নয়া দিল্লি: ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ তুলে সোমবারই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হবে। আগেই সুপ্রিম কোর্ট ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, কোনও রাজনৈতিক দল যেন ভোট প্রচারে নেমে বাধার মুখে না পড়ে। শান্তিপূর্ণ ভাবে যেন প্রচার পর্ব চলে।
তৃণমূলের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে অমান্য করে তাদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করেছে বিজেপির লোকজন। এমনকী মিথ্যা ফাঁসিয়ে তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে থানায় পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। পাশাপাশি থানায় পুলিশের সামনেই তৃণমূলের লোকজনের উপর হামলা চলে বলেও অভিযোগ তোলে ঘাসফুল শিবির।
সোমবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি রওনা হওয়ার আগে বলেন, বিজেপি এতটাই উগ্র হয়ে উঠেছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পর্যন্ত তারা মানছে না বলে অভিযোগ মমতার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা সবসময় আদালতের নির্দেশকে সম্মান করি। কিন্তু ত্রিপুরায় দেখছি সে নির্দেশও মানা হচ্ছে না। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত তা মানছেন না। আমি সর্বোচ্চ বিচারদাতার কাছে অনুরোধ করব তাঁদের নির্দেশ যখন অমান্য করা হচ্ছে তাঁরাও যেন আইন মেনে ব্যবস্থা নেন।”
এরই মধ্যে সোমবার আদালত অবমাননার অভিযোগ নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। সোমবার অ্যাডভোকেট অমর দাভে তৃণমূলের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানান, এর আগে ত্রিপুরার নির্বাচন সংক্রান্ত একটি মামলা করা হয়েছিল। এরপর প্রার্থীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে শুরু করেছে। গত দু’দিনের ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ফের নতুন করে মামলা করা হল বলে জানান তিনি। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে গৃহীত হয় সেই মামলা।
এর আগে শীর্ষ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ সুস্মিতা দেব অভিযোগ জানিয়েছিলেন, ত্রিপুরায় রাজনৈতিক প্রচারে তৃণমূলকে বার বার বাধা দেওয়া হচ্ছে। হিংসার শিকার হচ্ছেন দলীয় নেতা-নেত্রীরা। তৃণমূলের কার্যালয়, গাড়ি, ভাঙচুর এবং ভোটপ্রচারের সামগ্রীও নষ্ট করা হচ্ছে বলে দাবি করা হয়।
বিপ্লব দেবের রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে এক জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনেরও আর্জি জানিয়েছিলেন সুস্মিতা। পরে প্রার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ত্রিপুরা সরকারকে নোটিস দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরও বারবার প্রার্থীদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ তোলে তৃণমূল।
কিন্তু সেই সমস্ত বিতর্কে ঘি ঢালে রবিবার সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি। আগরতলা পূর্ব মহিলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সায়নীকে। সোমবারই ত্রিপুরা পৌঁছন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিকেলে জামিনও পান সায়নী। জামিন পাওয়ার পর সায়নী ঘোষ বলেন, “ত্রিপুরায় অপশাসন চলছে। মানুষ দেখছে, মানুষ বিচার করবে। পুলিশ, সিআরপিএফ দিয়ে টার্গেট করা হচ্ছে।” এই সমস্ত বিষয় মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে উত্থাপিত হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Firhad Hakim: হাত উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি ‘৫ মিনিট লাগবে…’, এবার ফিরহাদের বিরুদ্ধে মামলা বিপ্লব গড়ে