নয়া দিল্লি: ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনের আদৌই বৈধতা রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। আজ এই মর্মে উত্তর প্রদেশ (Uttar Pradesh) ও উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) সরকারকে নোটিস পাঠাল শীর্ষ আদালত। ‘বিতর্কিত’ এই আইন কার্যকর হওয়ার পরই এর বৌধত্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদনে বলা হয়, জোর করে ধর্মান্তর বিরোধী এই আইন সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে বিঘ্নিত করে এবং ধর্মনিরপেক্ষতা, সমতার বদলে বৈষম্যের বার্তা দিচ্ছে।
গত বছরের ২৮ নভেম্বর উত্তর প্রদেশে ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন (Anti Conversion Act) কার্যকর করা হয়। একমাসের মধ্যেই ৫১জনকে এই আইনের অধীনে গ্রেফতার করে পুলিস। উত্তর প্রদেশের দেখাদেখি মধ্য প্রদেশ (Madhya Pradesh), হরিয়ানা (Haryana) ও হিমাচল প্রদেশ (Himachal Pradesh)-ও এই আইন চালু করতে উদ্যোগী হয়। ইতিমধ্যেই মধ্য প্রদেশের মন্ত্রীসভায় এই বিল পাশ হয়ে গিয়েছে।
তবে উত্তর প্রদেশে এই আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকেই একাধিক আদালতে আইনের বৈধতা ও আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে পিটিশন জমা পড়ে। প্রাথমিকভাবে সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে নারাজ ছিল। আদালতের তরফে আবেদনকারীদের হাইকোর্টগুলিতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে (SA Bobde) বলেন, “এলাহাবাদ ও উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টে এই বিষয়ে আবেদন দাখিল করা হয়েছে এবং শুনানি বাকি রয়েছে। আপনারা সেখানে যাচ্ছেন না কেন?”
আরও পড়ুন: গণধর্ষণের পর যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে, পাঁজর ভেঙে খুন, স্মৃতি উসকে দিল নির্ভয়াকাণ্ডের
এর জবাবে আবেদনকারীদের তরফে হাজির প্রতিনিধি কাউন্সিল সিইউ সিং (CU Singh) বলেন, “একাধিক রাজ্য এই আইন পাশ করতে চলেছে। সুতরাং এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টেরই পর্যবেক্ষণ করা উচিত।” মধ্য প্রদেশের খসড়া আইনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১০ বছরের সাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং প্রমাণের বোঝাও অভিযুক্তের উপরই চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আিনের বেশ কিছু ধরা যেমন ভয়াবহ, তেমনই বিয়ের আগে সম্মতির জন্য আবেদন করার বিষয়টি ঘৃণ্য একটি বিষয়।”
আরেকটি পিটিশনে জানানো হয়, বিভিন্ন হাইকোর্টে ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনের বিরুদ্ধে দাখিল হওয়া অভিযোগগুলি সুপ্রিম কোর্টের নিজের হাতে তুলে নেওয়া উচিত। আবেদনে আরও বলা হয়, জদর্মান্তকরণ বিরোধী আইন সমাজে বিভাজনের সৃষ্টি করে এবং সাধারণ মানুষের মনে ইসলাম ধর্মাবল্মবীদের প্রতি সন্দেহের উদ্রেক করে। ধর্মীয় সম্প্রীতিতে আঘাত হানছে এই আইন।
আবেদনকারীদের সমস্ত আর্জি শুনে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, “আমরা এই বিষয়ে দুই রাজ্যকেই নোটিস পাঠাচ্ছি। চার সপ্তাহ বাদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আদালতে তোলা হবে।”
আরও পড়ুন: লালফৌজের উস্কানিমূলক আচরণের যোগ্য জবাব দেওয়া হয়েছে, দাবি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বার্ষিক রিপোর্টে