতেন রাহুল…
Rahul Gandhi disqualification: ২০১৩ সালে কংগ্রেস সরকারের আনা এক অধ্যাদেশেরই বিরোধিতা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। সেদিন তা না করলে আজ তাঁকে সাংসদ পদ খোয়াতে হত না।

নয়া দিল্লি: ২০১৯ সালের এক ফৌজদারি মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বছরের কারাদণ্ড হয়েছে রাহুল গান্ধীর। যার জেরে, শুক্রবার (২৪ মার্চ), সাংসদ পদ খুইয়েছেন রাহুল গান্ধী। আর তারপরই তাঁর ২০১৩ সালের একটি ভিডিয়ো সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় বলা যেতে পারে এক প্রকার নিজের পায়েই নিজে কুড়ুল মেরেছিলেন রাহুল। আসলে, এদিন যে আদেশের আওতায় রাহুল গান্ধীর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হয়েছে, সেই আদেশটি একটি নতুন অধ্যাদেশ এনে সংশোধন করতে চেয়েছিল তাঁর নিজের দল কংগ্রেসই। কিন্তু, সেই সময় নিজের দলেরই বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। যার জেরে অধ্যাদেশটি বাতিল করেছিল মনমোহন সিং সরকার। সেই দিন রাহুল যদি অধ্যাদেশটির বিরোধিতা না করতেন, তাহলে এদিন দুই বছরের কারাদণ্ডের পরও সাংসদ হিসেবে অযোগ্য বলে ঘোষণা করা হত না তাঁকে।
২০১৩ সালের এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল যে, ন্যূনতম দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাংসদ এবং বিধায়কদের পদ অবিলম্বে খারিজ করা হবে। এর আগে পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত সংসদ-বিধায়কদের, তাঁদের সাজার বিরুদ্ধে আবেদন করার জন্য তিন মাস সময় পর্যন্ত সময় দেওয়া হত। তিনমাসের মধ্যেও নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ না করতে পারলে তবেই তাদের অযোগ্য ঘোষণা করা যেত। এর পাঁচ মাস পর, কেন্দ্রের তৎকালীন ক্ষমতাসীন ইউপিএ সরকার একটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। সেই অধ্যাদেশে দোষী সাব্যস্ত সাংসদ এবং বিধায়কদের অবিলম্বে অযোগ্য ঘোষণা করার নিয়মটি বাতিল করার কথা বলা হয়েছিল। সেই সময়ে, প্রকাশ্যে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। মনমোহন সরকারের এই পদক্ষেপকে “সম্পূর্ণ অর্থহীন” বলেছিলেন।
এক সাংবাদিক সম্মেলন করে রাহুল বলেছিলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সরকার যে অধ্যাদেশটি নিয়ে আসছে তা সম্পূর্ণ ভুল। এটি একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, প্রতিটি দলই এটি করে, এবং এই অর্থহীন কথা বন্ধ করার সময় এসেছে। আমরা যদি সত্যিই দুর্নীতি বন্ধ করতে চাই, তবে আমরা তার সঙ্গে সমঝোতা করতে পারি না। এই অধ্যাদেশটি ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া উচিত।” কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত অধ্যাদেশটি বাতিল করেছিল। এর এক বছর পরই কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন গুজরাটের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এর ১০ বছর পর, সেই আদেশেরই শিকার হলেন রাহুল গান্ধী। মোদী পদবিধারীরা সকলেই চোর কিনা, প্রকাশ্য সভাতেই এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। রাহুলের এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে গুজরাটের বিজেপি নেতা প্রকাশ মোদীর ফৌজদারি মানহানি মামলা দায়ের করেছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন রাহুল। আর যে নিয়ম তার দল একসময় সরিয়ে দিতে চেয়েছিল এবং তিনি তাঁর নিজের দলেরই বিরুদ্ধে গিয়েছিলেন, নিয়তির পরিহাসে সেই নিয়মের বেড়াজালেই সাংসদ পদ ছাড়তে হল তাঁকে।
