নয়া দিল্লি : বাজেট অধিবেশনের (Parliament Budget Session) তৃতীয় দিনে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) লোকসভায় ভারতের এক নতুন ব্যাখ্যা দিলেন। দুই স্বতন্ত্র ভারতের ব্যাখ্যা দিলেন রাহুল গান্ধী। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বুধবার লোকসভায় বলেন, “এখন দুটি স্বতন্ত্র ভারত রয়েছে, একটি ধনীদের জন্য এবং অন্যটি গরিবদের জন্য।” লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণ বিতর্ক চলছিল। সেই সময় রাহুল গান্ধী এই দুই ভারতের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন,”দুইয়ের মধ্যে ব্যবধান বাড়ছে।” এর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির ভাষণে কী কী কথার উল্লেখ ছিল না, সেই কথাও তুলে ধরেন রাহুল। বলেন, “আমি মনে করি তিনটি মৌলিক বিষয় রয়েছে। প্রথমটি হল দুটি ভারতের ধারণা, একটি ভারত নয়। একটি হল অত্যন্ত ধনী ব্যক্তিদের জন্য, যাদের প্রচুর সম্পদ রয়েছে, যাঁদের চাকরির প্রয়োজন নেই, যাদের জলের সংযোগ, বিদ্যুৎ সংযোগের প্রয়োজন নেই। অন্যটি গরিবদের জন্য।”
লোকসভায় রাহুল গান্ধী আরও বলেন, “রাষ্ট্রপতির ভাষণে বেকারত্ব নিয়ে একটি শব্দও ছিল না। সারা দেশের তরুণরা চাকরি খুঁজছে। আপনার সরকার তাদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে অক্ষম।” প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ শানিয়ে তিনি আরও বলেন, “আপনি মেড ইন ইন্ডিয়া, মেড ইন ইন্ডিয়া বলতে থাকেন। কিন্তু মেড ইন ইন্ডিয়া আর সম্ভব নয়। আপনি ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ ধ্বংস করে দিয়েছেন। আপনাকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে সমর্থন করতে হবে। নাহলে ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ সম্ভব নয়। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পগুলিই একমাত্র পথ, যারা কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে। দেশে বেকারত্ব কেবল বেড়েই চলছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমার মতে, রাষ্ট্রপতির ভাষণে কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে আমলাতান্ত্রিক ধারণাগুলির প্রতিফলন হিসেবে বেশি ফুটে উঠেছে। আমার মনে হয়েছে যেন এটি নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয় বরং একদল আমলার দ্বার নির্মিত হয়েছে, যাদেরকে কেবল কাগজে কিছু তৈরি রাখতে হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত, রাষ্ট্রপতির ভাষণ ছিল, একটি দীর্ঘ তালিকা, যা সরকার করেছে বলে দাবি করছে। কিন্তু আমরা দেখতে চাই গভীর কৌশলগত বিষয়গুলি, যার কোনও উল্লেখ নেই। আমাদের দেশ বর্তমানে যে চ্যালেঞ্জগুলির মুখোমুখি হচ্ছে, তার ধারেকাছে দিয়েও কোনও উল্লেখ করা হয়নি।”
দুই ভারতের মধ্যে ব্যবধান বাড়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, “আপনি (প্রেসিডেন্ট) বিহারের ঘটনা নিয়ে কথা বলেননি। রাষ্ট্রপতির ভাষণে বেকারত্ব নিয়ে একটি বাক্যও ছিল না। ভারতের তরুণরা চাকরি চাইছে, কিন্তু আপনার সরকার চাকরি দিতে পারেনি। ২০২১ সালে তিন কোটি যুবক কাজ হারিয়েছে। ৫০ বছরের মধ্যে বেকারত্ব সর্বোচ্চ।” রাহুল গান্ধী বলেন, “কত কর্মসংস্থান দেওয়া হয়, আপনি সে সম্পর্কে কথা বলেন না। কারণ আপনি যদি তা করেন, তবে দেশের মানুষ ভাববে আপনি ঠাট্টা করছেন। আমাদের বেশিরভাগ চাকরিই অসংঘটিত ক্ষেত্রে। আপনি ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের সেই খাত থেকে অর্থ দিয়েছেন। আপনি আঘাত করেছেন অসংঘটিত খাত। কীভাবে? নোটবন্দির মাধ্যমে, জিএসটির মতো ভুল সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, কোভিডের সময় কোনও সাহায্য হয়নি। জনসংখ্যার আয়ের ৮৪ শতাংশ কমেছে। ইউপিএ সরকারের আমলে ২৩ কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছিল।”