
নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে তীব্র ভৎর্সনার মুখে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। ভারতের জমি দখল করে নিয়েছে চিন, এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই শীর্ষ আদালতের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েন কংগ্রেস নেতা। তবে সুপ্রিম কোর্টের তরফে আপাতত ফৌজদারি মানহানির মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে।
চিন ভারতের জমি দখল করে নিয়েছে- ২০২২ সালে ভারত জোড়ো যাত্রার সময় এই মন্তব্যই করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই মানহানি মামলার শুনানি হচ্ছিল শীর্ষ আদালতে। বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি এজি মাসিহের বেঞ্চে রাহুল গান্ধীর আবেদনের শুনানি চলছিল।
এ দিন বলেন, “আপনি কী করে জানলেন ভারতের ২০০০ কিলোমিটার জমি চিন দখল করে নিয়েছে? যদি আপনি সত্যি ভারতীয় হতেন, তবে এই ধরনের কথা বলতেন না!”
অভিষেক মনু সিংভি বলেন, “আসল ভারতীয় এটাও বলেন যে ২০ জন ভারতীয় সেনা চিনের হাতে নিহত হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগের”। এর জবাবে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুই দিকেই হতাহতের ঘটনা কি অস্বাভাবিক?”
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত প্রশ্ন করেন যে রাহুল গান্ধী কী করে জানলেন ভারতের জমি দখল করে নিয়েছে চিন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আপনি কি ওখানে ছিলেন? আপনার কাছে কি বিশ্বাসযোগ্য কোনও তথ্য রয়েছে? বিরোধী দলনেতা হয়ে আপনি কীভাবে এই কথা বলতে পারেন? সংসদে এই ধরনের প্রশ্ন তোলেন না কেন?”
রাহুল গান্ধীর হয়ে মামলা লড়ছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি পাল্টা বলেন, “যদি উনি এই কথাগুলি না বলতে পারেন, তাহলে তিনি বিরোধী দলনেতা কীভাবে হবেন?”। এর প্রত্যুত্তরে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত বলেন, “তাহলে এই কথাগুলি সংসদে কেন বলেন না?”
প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের হয়। তিনি বলেছিলেন যে অরুণাচল প্রদেশে ভারতীয় সেনা চিনের লাল ফৌজের কাছে মার খেয়েছে। গালওয়ানে সংঘর্ষের পর ভারতের ২০০০ কিলোমিটার জমি দখল করে নিয়েছে চিন। নরেন্দ্র মোদী সরকার আত্মসমর্পণ করেছেন।
তাঁর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই মানহানি মামলা হয় এলাহাবাদ হাইকোর্টে। মামলাকারী উদয় শঙ্কর শ্রীবাস্তব অভিযোগ করেছিলেন যে রাহুল গান্ধী চিনের সঙ্গে সংঘাত নিয়ে ভারতীয় সেনা সম্পর্কে এই ধরনের একাধিক অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের তরফে রাহুল গান্ধীর আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছিল। বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী ওই মামলার পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন যে বাক স্বাধীনতা সেনার অবমাননাকর মন্তব্য় করার অধিকার দেয় না। এলাহাবাদ হাইকোর্ট গত ২৯ মে রাহুল গান্ধীর আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট আবেদন করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। এ দিন সুপ্রিম কোর্ট নোটিস জারি করে।