নয়া দিল্লি: সুপ্রিম কোর্টে অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যের। সোমবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ সেপ্টেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী সংক্রান্ত মামলায় যে রায় দিয়েছিল, তাতে সুপ্রিম কোর্ট কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। ফলে এতে একদিকে যেমন শুভেন্দু অধিকারীর স্বস্তি বাড়ল, মুখ ম্লান রাজ্য সরকারের। শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে ওঠা মামলা হাইকোর্টেই ফেরাল সুপ্রিম আদালত।
গত সেপ্টেম্বরে শুভেন্দু অধিকারীর প্রাক্তন দেহরক্ষীর মৃত্যু সংক্রান্ত মামলা-সহ একাধিক মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গলবেঞ্চ। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না। অর্থাৎ তাঁকে কোনওভাবেই গ্রেফতার করা যাবে না।
সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করে রাজ্য। গত নভেম্বরে সেই মামলার রায়ে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকেই বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য।
বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এএস বোপান্নার বেঞ্চে এই শুনানি ছিল সোমবার। মূলত তিনটি মামলা ছিল শুনানির বিষয়। একটি শুভেন্দুর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষীর রহস্যমৃত্যু। বাকি দু’টি নন্দীগ্রাম ও তমলুকের ঘটনা। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে এখনই তারা কোনও রকম হস্তক্ষেপ করবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দেহরক্ষী শুভব্রত চক্রবর্তীর। সেই মামলার প্রায় তিন বছর পর গত জুলাই মাসে তদন্তের দাবি তুলে এফআইআর দায়ের করেন শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রী সুপর্ণা কাঞ্জিলাল চক্রবর্তী। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? সেই প্রশ্ন তুলে, সঠিক তদন্তের দাবিতে এফআইআর করেন নিহত দেহরক্ষীর স্ত্রী। অ্যাম্বুলেন্স পেতে অনেক দেরি হওয়ায় কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় শুভব্রতর। এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর স্ত্রী। তাঁর সন্দেহ, ইচ্ছাকৃতভাবে অ্যাম্বুলেন্স সেদিন দেরিতে এসেছিল? এফআইআর-এর বয়ানে সেই প্রশ্নই তোলেন সুপর্ণা। জুলাই মাস থেকেই মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডি।
The Supreme Court on Monday refused to interfere with the September order of a Single Bench of the High Court staying criminal proceedings initiated against BJP MLA and Leader of the Opposition in West Bengal Assembly Suvendu Adhikari.
Read more: https://t.co/veaHg6VGgg pic.twitter.com/EJeTAxtBIY— Live Law (@LiveLawIndia) December 13, 2021
শুভেন্দু অধিকারী প্রথম থেকেই দাবি করে এসেছেন, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর মুকুল রায়ের বিরুদ্ধেও একের পর এক মামলার জাল বুনেছিল রাজ্য সরকার। একই ভাবে এখন তাঁর বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা সাজানো হচ্ছে। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে তাঁকে। ত্রিপল চুরি, সেচ দফতরে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি-সহ তাঁর প্রাক্তন ব্যক্তিগত রক্ষীর আত্মহত্যার মামলার মতো একাধিক মামলা চলছে শুভেন্দুর নামে। এই সমস্ত মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই দাবি শুভেন্দুর।
আরও পড়ুন: KMC Election 2021: ভোট প্রচারে ‘রেড ভলান্টিয়ার’! হঠাৎই বাজল ফোন, ‘হাসপাতালে বেড পাচ্ছি না দাদা’…