নয়া দিল্লি : বিরোধী দলগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বৈঠকে ডাক পেয়েছিল শরদ পাওয়ারের এনসিপি। শিবসেনা, ডিএমকে সহ অন্যান্য দলগুলিও ছিল সোনিয়ার ডাকা বৈঠকে। রাজ্যসভার ১২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে আগামী দিনে বিরোধী দলগুলির গতিপ্রকৃতি কী হবে, তার একটি নীল নকশা তৈরি করতেই এই বৈঠক। অথচ সেই বৈঠকে ডাক পায়নি মমতার দল।
বিরোধীদের বৈঠক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শরদ পাওয়ার, শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত, টি আর বালু, সীতারাম ইয়েচুরি, ফারুক আবদুল্লা। সোনিয়া পুত্র রাহুল গান্ধীও ছিলেন আজকের বৈঠকে। সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত সব বিরোধী দলের প্রতিনিধিরাই চাইছেন, সাংসদদের সাসপেন্ড করার বিষয়টি নিয়ে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে কথা বলুন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।
উল্লেখ্য, বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে হই হট্টগোলের জেরে সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের তালিকায় রয়েছেন তৃণমূলের দুই সাংসদও। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সাসপেন্ড হওয়ার পর থেকেই আলাদাভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে তৃণমূল। সংসদের বাইরে প্রতিবাদেই শুধু একা নয়, এমনকী সংসদের অধিবেশন কক্ষের ভিতরেও নিজের পৃথক অস্তিত্ব বোঝাতে চেয়েছে তৃণমূল। যখন বাকি বিরোধী দলগুলি ওয়াকআউট করছে, তখন দেখা গিয়েছে তৃণমূল সাংসদরা বসে রয়েছেন। পরে অবশ্য সেই ইস্যুতে বিরোধিতা জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা, তবে পৃথকভাবে। তৃণমূলের এই একলা চলো নীতির জন্যই কি সংসদীয় রাজনীতিতে আরও একাকী হয়ে যাচ্ছে জোড়াফুল?
গত মঙ্গলবারই দিল্লিতে উড়ে গিয়েছিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলীয় সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। মঙ্গলবারের বৈঠকে যা আলোচনা হয়েছে, তার থেকে এটা স্পষ্ট যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলে দূরত্ব আগামী দিনে আরও বাড়তে চলেছে। দলীয় সাংসদদের অভিষেক স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, তাঁরা যেন কংগ্রেসের মুখ চেয়ে না থাকেন। যে কোনও ইস্যুতে কংগ্রেস কী করবে, তার জন্য অপেক্ষা করে বসে না থাকার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর সাফ কথা, কংগ্রেস একটি পৃথক দল এবং তৃণমূল একটি পৃথক দল। কংগ্রেসের কী রণকৌশল হবে, তার উপর নির্ভর করে তৃণমূলের রণকৌশল করা হবে – এটা কখনোই হতে পারে না। তৃণমূল একটি সম্পূর্ণ পৃথক রাজনৈতিক সত্ত্বা। সেই কারণে তৃণমূলের রণনীতিও হবে বাকিদের থেকে আলাদা। তাই প্রত্যেক সাংসদকে নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এগোনোর বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আপাতত জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ করে সংসদীয় রাজনীতিতে, কার্যত একাই লড়ছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে আজ সোনিয়া গান্ধী বিরোধীদের বৈঠকে তৃণমূলকে না ডাকায় সেই দূরত্ব আরও কিছুটা বাড়ল বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।