মুম্বই: হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় (Army Chopper Crash) মৃত্যু হয়েছে প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াতের (Bipin Rawat)। আজই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে দিল্লিতে। গোটা দেশ যখন শোকে কাতর, সেই সময়ই দুর্ঘটনা ও বিপিন রাওয়াতের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুললেন শিবসেনা(Sihiv Sena)-র নেতা তথা রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত(Sanjay Raut)।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, “সিডিএস জেনারেল বিপিন রাওয়াতের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে সাধারণ মানুষের মনে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি সময়ে চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত যে সামরিক জবাব দিয়েছে, তাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন জেনারেল রাওয়াত। সেই কারণেই এই ধরনের দুর্ঘটনা যখন ঘটে, নানা ধরনের প্রশ্ন উঠে আসে সাধারণ মানুষের মনে।”
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি, দুটি ইঞ্জিন সম্পন্ন এমআই-১৭ ভি৫ হেলিকপ্টারটি কীভাবে মাঝ আকাশ থেকে ভেঙে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সঞ্জয় রাউত বলেন, “আমরা দাবি করি যে সশস্ত্র বাহিনীতে আধুনিকীকরণ হয়েছে। তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটল কীভাবে?”
তিনি আরও দাবি করেন, গোটা দেশের বাসিন্দারা ও শীর্ষনেতারাও এই দুর্ঘটনার শোকে বিমূঢ় রয়েছেন। তবে তাদের মনে দুর্ঘটনাকে ঘিরে যে সমস্ত প্রশ্নগুলি উঠছে, তা প্রধানমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দূর করা উচিত। পুলওয়ামা হামলার পর ভারত যে এয়ার স্ট্রাইক চালিয়েছিল, তাতেও জেনারেল বিপিন রাওয়াত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন, এ কথা উল্লেখ করে শিবসেনার সাংসদ বলেন, “এই দুর্ঘটনার পিছনে কোনও অন্তর্ঘাত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা উচিত।”
গত বুধবার তামিলনাড়ুর কুন্নুরের কাছে জঙ্গলে ভেঙে পড়ে অত্যাধুনিক এমআই-১৭ ভি৫ সেনা হেলিকপ্টার। ওই হেলিকপ্টারে ছিলেন সিডিএস প্রধান বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত এবং ১২ জন সেনাকর্মী। সুলুর থেকে ওয়েলিংটনের ডিফেন্স সার্ভিস কলেজের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল ওই কপ্টারটি, কিন্তু অবতরণের ঠিক ১০ মিনিট আগেই দুর্ঘটনার মুখে পড়ে হেলিকপ্টারটি। দুর্ঘটনায় মারা যান বিপিন রাওয়াত সহ ১৩ জন, কেবলমাত্র উইং কম্য়ান্ডার বরুণ সিংই বেঁচে যান।
দুর্ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, হাইটেনশন কোনও তারে ধাক্কা লেগেই ভেঙে পড়ে হেলিকপ্টারটি। কিন্তু প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, মাঝ আকাশেই আগুন লাগে হেলিকপ্টারে, এরপরই পাক খেতে খেতে মাটিতে আছড়ে পড়েছিল সেনা হেলিকপ্টারটি। অন্য়দিকে, গতকালই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো, যা কপ্টারটি ভেঙে পড়ার আগের মুহূর্তের বলে মনে করা হচ্ছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, আকাশে ওড়ার সময়ই ঘন মেঘের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে কপ্টারটি, ঠিক তারপরই একটি বিকট শব্দ কানে আসে। এই ভিডিয়োর সত্যতা এখনও যাচাই না করা হলেও, খারাপ আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনার তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
প্রাক্তন সেনাকর্তা ও বিশেষজ্ঞদের দাবি, যেহেতু এই ধরনের সফরের আগে কপ্টারের যাবতীয় যন্ত্র তিনবার করে পরীক্ষা করা হয়, তাই যান্ত্রিক ত্রুটি থেকে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কম। গতকালই দুর্ঘটনাস্খল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ব্ল্যাক বক্স। এই ব্ল্যাক বক্স যাচাই করেই দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।