KMC Election 2021: ভোট প্রচারে ‘রেড ভলান্টিয়ার’! হঠাৎই বাজল ফোন, ‘হাসপাতালে বেড পাচ্ছি না দাদা’…

Kolkata municipal election 2021: ২০১০ সালের পালাবদলের হাওয়ায় এই ওয়ার্ডটি হাতছাড়া হয় বামেদের। এরপর গত ১০ বছর ধরে তৃণমূলেরই রাজত্ব।

KMC Election 2021: ভোট প্রচারে 'রেড ভলান্টিয়ার'! হঠাৎই বাজল ফোন, 'হাসপাতালে বেড পাচ্ছি না দাদা'...
কাউন্সিলর পদপ্রার্থী যখন রেড ভলান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 13, 2021 | 8:31 PM

কলকাতা: একুশের কোভিডে শ্বাসকষ্ট সমস্যা বাড়িয়েছিল। ওষুধের সঙ্গে প্রয়োজন পড়েছিল অক্সিজেন সিলিন্ডারের। দরকার পড়েছিল হাসপাতালে বেডের। সেই সময় হঠাৎই এগিয়ে এল একদল ছেলেমেয়ে। শহর কলকাতা থেকে তামাম বাংলা যাদের চিনেছিল ‘রেড ভলান্টিয়ার’ হিসাবে। সেখানেই নাম ছিল প্রসেনজিৎ ঘোষ নামে বেহালার এক যুবকের। সেই প্রসেনজিৎই এবার কলকাতা পুরভোটের ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম প্রার্থী।

কাউন্সিলর হওয়ার ভোটে লড়ছেন প্রসেনজিৎ ঘোষ। চুটিয়ে ভোট প্রচার করছেন এলাকায়। তবে ভোট প্রচারের ফাঁকেও এদিক ওদিক থেকে মাঝেমধ্যেই আসছে ফোন। কেউ বলছেন, ‘দাদা একটা বেডের ব্যবস্থা করে দিন না।’। কারও আবার কাতর আবেদন, ‘রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়া যাবে?’। যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন প্রসেনজিৎও।

কলকাতা পুরভোটে ১২৩ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএমের তরুণ মুখ প্রসেনজিৎ। এখন কোভিডের আগ্রাসন কমলেও রেড ভলান্টিয়ার হিসাবে যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন, তা থেকে তো দূরে থাকা সম্ভব নয়। নিজেই বলছিলেন লাল ব্রিগেডের এই মুখ। প্রসেনজিতের কথায়, এটা সারা বছরের কাজ। ভোট আসবে, ভোট যাবে। কিন্তু মানুষের সুখ-দুঃখে, সুবিধা-অসুবিধায় থাকতেই হবে। তাই তো প্রচার থামিয়ে অসুস্থ মানুষের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে যাচ্ছেন প্রসেনজিৎ।

ভোটে দাঁড়িয়েছেন, তাই মানুষের কাছে ভোট চাইতে যেতে হচ্ছে। কিন্তু তার মাঝেও সব ফোনই ধরার চেষ্টা করছেন প্রসেনজিৎ। আর শান্ত গলায় অপর প্রান্তের মানুষের সাহায্যের জন্য আশ্বাস দিচ্ছেন সিপিএমের যুব সংগঠনের নেতা। প্রসেনজিৎ ঘোষ বলছেন, “আমরা মানুষের পাশে থেকেছি। ভরসা যুগিয়েছি। মানুষের স্মৃতি দুর্বল নয়, তাই ইভিএমে মানুষ আমাদের প্রতীকটা ভুল করবেন না।” যথাযথ বোতাম টিপে ওয়ার্ডের মানুষ পাশে থাকার প্রতিদান দেবেন আশা লাল উত্তরীয়কে সর্বক্ষণের সঙ্গী করা প্রসেনজিতের।

২০১০ সালের পালাবদলের হাওয়ায় এই ওয়ার্ডটি হাতছাড়া হয় বামেদের। এরপর গত ১০ বছর ধরে তৃণমূলেরই রাজত্ব। সুদীপ পোল্লের এলাকায় বেশ পরিচিতি। কাউন্সিলর থেকেছেন প্রথমে। বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর হিসাবে কাজ করেছেন সুদীপ। এবারও ঘাসফুলের মুখ তিনিই।

গতবারের পুরভোটে সুদীপ পেয়েছিলেন ৯২২৫ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাম প্রার্থী উৎপল চট্টোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৮৬৭৮ ভোট। বিজেপি প্রার্থী সুদীপ কুমার মাইতি এখান থেকে পেয়েছিলেন ৩৫৯০ ভোট। আর কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৩১ ভোট।

যদিও প্রসেনজিৎ ঘোষের দাবি, ক্ষমতায় যে-ই থাক না কেন, মানুষের দরজায় দরজায় ঘুরে সিপিএম যেভাবে প্রচার করছে তার ফল তাঁরা ঘরে তুলবেনই। একইসঙ্গে এই ওয়ার্ডে বিজেপিকে গুরুত্বই দিতে চাননি তিনি। হাতে গোনা গেরুয়া পতাকা পাওয়াও মুশকিল বলেই দাবি সিপিএম প্রার্থীর। তাই জয় নিয়ে বেশ আশাবাদী, বলেই এগোলেন প্রচারের পথে। হঠাৎ বেজে উঠল ফোন। বর্ধমান থেকে একজন ফোন করেছিলেন। তাঁর রোগী কলকাতার চিত্তরঞ্জনে হাসপাতালে ভর্তি হবেন। বেড পাচ্ছেন না। আবারও ছাত্র রাজনীতি করা প্রসেনজিৎ, ভোটের ময়দানে লড়তে নামা প্রসেনজিৎ হয়ে গেলেন ‘রেড ভলান্টিয়ার’।

আরও পড়ুন: রাজ্যে কিছুটা কমল দৈনিক সংক্রমণ, তবে একদিনে করোনার বলি ১০