নয়া দিল্লি : হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব। তাঁকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জ্বরে মাথা ঘোরাচ্ছিল তাঁর। তাঁর রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আপাতত রক্তের পরীক্ষার সেই রিপোর্ট আসার অপেক্ষা করছেন চিকিৎসকরা। যদিও চিকিৎসকরা বলছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থায় গুরুতর সমস্যা বলে বিবেচনা করার কিছু নেই।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার অর্থাৎ, গতকালই পটনা বিমানবন্দর থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেন লালু প্রসাদ যাদব। জানা গিয়েছে, গতকাল থেকেই লালু প্রসাদ যাদবের শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল না। এরই মধ্যে গতকাল পটনা থেকে দিল্লি এসেছিলেন আরজেডি প্রধান। আজ সন্ধ্যায়, তাঁর শারীরিক অবস্থা হঠাৎ আরও অবনতি হতে শুরু করে। তাই আর দেরি না করে তাঁকে দিল্লির এইমস হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভরতি করা হয়।
বৃহস্পতিবার, দিল্লি যাওয়ার আগে পাটনা বিমানবন্দরে, নীতি আয়োগের রিপোর্ট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ঘেরাও করেন লালু যাদব। লালু যাদব বলেছেন, “নীতি আয়োগ রিপোর্ট বলছে যে রাজ্য শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্যে পিছিয়ে আছে। উন্নয়নের স্লোগান দিতেন, এখন এই রিপোর্ট এসেছে। নীতীশ কুমারকে পুরো জলে ডুবিয়ে দেওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজনীতিতে ফিরছেন লালু প্রসাদ যাদব। জেলে বন্দিদশা ও শারীরিক সমস্যার কারণে গত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেননি তিনি। তবে বিহারে ফিরতেই ফের রাজনীতিতে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি (RJD) নেতা লালু প্রসাদ যাদব (Lalu Prasad Yadav)। তাঁর মতে, মানুষের ভালবাসার কারণেই তিনি ফিরে আসতে পেরেছেন।
সংবাদসংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে লালু প্রসাদ যাদব সেই সময় বলেছিলেন, “আমি অসুস্থ থাকায় ও জেলবন্দি থাকার কারণে দুটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারিনি। এখন উপ-নির্বাচন হচ্ছে, সেই সময়ই আমি ফিরে আসতে পেরেছি কেবল মানুষের ভালবাসাতেই।”
১৯৯০ সাল থেকে ২০০৫ সাল অবধি বিহারে রাজ করেছিলেন লালু প্রসাদ যাদব। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। কিন্তু ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বিহারের পশুপালন দফতরের মাধ্যমে ঝাড়খণ্ডের দুমকা ট্রেজারি থেকে ৩.১৩ কোটি টাকা গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে লালু প্রসাদ যাদবের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই জেলে লালুপ্রসাদ। তবে জেলে থাকলেও তাঁর বেশি সময় কেটেছে ঝাড়খণ্ডের রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স হাসপাতালে। এই জানুয়ারি মাসেই শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। লালুর অনুপস্থিতিতেই বিহারে গত বিধানসভা নির্বাচন লড়েছিল রাষ্ট্রীয় জনতা দল। লালুপুত্র তেজস্বী আরজেডির ব্যাটন সামলেছিলেন। সেই নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বিজেপি-জেডিইউ জোট বিহারের ক্ষমতায় আসে। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ কুমার।