Su-57 Fighter Jets: চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে মোদীকে পরমাণু হামলায় সক্ষম R-37M মিসাইল দিতে চান পুতিন
Su-57 Fighter Jets: নয়া R-37M মিসাইল ভারতে সরবরাহ করতে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। আর সেইমতো, দিল্লিকে এই নয়া মিসাইল বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে মস্কো। ভারতও চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা ও নিরাপত্তার জন্য এরকম মিসাইল খুঁজছে। মস্কোর বক্তব্য, সুখোই ৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানের সঙ্গেই এই মিসাইল জুড়ে দেওয়া যাবে।

আমেরিকা-চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিল রাশিয়া। সম্প্রতি পরমাণু হামলায় সক্ষম এক নয়া এয়ার টু এয়ার মিসাইলের পরীক্ষা সেরে ফেলেছে মস্কো। পরমাণু হামলা চালাতে পারে এমন মিসাইলের মধ্যে এটিই সবচেয়ে দূরপাল্লার, দাবি মস্কোর। আর এই খবর পশ্চিমী দেশগুলির প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে। পেন্টাগনের ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি DIA, তাদের সাম্প্রতিকতম রিপোর্টে এই নিয়ে বিশেষ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। কারণ, এই নয়া মিসাইল, রাশিয়ার পরমাণু হামলার দক্ষতাকে এক লাফে অনেকটাই বাড়িয়ে দিল।
পাশাপাশি, রুশ মিডিয়া সূত্রে আরও খবর, এই নয়া R-37M মিসাইল ভারতে সরবরাহ করতে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বিশেষ বন্ধু। এস-৪০০-এর ব্যাপক সাফল্যের পর এবার দিল্লিকে এই নয়া মিসাইল বিক্রির প্রস্তাবও দিয়েছে মস্কো। অন্যদিকে, ভারতও এই পরিস্থিতিতে চিন ও পাকিস্তান সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা ও দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য ঠিক এরকমই দূরপাল্লার মিসাইল খুঁজছে। মস্কোর বক্তব্য, সুখোই ৩০এমকেআই যুদ্ধবিমানের সঙ্গেই এই মিসাইল জুড়ে দেওয়া যাবে। প্রয়োজনে টু সিটার Su-57 উৎপাদনে গতি আনতে রাশিয়াই সাহায্য করবে। আর এমনটা হলে ভারতীয় বায়ুসেনা শুধু উপমহাদেশে নয়, বিশ্বের আকাশেও অজেয় হয়ে উঠবে। এখন প্রশ্ন হল, কেন একটা রুশ মিসাইল নিয়ে বিশ্বজুড়ে এত হইচই? কেন এত আশঙ্কা পেন্টাগনের?
এর কারণ মিসাইলটির হামলা চালানোর দক্ষতা। রাশিয়ার এই নতুন R-37M মিসাইলকে ‘ন্যাটো’ ডাকে AA-13 ‘Axehead’ বলে। বাংলায় যার মানে একটা ধারাল কুড়লের মাথা। নামের অর্থ শুনেই বুঝতে পারছেন আশা করি, শত্রুর উপর কতটা জোরাল আঘাতে সক্ষম এই মিসাইল। R-37M একটি লং রেঞ্জের এয়ার টু এয়ার মিসাইল। পরমাণু হামলা চালাতে দক্ষ। পাল্লা ৪০০ কিলোমিটারেরও বেশি। শব্দের চেয়ে অন্তত ৬ গুণ তীব্র গতিতে ছোটে। গতিবেশ ঘণ্টায় ৭৫০০ কিলোমিটার। পোশাকি ভাষায় এই গতিকে বলে বলে ‘ম্যাক ৬’। ইতিমধ্যেই রুশ এয়েরোস্পেস ফোর্স আকাশপথে নিরাপত্তার স্বার্থে এই মিসাইল ব্যবহার শুরু করেছে। মস্কোর নিউক্লিয়ার ভাঁড়ারে এটি অন্যতম তীব্র গতি ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। তবে R-37M মিসাইলের সবচেয়ে বড় গুণ এর ন্যাভিগেশন ক্ষমতা। মাঝপথে গতিমুখ পাল্টে তীব্র গতিতে ধেয়ে আসা যুদ্ধবিমান, মিসাইলকেও নিখুঁত দক্ষতায় আকাশেই নষ্ট করে দিতে পারে। রুশ বায়ুসেনা এখন মিগ ৩১বিএম-এর সঙ্গে জুড়েও এই মিসাইল ব্যবহার করছে, যে যুদ্ধবিমানকে আদর করে তারা ‘ফক্সহাউন্ড’ বলে ডাকে।

ভারতকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সুখোই-৩০এমকেআই-এর সঙ্গে এই মিসাইল ব্যবহারের। রুশ সেনার দাবি, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে দুশমনের কাছে যে মার্কিন এফ-১৬ বা চিনা জে-১০ ফাইটার জেট রয়েছে, সেগুলি ভারতের সীমানায় ঢোকার আগেই নষ্ট করে ফেলা যাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে ভারতেও চাইলে এই মিসাইল তৈরি করতে পারে রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিন্দুস্তান এয়েরোনটিক্যাল লিমিটেড বা ‘হ্যাল’। বন্ধু মোদীকে পুতিনের প্রস্তাব, একবার এই মিসাইল যদি সুখোইয়ের সঙ্গে জুড়ে দেয় দিল্লি, তাহলে অন্তত আগামী কয়েক দশক বেজিং বা ইসলামাবাদ ভারতের সামনে হাতজোড় করে নতমস্তকে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হবে।
R-37M তৈরি করেছে রাশিয়ার ভিম্পেল ডিজাইন ব্যুরো। আগেই বলেছি, এই মিসাইল তৈরি হয়েছে মাঝ-আকাশে ‘হাই-ভ্যালু টার্গেট’কে ধ্বংস করতে। শত্রুর যুদ্ধবিমান, এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম বা AWACS, ট্যাঙ্কার এয়ারক্রাফটকে রুশ আকাশপথে ঢোকার আগেই নষ্ট করে দিতে পারবে R-37M মিসাইল। যে কোনও স্টেলথ ফাইটার জেটকেও ভেঙে মাটিতে ফেলে দেবে। মিসাইলটি ওজন ৫১০ কিলোগ্রাম, পেটের ভিতর ৬০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে পারে। এর গাইডেন্স সিস্টেম এতটাই অত্যাধুনিক যে মাঝপথেও মিসাইলটির অভিমুখ বদলানো যাবে কন্ট্রোল রুম থেকে। অ্যাক্টিভ রেডার হামিং সিস্টেমের জন্য কোনও উড়ন্ত টার্গেটকে একবার নিশানা করে মিসাইলটি ফায়ার করে দিলে এটি নিজে থেকেই ওই গতিশীল টার্গেটকে খুঁজে ধ্বংস করে দেবে। যুদ্ধের ময়দানে একে বলে ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’। ঠিক এই কারণেই, আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে এই মিসাইলের কদর রয়েছে। রুশ যুদ্ধবিমান সুখোই ৩০, ৩৫, ৫৭, মিগ-৩১বিএম, ৩৫-এর সঙ্গে একে জুড়ে দেওয়া যাবে।

