নয়া দিল্লি: করোনা যেভাবে বিশ্বের প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল করোনা(COVID-19), ঠিক তেমনভাবেই ওমিক্রনও (Omicron Variant) ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়বে, এমনটাই মত সরকারের এক বিশেষজ্ঞ কর্তার (Government Expert)। তাঁর মতে, বুস্টার ভ্যাকসিন (Booster Vaccine) ডোজ়ও ওমিক্রনকে আটকাতে পারবে না। টিকা নেওয়া থাকলেও সংক্রমিত হবেই সাধারণ মানুষ।
আইসিএমআর(ICMR)-র ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট এন এপিডেমিওলজিস্টের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইসরি কমিটির চেয়ারম্যান ডঃ জয়প্রকাশ মুলীয়ীল বলেন, “করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট প্রায় অদমনীয়। সকলেই এই ভ্যা্রিয়েন্টে আক্রান্ত হবেন। বুস্টার ভ্যাকসিনও এই সংক্রমণ আটকাতে পারবে না। সকলেই সংক্রমিত হবেন। গোটা বিশ্বজুড়েই তাই হচ্ছে, সেখানেও সংক্রমণ রুখতে ব্যর্থ বুস্টার ডোজ়।”
করোনা সংক্রমণ, যা বিগত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে গোটা বিশ্বে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তা নিয়ে আর ভয় নেই বলে জানান সরকারি এপিডেমিওলজিস্ট ডঃ জয়প্রকাশ মুলীয়ীল। তিনি বলেন, “করোনা আর ভয়ঙ্কর কোনও রোগ নয়। কারণ এর নতুন স্ট্রেনে সংক্রমণের গুরুতর আকার ধারণ করার সম্ভাবনা অনেক কম, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যাও অনেক কম।”
ওমিক্রনের সঙ্গে করোনার বাকি ভ্যারিয়েন্টগুলির তুলনা করে তিনি আরও বলেন, “আমরা বেশ অনেকটা আলাদা এক ভাইরাসের সঙ্গে লড়ছি। এটা ডেল্টার তুলনায় অনেক গুণ কম ভয়ানক। এছাড়া এই ভ্য়ারিয়েন্ট কার্যত অদমনীয়। ঠাণ্ডা লাগা বা সর্দি কাশির মতোই উপসর্গ দেখা যাচ্ছে ওমিক্রনের ক্ষেত্রে।”
আইসিএমআরের বিশেষজ্ঞ দাবি করেন, দেহের ভিতরে আপনাআপনি তৈরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আজীবন থেকে যেতে পারে। আর সেই কারণেই বিশ্বের বাকি দেশগুলির মতো ভারত ওতটা প্রভাবিত হয়নি। তিনি জানান, করোনার প্রথম টিকা নেওয়ার আগেই দেশের ৮৫ শতাংশ জনগণের করোনা হয়েছিল। ফলে প্রথম ডোজ় আসলে বুস্টার ডোজ় হিসাবেই কাজ করেছে। চিকিৎসক মহল বা কোনও স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ কমিটির তরফেই বুস্টার ডোজ়ের সুপারিশ দেওয়া হয়নি, এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংক্রমণের বৃদ্ধি ও অভিযোজনকে কোনও বুস্টার ভ্যাকসিন রুখতে পারবে না।”
উপসর্গহীনদের করোনা পরীক্ষা করা নিয়েও ভিন্ন মত রাখেন ডঃ জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, “শরীরে ভাইরাস প্রবেশের দু’দিনের মধ্যেই ভাইরাস দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাই করোনা পরীক্ষায় সংক্রমণ ধরা পড়ার আগেই, উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিয়েছে। তাই পরীক্ষা করানোও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা অনেকটা পিছিয়ে থাকব। তবে এই মহামারির বিবর্তনে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না।”
বুস্টার ডোজ়ের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই, এই মত পোষণ করেই ডঃ জয়প্রকাশ বলেন, “সরকারি কোনও প্রতিষ্ঠান বা বিশেষজ্ঞদের তরফে বুস্টার ডোজ় সুপারিশ করা হয়নি। আমার ধারণা অনুযায়ী, প্রিকশন ডোজ় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, তা বাধ্যতামূলক নয়। কারণ বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, বহু মানুষ, বিশেষত ষাটোর্ধ্বরা করোনার দুটি টিকা নেওয়ার পরও, তাদের শরীরে কোনও প্রভাব পড়েনি। আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই বুঝতে পারব না আমরা কখন আক্রান্ত হব। প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ তাদের করোনা সংক্রমিত হওয়ার কথা জানতেও পারবেন না।”