নয়া দিল্লি : আগামী মাসেই কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হবে। তার আগে উদ্বিগ্ন ভারতবাসী। কোন জিনিসের দাম বাড়ল। কোনটার দাম একই থাকবে তার দিকে তাকিয়ে জনতা। করোনা অতিমারিতে ভেঙে পড়েছিল ভারতীয় অর্থনীতি। ইতিমধ্যেই ভাঁড়ারে টান পড়েছে একাধিক ভারতবাসীর। তাই এইবারের বাজেট একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে কী দাওয়াই ঠিক করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন তার জানতে দিন গুনছে দেশবাসী।
শোনা যাচ্ছে, বাজেটে ১.৪ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ হতে পারে সার বিক্রয়কারী কোম্পানিগুলির জন্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, সার উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি যাতে বাজার দরের তুলনায় কম দামে কৃষকদের কাছে সার বেঁচতে পারেন সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর। ভারতের কৃষকদের কিছুটা স্বস্তি দিতেই এই টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে সারে ভর্তুকি হিসেবে ১.৪ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করতে চলেছে কেন্দ্র। গত বছরের বাজেটে ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা সারের জন্য় বরাদ্দ করা হয়েছিল। এই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া বাকি আছে এখনও। ১৪০ কোটি জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ জনগণ জীবন ধারণের জন্য সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। গত বাজেটে ৮০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার পরেও ধাপে ধাপে আরও ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়েছে।
সারের ভর্তুকি বাড়ানোর পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আগামী মাসে ৫ রাজ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে আছে উত্তর প্রদেশ এবং পঞ্জাব। এই দুই রাজ্যেই কৃষকদের প্রাধান্য বেশি। গত এক বছরে তিনটি কৃষি আইন নিয়ে কেন্দ্রকে অনেক বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। অবশেষে পঞ্জাব ও উত্তর প্রদেশে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে গুরু নানকের জন্মতিথিতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই তিন আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে এই সংক্রান্ত বিল পাশ করার পর কৃষকরা সিঙ্ঘু সীমানা থেকে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন। এই তিন আইনের জন্য ইতিমধ্যেই বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি ক্ষুণ্ণ কৃষকরা। তাই কৃষকদরদী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে তাদের রাগ কমানোর চেষ্টা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপি এই দুই রাজ্যে নিজের জমি শক্ত করতে চেয়ে এই পদক্ষেপ করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বর ডিসেম্বর নাগাদ ভারতে সারের আকাল দেখা গিয়েছিল। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্যবৃদ্ধির জেরে দেশে সারের কালো বাজারিও শুরু হয়েছিল। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান এবং উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন জেলায় সারের আকাল দেখা দিয়েছিল। ন্যায্য মূল্যে সার না পেয়ে কৃষকরা বেশি দাম দিয়ে সার কিনতে বাধ্য হয়েছিল। তারপরেও সার না পেয়ে দীর্ঘ লাইনে দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছিল কৃষকদের। তাই কৃষকদের স্বস্তি দিতেই এই পদক্ষেপ করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন : Covid-19 Pandemic : বর্ষপূর্তিতে আরও এক সাফল্য,৭ দিনে দেওয়া হল ৫০ লক্ষের বেশি বুস্টার ডোজ