‘একজন পড়ুয়ার মৃত্যু হলেও দায়ী থাকবে রাজ্যই’, দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নিয়ে ‘সুপ্রিম’ হুঁশিয়ারি

মঙ্গলবারই অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

'একজন পড়ুয়ার মৃত্যু হলেও দায়ী থাকবে রাজ্যই', দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নিয়ে 'সুপ্রিম' হুঁশিয়ারি
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 24, 2021 | 1:41 PM

নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণের জেরে বাকি রাজ্যে দশম-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হলেও অন্ধ্র প্রদেশে আগামী মাসেই দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা না ভেবেই রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের তুমুল সমালোচনা করল সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “যদি একজন পড়ুয়ারও মৃত্যু হয়, তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য সরকারই”। একইসঙ্গে এইধরনের ঘটনা ঘটলে রাজ্য সরকারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশও হতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

বৃহস্পতিবার অন্ধ্র প্রদেশের পড়ুয়া ও অভিভাবকদের পরীক্ষা বাতিলের আর্জির শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এএম খানবালিকর ও বিচারপতি দীনেশ মহেশ্বরীর বেঞ্চের তরফে বলা হয়, “করোনা পরিস্থিতির কারণে যখন বাকি সমস্ত বোর্ড পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছে, তখন অন্ধ্র প্রদেশ কেন ব্যতিক্রম হতে চাইছে? বাস্তব পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করেই বোর্ডগুলি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেশে নতুন একটি ভ্যারিয়েন্টের দেখা মিলেছে, ডেল্টা প্লাস। এই ভ্যারিয়েন্টে কতটা সংক্রামক, তা আমরা জানি না। এই পরিস্থিতিতে কীসের উপর ভিত্তি করে এবং কে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল?”

বিভিন্ন রাজ্যে করোনায় মৃতদের যে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, সেই  প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতিরা বলেন, “বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনায় মৃতদের পরু়িবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা অন্ধ্র প্রদেশের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম জারি রাখতে পারি। কারণ একজন পড়ুয়ার মৃত্যু হলেও তার জন্য রাজ্য সরকারই দায়ী থাকবে।”

রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, এটা কেবল পরীক্ষা নেওয়ার বিষয় নয়, সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষারও প্রশ্ন। সরকার পক্ষের কে বা কারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাকে চিহ্নিত করে একটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। আগামিকালও এই মামলার শুনানি হবে।

মঙ্গলবারই অন্ধ্র প্রদেশ সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বুধবার রাজ্যের জমা দেওয়া হলফনামায় জানানো হয়, বিকল্প কোনও উপায় না থাকায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।  তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রতিটি কক্ষে ১৫ থেকে ১৮ জনের বেশি পড়ুয়াকে বসানো হবে না।

এর ভিত্তিতেও এ দিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বেঞ্চ জানতে চান, যদি একটি কক্ষে ১৫ থেকে ১৮ জন পড়ুয়াকে বসানো হয়, তবে মোট পরীক্ষার্থীদের জন্য ৩৪ হাজার ৬৩৪টি কক্ষের প্রয়োজন পড়বে। এত সংখ্যক রুমের বন্দোবস্ত কোথা থেকে করবে বোর্ড? তারা খোলা আকাশের নীচে পড়ুয়াদের পরীক্ষা নেবেন কিনা, সে প্রশ্নও করা হয়। জবাবে রাজ্য় সরকারের তরফে জানানো হয়, পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তারা ইতিমধ্যেই ৩৪ হাজার রুম চিহ্নিত করেছেন এবং প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষক ও অ-শিক্ষক কর্মীদের টিকা দেওয়া হয়েছে। তারাও পরীক্ষার ডিউটি করতে রাজি। উল্লেখ্য, চলতি বছরে অন্ধ্র প্রদেশে প্রায় ৫.২০ লক্ষ পড়ুয়া দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা দেবে।

আরও পড়ুন: সময় বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট, উচ্চ মাধ্যমিক ফল ঘোষণায় রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশ