অভিজিৎ ঘোষাল: টনপ্রতি দেড় হাজার টাকা দাম বাড়ল স্টিলের। ২ ফেব্রুয়ারি বেড়েছে এই দাম। অথচ ১ ফেব্রুয়ারি বাজেটে স্টিলের দামে রাশ টানার উদ্দেশে কাস্টমসের হার (Custom Duty) কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বণিকসভা সিআইআইয়ের আমদানি রফতানি কমিটির চেয়ারম্যান ও প্যাটন ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় বুধিয়া জানিয়েছেন, বাজেটের পরের দিনই মূল্যবৃদ্ধিতে শঙ্কিত শিল্পমহল।
বুধিয়া বলেন,“এটা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয়, রীতিমত ভীতিপ্রদ। বাজারে প্রত্যাশা ছিল সোমবার কাস্টমস ডিউটি কমানোর ফলে স্টিলের দাম যথেষ্ট কমবে। কিন্তু তার পরিবর্তে টন প্রতি ১,৫০০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় সাংঘাতিক ধাক্কা এসেছে”। বণিকসভার এই কর্মকর্তা জানান, জুলাই ২০২০-তে এক টন কোল্ড রোল্ড স্টিলের দাম ছিল ৪৫,১০০ টাকা। প্রতি মাসে বাড়তে বাড়তে গত মাসে তা গিয়ে ঠেকে ৬৫,৭০০ টাকায়। ২ ফেব্রুয়ারি তা গিয়ে ঠেকে ৬৭,২০০ টাকায়।
বুধিয়া জানান, স্টিল মিলগুলি ২ ফেব্রুয়ারি থেকে দাম বাড়ানোর যে ঘোষণা করেছে তা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের কাছে মৃত্যু পরোয়ানার সামিল। এই মূল্যবৃদ্ধি ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট থেকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রোগী স্থানান্তরের সমান। সোমবার বাজেটে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “লোহা এবং ইস্পাতের দামে দ্রুত বৃদ্ধির কারণে মাঝারি এবং ক্ষুদ্র শিল্পসহ অনেক শিল্প সংস্থাই তীব্র সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। তাই আমরা সেমিস, ফ্ল্যাট আর লং-সহ বিভিন্ন ইস্পাত ও লোহার পণ্যের উপর কাস্টমস ডিউটি ৭.৫%-এ নামিয়ে আনছি।”
বুধিয়ার মতে, দেশ থেকে যা পণ্য রফতানি হয়, তার ২৫ শতাংশই ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য। ঘটনাচক্রে চলতি বছর জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে, ইঞ্জিনিয়ারিং রফতানিকারকদের সংস্থা ইইপিসি এই স্টিলগুলির দাম নিয়ন্ত্রণ করার আর্জি জানিয়েছে সরকারকে। এই সংস্থা সরকারকে জানায়, হট রোলড কয়েল টন প্রতির দাম ছিল ৫৮,০০০ টাকা। যা কিনা এক বছরে ৫৫ শতাংশ দাম বাড়ার ফসল। এই এক বছরে চিনে ইস্পাতের বিপুল চাহিদার কারণে ইস্পাতের এত চড়া মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। অথচ গত এক বছরে করোনা অতিমারীতে বিশ্বের সর্বত্রই উৎপাদন ক্ষমতা একেবারে ছিল না বললেই চলে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই শিল্পে বিপুল কর্মসংস্থান হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: ভারতের মাটিতে চিনা অনুপ্রবেশ জাতীয় পতাকার আসল অপমান, উল্টো সুর উদ্ধবের!
ইঞ্জিনিয়ারিং রফতানিকারকরা সাধারণভাবে চিন, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, মালয়শিয়ার মতো দেশেগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে থাকেন। এই দেশগুলিতে আছে উন্নত পরিকাঠামো, অত্যন্ত উন্নত বন্দর, দ্রুত পরিবহণ ব্যবস্থা। এছাড়া এই দেশগুলি তাদের সরকারের থেকে ভর্তুকিও পেয়ে থাকে।