চেন্নাই: সপ্তাহজুড়েই একটানা বৃষ্টিতে ভাসছে তামিলনাড়ু (Tamil Nadu)। প্রবল বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার রাতে ও শুক্রবার আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। এই নিয়ে সপ্তাহব্যাপী বৃষ্টিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৭-এ। একটানা বৃষ্টির কারণে থিরুভাল্লুরের পুণ্ডি জলাধার (Poondi Reservoir) থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। রাজ্যজুড়ে একাধিক বাধ (Dam) থেকেই জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। নদীর তীরে বসবাসকারী প্রায় আড়াই লক্ষের বেশি মানুষকে এসএমএসের (SMS Alert) মাধ্যমে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে রাজ্য সরকার।
বিগত পাঁচদিন ধরেই একটানা বৃষ্টি চলছে তামিলনাড়ু জুড়ে। বিশেষত রাজ্য়ের উত্তরের জেলাগুলি যেমন, চেন্নাই, চেঙ্গালপেট, তিরুভাল্লুর, কাঞ্চিপুরম ও ভিল্লুপুরমে একটানা লাগাতার বৃষ্টির কারণে কার্যত বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আজও এই অঞ্চলগুলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ অংশে একটি নিম্নচাপ শক্তি বাড়িয়ে উত্তর-পশ্চিমদিকে এগিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর উত্তর অংশ এবং অন্ধ্র প্রদেশের (Andhra Pradesh) দক্ষিণ উপকূল দিয়ে কাড়াইকাল ও শ্রীহরিকোটার পথ ধরে নিম্নচাপটি স্থলভাগে প্রবেশ করে। ধীরে ধীরে নিম্নচাপটি পুদুচেরীর উত্তর অংশের দিকে এগোচ্ছে বর্তমানে। নিম্নচাপের প্রভাবে তামিলনাড়ুর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়েই মাঝরি থেকে ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বিকেল থেকেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেই জানানো হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকেই কন্যাকুমারী, ভেলোর, রানিপেট, তিরুপাত্তুর, ধর্মাপুরী, কারুর, সালেম, কোয়েম্বাটোর, পেরামবালুর, তিরুচিরাপল্লী, মাদুরাই, নীলগিরি, থেনি, থেনকাশী সহ একাধিক এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে ধস নেমেছে একাধিক পার্বত্য এলাকায়। ধস ও জমা জলের কারণে ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বাগেরকইল ও তিরুবনন্তপুরমের মধ্যে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে. একটানা বৃষ্টিতে এখনও অবধি ১৭ জনের মৃত্যু খবর মিলেছে। ভারী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কমপক্ষে এক হাজার কুড়েঘর ও কাঁচা বাড়ি। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী পাঁচদিন ধরেও তামিলনাড়ু, কড়াইকানাল, পুদুচেরী ও কর্নাটকের অভ্যন্তরীণ অংশগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাত চলার সম্ভাবনা রয়েছে। কন্যাকুমারী ও তিরুনেলিভেলিতে আজ থেকেই বজ্রবিদ্যুৎ সহ অতি ভারী বৃ্ষ্টিপাত শুরু হয়েছে, যা আগামিকালও জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
রাজ্যজুড়ে একটানা ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে একাধিক জায়গাতেই জমেছে জল। প্রশাসনের তরফে দ্রুত জল বের করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও, যেহেতু আগামী দুই দিনও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, সেই কারণে আপাতত রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকার অনুরোধই জানিয়েছেন রাজ্যের ডিজিপি।
তামিলনাড়ুর পাশাপাশি কেরলের ছয়টি জেলাতেও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে তিরুবনন্তপুরম, কোল্লাম, পাথানিমিত্তা, কোট্টায়াম ও ইদ্দুকি জেলায়।
আরও পড়ুন: Mahua Moitra: লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন, গোয়া জয়ে তৃণমূলের বাজি মহুয়া মৈত্র