নয়া দিল্লি: সোমবার রাজ্যসভার ১২ সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিরোধীরা এই ইস্যুতে সরব হলেও নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরলেন না রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু। তাঁর দাবি, সাসপেন্ড হওয়ার পরও সাংসদদের কোনও অনুশোচনা নেই। তাই সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন তিনি। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘যে সব সদস্য রাজ্যসভাকে অপবিত্র করেছেন, তাঁদের মধ্যে কোনও অনুতাপ নেই। তাই আমি মনে করি সাজা প্রত্যাহার করার যে আর্জি বিরোধীরা জানিয়েছেন তা মেনে নেওয়া যাবে না।’ তিনি জানান, রাজ্যসভার সব নিয়ম মেনেই সাংসদদের সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সাসপেন্ড হওয়া ১২ জন সাংসদ মিলিতভাবে ক্ষমা চেয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডুকে। কিন্তু, চিঠিতে সন্তুষ্ট হননি রাজ্যসভার চেয়ারম্যান। রাজ্যসভার সাসপেন্ড হওয়া ১২ জন সাংসদের থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা চান বেঙ্কাইয়া নাইডু। আর প্রত্যেককে আলাদাভাবে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেন।
আজ সকাল থেকে সাংসদদের বরখাস্ত করার ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভা। এরই মধ্যে নাইডু বিরোধীদের বলেন, ‘রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের যে কোনও পদক্ষেপ করার ক্ষমতা রয়েছে। গতকাল যা হয়েছে, তাতে অবশ্য চেয়ারম্যান পদক্ষেপ করেননি, পদক্ষেপ করা হয়েছে রাজ্যসভার তরফে।’ পাশাপাশি বাদল অধিবেশনের কথা বিরোধীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাদল অধিবেশনের স্মৃতি এখনও আমাদের মনে রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাদল অধিবেশনে যা হয়েছিল, তাতে আমি আশা করেছিলাম সংসদের বর্ষীয়ান সাংসদেরাই সরব হবেন। সেটা হলে আমাদের সংসদ চালানোর পক্ষে সহযোগিতা করা হত। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটা হয়নি।’
এ দিন ১৪টি বিরোধী দলের তরফে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য আবেদন জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেই ১৪টি বিরোধী দলের মধ্যে ছিল না তৃণমূল। এ দিন, সকালে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়ে বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস সহ বিরোধী নেতারা। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে। বাদল অধিবেশনে সংসদে যে আচরণ করা হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই ১২ জন সাংসদের বিরুদ্ধে শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই ১২ জন সাংসদ শীতকালীন অধিবেশনে বাকি দিনগুলিতে অংশ নিতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, বাদল অধিবেশনে কেন্দ্রের কৃষি আইনি নিয়ে দীর্ঘতর সময় আলোচনা চেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিরোধীরা। ওই ইস্যুতে আলোচনার জন্য কেন কম সময় দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিরোধী সাংসদেরা। কেউ আলো কাপড় উড়িয়ে দেন, কেউ ফাইল ছুড়ে দেন রাজ্যসভায়। অনেকে টেবিলের ওপর উঠে পড়েন। চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় সংসদে। বিরোধীদের আচরণ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন বেঙ্কাইয়া নাইডুর, তাঁর চোখে জল চলে এসেছিল। এবার সেই আচরণের জেরেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হল।