নয়া দিল্লি: আরজি কর মামলায় সুপ্রিম কোর্টে চরম চাপের মুখে রাজ্য। শুরু থেকেই একটি ‘সুপ্রিম’ প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। কেন ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর UD কেস (অস্বাভাবিক মৃ্ত্যু মামলা) দায়ের করা হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হয় রাজ্যকে। কপিল সিব্বল যুক্তি দিয়েছিলেন, রাত সাড়ে ১১টায় প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়। এবং গোটা বিষয়ের টাইমলাইনও তাঁর কাছে রয়েছে বলে দাবি করেন। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের একটাই প্রশ্ন, যখন সন্ধ্যা ৬টা১০ মিনিট থেকে ৭টা ১০ মিনিটের মধ্যে ময়নাতদন্ত করা হয়ে যায়, তাহলে রাত সাড়ে ১১টার সময়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু কীভাবে হল? আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই এদিনের শুনানির সিংহভাগ জুড়ে চলে সওয়াল জবাব। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল একাধিক যুক্তি খাড়া করেন, যদিও তা ধোপে টেকেনি সেঅর্থে। আর এই ইস্যুতেই তাঁর সঙ্গে সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহেতার একাধিক প্রেক্ষিতে বাগবিতণ্ডা হতে দেখা যায়। এক সময়ে রেগেই সলিসেটর জেনারেলকে রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘দয়া করে হাসবেন না। একটা মেয়ের প্রাণ গিয়েছে।’
আরজি কর মামলার শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় গোটা ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “পুলিশ অফিসারদের ভূমিকাও দেখার রয়েছে, কখন দেহ দেখা গিয়েছিল…. কখন পুলিশ এসেছিল… UD রিপোর্ট… তারপর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট… দেহ দাহ করা… এবং তারপর এফআইআর।” আইনজীবী সিব্বল তখন বলেন, “একদমই।” তখন সলিসেটর জেনারেল তুষার মেহেতা বলেন, “এক্ষেত্রেও এটাই বলার, UD কেস রাত সাড়ে ১১টায় দায়ের হয়েছে।” তখন তাঁর কথার মাঝেই আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “সিবিআই-এর হাতে এই তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে।” কিছুটা বিরক্ত হতে দেখা যায় সলিসেটর জেনারেলকে। এসজি তুষার মেহেতা বলেন, “প্লিজ আমাকে একটু সুযোগ দেবেন। ” তখন আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “কীসের সুযোগ? আপনার ওই সিডি-টাই দেখা উচিত।” এসজি তখন বলেন, “আমি এই মুহূর্তে কোনও লড়াই চাই না।”
এসজি তখন প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, “দয়া করে আমাকে ২মিনিট দিন। আমাকে জেনারেল ডায়েরি পড়তে দিন। এই গোটা বিষয়টি দ্বিতীয় পাতায় রয়েছে। যেখানে উল্লেখ রয়েছে অফিস থেকে নির্দেশ আসার পর পুলিশ থানায় গিয়ে রাত সাড়ে এগারোটায় UD কেস দায়ের করে, আর ১১.৪৫ মিনিটে এফআইআর।”
এসজি তুষার মেহেতা এই গোটা বিষয়টি বলার সময়েই আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, “আপনি যেটা করছেন, সেটা জলঘোলা ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি তো এই বিষয়টিই বলেছি।” এই কথা বলার সময়ে হেসে ফেলেছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তখনই কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন এসজি তুষার মেহেতা। তিনি বলেন, “আপনি হাসছেন কেন? এটাতে হাসির কোন বিষয়? একটা মেয়ের প্রাণ চলে গিয়েছে। আর সেটাও অত্যন্ত অমানবিক ও বর্বরোচিতভাবে।” আইনজীবী কপিল সিব্বল চ্যালেঞ্জ করেন, যা করা হয়েছে, তা নিয়ম মেনেই।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)