Beggary Economy: ভারতের ভিখারিরা ‘গরিব’ নন! কত টাকা লেনদেন হয়, জানেন
Begging: আবেদনেই জানা গিয়েছে, ট্র্যাফিক সিগন্যালগুলিতে ভিক্ষার বরাত নিয়ে টেন্ডারের ধাঁচে দর ঠিক হয়। যিনি বরাত পান, তিনিই লোক নিজের লোককে ভিক্ষা করতে পাঠান। মুম্বইতে তিনটি, দিল্লিতে তিনটি, আহমেদাবাদে দুটি ও কলকাতায় একটি - সব মিলিয়ে ১২টি এলাকার উল্লেখ করা হয়েছে।
কলকাতা: ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়ালেই গাড়ির কাচে টোকা, বাসে কিংবা পথেঘাটেও হঠাৎ করেই কানে আসে এই ডাক- “ও বাবু, কিছু একটু দিন…”। ভিক্ষা (Begging) করেই দিন গুজরান করেন বহু মানুষ। আপনার-আমার মনে হতেই পারে যে ভিক্ষা করে কত টাকাই বা আয় হয়? আপনার চোখ কপালে উঠবে যদি ভিক্ষুকদের মাসিক আয়ের পরিমাণ জানেন। কর্পোরেট সংস্থায় কর্মরত যারা, তাদের থেকে দ্বিগুণ আয় করে ভিক্ষুকরা। মাসে ৫ লক্ষ টাকা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা অবধি উপার্জন তাদের। এমনকী, বিশ্বের সবথেকে ধনী ভিক্ষুকেরও বাস ভারতেই।
দেশে ভিক্ষুকের সংখ্যাটা নেহাত কম নয়, কয়েক লাখ হতে পারে। কিন্তু এই ভিক্ষাবৃত্তি নিয়েই আবার অনেকের আপত্তি। ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আর্জি জানানো হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে এই মামলা থেকেই দেশে ভিক্ষাবৃত্তি ও ভিক্ষুকদের নিয়ে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
সম্প্রতিই ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করার আবেদন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, কিছু উঁচু শ্রেণির ‘এলিটিস্ট মনোবৃত্তি’র মানুষ ভিক্ষাবৃত্তিকে নিষিদ্ধ করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। যেন তাঁদের জীবনে এটা ছাড়া আর অন্য কোনও কাজ নেই। ২০২১ সালেও এই ধরনের একটি আবেদনে একই নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি এম আর শাহের ডিভিশন বেঞ্চ। এবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে এই সংক্রান্ত মামলায় রায়ের পরও কেন শীর্ষ আদালতে ফের একই ধরনের আবেদন করা হল, তার জবাব দিতে হবে মামলাকারীকে।
তবে দারুণ কিছু তথ্য দিয়েছেন মামলাকারী। মামলাকারীর তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সবচেয়ে ধনী ২৫ জন ভিখারি রয়েছেন,তাদের আয় নাকি মাসে ৫ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা। ভিক্ষাবৃত্তিকে ঘিরে এক বিরাট অর্থনীতিও গড়ে উঠেছে, সেই অর্থনীতির বহর নাকি ১ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
ওই মামলাকারীর আবেদনেই জানা গিয়েছে, ট্র্যাফিক সিগন্যালগুলিতে ভিক্ষার বরাত নিয়ে টেন্ডারের ধাঁচে দর ঠিক হয়। যিনি বরাত পান, তিনিই লোক নিজের লোককে ভিক্ষা করতে পাঠান। মুম্বইতে তিনটি, দিল্লিতে তিনটি, আহমেদাবাদে দুটি ও কলকাতায় একটি – সব মিলিয়ে ১২টি এলাকার উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাকারীর দাবি, এখানে ভিক্ষা করার বরাত পেতে নজরানার পরিমাণ বছর ৫০ লাখ থেকে ১০ কোটি টাকা।
জানা গিয়েছে, এই ভিক্ষা অর্থনীতির টাকার একটা অংশ নাকি মাদক ও অস্ত্র ব্যবসাতেও লাগানো হচ্ছে। যাঁরা এই ভিক্ষার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের আঙুলি হেলনেই যাবতীয় কিছু নিয়ন্ত্রিত হয়। ভিক্ষার আড়ালে দেহব্যবসা, যৌন নিগ্রহ, শিশু নির্যাতন ও শিশু পাচার চক্র চালানোর দৃষ্টান্তও মামলার আবেদনে তুলে ধরেছিলেন মামলাকারীরা। সুপ্রিম কোর্টের আবেদনে দাবি করা হয়েছে, গত ৫ বছরে ভিক্ষাবৃত্তির নামে দেশ জুড়ে কয়েক হাজারেরও বেশি কন্যাসন্তান উধাও হয়ে গিয়েছে। ছোট ছোট ছেলেদের উপরও যৌন নির্যাতন হচ্ছে।