নয়া দিল্লি: লখিমপুর খেরি কাণ্ডে (Lakhimpur Kheri Case) প্রধান অভিযুক্ত আশীষ মিশ্র(Asish Mishra)-র জামিন নিয়ে প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। উত্তর প্রদেশ সরকার(Uttar Pradesh Government)-কে এই মামলায় জবাব দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতিই এলাহাবাদ আদালত আশীষ মিশ্রকে জামিন দেওয়া হয়। এদিন সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই দায়ের হওয়া একটি পিটিশনের শুনানিতে এক সাক্ষীর উপরে হামলার অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা চাওয়া হয় শীর্ষ আদালতের তরফে। একইসঙ্গে লখিমপুর মামলায় যারা সাক্ষী, তাদের সুরক্ষা দেওয়ার কথাও বলা হয়। আগামী ২৪ মার্চ এই মামলার শুনানি হবে।
এদিনের মামলার শুনানির শুরুতেই এক আবেদনকারী সুপ্রিম কোর্টে জানান, গত ১২ মার্চ লখিমপুর মামলার এক সাক্ষীর উপরে হামলা চালানো হয়েছে। এরপরই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীনে সুপ্রিম কোর্টের তরফে উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে এই হামলার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সাক্ষীদের যাতে সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়, সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়। আবেদনকারীর অভিযোগ শুনেই উত্তর প্রদেশ স্টেট কাউন্সিলের উদ্দেশে শীর্ষ আদালতের তরফে বলা হয়, “এটা কী? গত ১২ মার্চ এক সাক্ষীর উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। আপনাদের এই বিষয়ে বিস্তারিত হলফনামা জমা দিতে হবে।”
একইসঙ্গে, আশীষ মিশ্রের জামিন বাতিল করার বিষয়েও আলাদাভাবে একটি নোটিস দেওয়া হয়েছে। জামিন বাতিলের আর্জির সমর্থনে প্রবীণ আইনজীবী দুশ্যন্ত দাভে বলেন, “হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভুল করেছে। সুপ্রিম কোর্টের তরফেই যে এই মামলাটি স্বতঃপ্রণোদিতভাবে গ্রহণ করা হয়েছিল এবং বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেই বিষয়টি সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছে হাইকোর্ট। কেবলমাত্র এফআইআর দেখেই হাইকোর্ট জানিয়েছে যে বুলেটের আঘাত ছিল, যেখানে আসলে কোনও বুলেটের আঘাতই ছিল না।” উল্লেখ্য, লখিমপুর খেরির ওই ঘটনায় মৃত এক কৃষকের আত্মীয়ই আশীষ মিশ্রের জামিনের রায় বাতিল করার দাবিতে পিটিশন দাখিল করেন।
গত বছরের ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র তেনী ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যের বিরুদ্ধে পথ আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল কৃষকরা। সেই সময়ই একটি কালো এসইউভি গাড়ি এসে কৃষকদের ধাক্কা মারে। গাড়ি চাপা পড়ে চারজন কৃষকের মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, মন্ত্রীপুত্র আশীষ মিশ্রই ওই গাড়িতে ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এক সাংবাদিক সহ আরও চারজনের মৃত্যু হয়।
লখিমপুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে উত্তেজনা ছড়াতেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করা হয় এবং বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। গত বছরই সিটের রিপোর্টে জানানো হয়, দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই গাড়ি চাপা দিয়ে মারা হয়েছিল কৃষকদের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্ট জামিন দেয় আশীষ মিশ্রকে।