নয়া দিল্লি: ভারতের বিরুদ্ধে জঙ্গি কার্যকলাপে পাকিস্তানের মদত রয়েছে এই বিষয়টি দেশবাসীর কাছে আর নতুন নয়। এবার পাকিস্তানকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং (Defence Minister Rajnath Singh)। শুক্রবার, পাকিস্তানের (Pakistan) উদ্দেশে তিনি বলনে, আগেও সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে তাদের সাবধান করা হয়েছে। এরপরও যদি তারা নিজেদের না শুধরে নেয় তবে সীমান্তের বাইরে গিয়েও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে দ্বিতীয়বার ভাববে না ভারত।
এদিন একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর বর্তমান কাশ্মীর পরিস্থিতির বিবরণ দিতে গিয়েই পাকিস্তান প্রসঙ্গে এই মন্তব্য করেন রাজনাথ সিং। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সাল থেকেই কাশ্মীর তুলনামূলকভাবে শান্ত রয়েছে। ৩৭০ ধারা (Article 370) প্রত্যাহারের পর সন্ত্রাসবাদীদের আস্থা ভেঙে গিয়েছে।
কাশ্মীরে আলাদা আলাদা জায়গায় এনকাউন্টারে ৯ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। তাঁর মধ্যে রাজনাথের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। ১১ অক্টোবর থেকেই লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে উপত্যকাতে ব্যাপকভাবে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। জম্মু ও কাশ্মীরের যমজ সীমান্ত জেলা পুঞ্চ এবং রাজৌরিতে বেশি মাত্রায় এই অভিযান চলছে।
জঙ্গিদের অস্ত্রসস্ত্র ব্যবহার ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করে পাকিস্তান। এই অভিযোগ অনেক পুরানো। এই নিয়েও পাকিস্তানকে নিশানা করেন রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার চেষ্টা করেও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কোনও সমর্থন আদায় করতে পারেনি পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযানের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসকে নিশানা করে রাজনাথ বলেন “মনে করে দেখুন আগের সরকারের সময়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেমন নরম মনোভাব ছিল। জঙ্গি হানা ঘটলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলিকে লঘু করা হত, এতে জঙ্গিরাই লাভবান হত। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি বদলেছে।”
উল্লেখ্য, একের পর এক জঙ্গি হানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই তিন দিনের কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (HM Amit Shah)। ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর সেটাই ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম কাশ্মীর সফর। কাশ্মীরে পৌঁছেই একের পর এক জঙ্গি হানা, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আস্ফালন, জঙ্গি হানায় নাগরিকদের মৃত্যু, সীমান্তবর্তী এলাকায় বেআইনি অনুপ্রবেশ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পৌরহিত্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কাশ্মীরে বিশাল সংখ্যায় মোতায়েন করা নিরপত্তারক্ষী থাকা সত্ত্বেও কেন উপত্যকায় সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। কাশ্মীরিদের নাগরিকদের মন জয়ে অমিত জানিয়েছিলেন এতদিন উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল কাশ্মীর কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Narendra Modi) নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর।