চেন্নাই: দক্ষিণের মানুষদের ‘আম্মা’ ছিলেন তিনি। অভিনেত্রী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, জয়ললিতার (J Jayalalithaa) উত্থান সিনেমার গল্পের মতোই। গোটা জীবনটাই খোলা বইয়ের পাতা হলেও, শেষ অধ্যায় নিয়ে রয়ে গিয়েছে কিছু ধোঁয়াশা। ২০১৬ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার হঠাৎ অসুস্থতা ও তারপর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই। পরিবার ও অনুগামীদের চাপেই জয়প্রিয় নেত্রীর মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তৈরি করা হয়েছিল তদন্তকারী কমিটি। অবশেষে সাড়ে চার বছর পর সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দিতে চলেছে। মঙ্গলবারই তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস জয়ললিতার মৃত্যুর তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানানো হয়।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে চার বছর আগে রাজ্য সরকারের তরফে যে তদন্তকারী কমিটি গঠন করা হয়েছিল, তারা জয়ললিতার মৃত্যু ঘিরে ওঠা যাবতীয় প্রশ্নগুলি তদন্ত করে দেখেছে। সরকারিভাবে তদন্ত শেষ হয়েছে। আগামী এক-দু’মাসের মধ্যেই সরকারের তৈরি প্যানেলের কাছে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবারই এআইএডিএমকের প্রাক্তন মুখপাত্র ভি পুগাজ়েনথি প্যানেলের সামনে হাজির হন এবং নতুন একটি দাবি জমা দেন। সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে পালানিস্বামীর বিরুদ্ধেও তদন্তের আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তবে কমিশনের তরফে এই দাবি সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। উল্লেখ্য, গত বছরই পুগাজ়েনথিকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
জানা গিয়েছে, তদন্তকারী ওই কমিশনের কাছে ১৫৯ জনের বয়ান জমা পড়েছে। এর মধ্যে এআইএডিএমকে নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী ও পনিরসেলভম, সি বিজয় ভাস্কর, এম থাম্বি, সি পন্নাইয়ান, মনোজ পান্ডিয়ান, জয়ললিতার ভাগ্নে দীপক ও ভাগ্নি দীপাও রয়েছেন। ২০১৬ সালে জয়ললিতার প্রয়াণের পর দীপক ও দীপাই প্রথম মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এদিকে, জয়ললিতার ছায়াসঙ্গী ভিকে শশীকলাও ২০১৮ সালে হলফনামা জমা দিয়েছিলেন, যেখানে জয়ললিতার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও কী কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল সে সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছিল।
২০১৭ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকারের তরফে এই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি অরুমুগাস্বামীর নেতৃত্বে কমিশনটি গঠন করা হয়। সম্প্রতিই অ্য়াপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, জয়ললিতার চিকিৎসার জন্য দিল্লির এইমসের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। এইমসের চিকিৎসকরাও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী কমিশনের কাছে যাবতীয় তথ্য জমা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, আগামী জুন মাস বা তার আগেই রিপোর্ট পেশ করতে পারে তদন্তকারী কমিশন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তামিলনাড়ুর তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাকে। ওই বছরেরই ৫ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়।