কলকাতা: সোমবার ফের ত্রিপুরা (Tripura) যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এদিকে সফরের ২৪ ঘণ্টা আগে ফের শুরু হয়েছে গন্ডগোল। সায়নী ঘোষকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আগরতলা পূর্ব থানায়। অপর দিকে ত্রিপুরা সফর থেকে ফিরে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করলেন রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। তাঁর কথায়, ‘মার খাব, রক্ত দেব, পরিবর্তন আসবে’।
ফিরহাদ জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ‘ভবিষ্যতের আশা’। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে লড়াই করে বাংলায় পরিবর্তন এনেছেন, সেভাবে অভিষেকের হাত ধরে ত্রিপুরায় পরিবর্তন আসবে। তিনি অভিযোগ করেন বিপ্লব- রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এর পর তাঁর সংযুক্তি, ‘আমরা মার খাবো, রক্ত দেব পরিবর্তন আসবে।’
তিনি যোগ করেন, “ত্রিপুরায় সায়নী ঘোষ কে গ্রেফতারের জন্য পুলিশ হোটেলে গিয়েছিলাম… দুটো রাজ্যকে পাশাপাশি রাখলে বুঝতে পারবেন, এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ শতাংশ গণতন্ত্র দিচ্ছে। বিজেপি নেতারা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারো কোনও অসুবিধা নেই। বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছেন।”
ত্রিপুরায় তাঁকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী। তিনি বলেন, “গতকাল পুলিশের সামনে আমাকে হেনস্তা করা হল। মাইকের তার ছেড়ে দেওয়া হল। লাইটের তার ছেড়ে দেওয়া হল। পুলিশ গেলে পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে দেওয়া হল! উন্মাদের মত নাচছে (বিজেপি)। পশ্চিমবঙ্গে এটা কোথাও দেখতে পাবেন না।” তার পর তিনি আরও যোগ করেন, ‘সব অত্যাচারের শেষ আছে ত্রিপুরাতেও পরিবর্তন আসবে।’
এদিকে রবিবার ফের অশান্ত হয়ে উঠেছে ত্রিপুরা। তৃণমূল নেত্রী সায়নী ঘোষকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হলে শুরু হয় ঝামেলা। অন্যদিকে তৃণমূল নেতা সুবল ভৌমিকের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। কুণাল ঘোষরা অভিযোগ করেছেন, নোটিস ছাড়াই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সায়নীকে।
যদিও তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র নব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, “ওরা চাইছে, ওদের (তৃণমূল) মারুক। তাহলে তারা ত্রিপুরা নিয়ে কথা বলতে পারবে।” ফিরহাদকে উদ্দেশ্য করে তাঁর অভিযোগ, অশান্তিতে ইন্ধন দিয়েছেন তিনি। বলেন, “মন্ত্রী এসে যে কথা বললেন, পাঁচ মিনিটে বিজেপির কার্যকর্তাদের শেষ করে দেবেন! এখানে একটা মারলে পশ্চিমবঙ্গে পাঁচটা লাশ ফেলবেন, এটা কী ধরনের সংস্কৃতি? কী ধরণের গণতন্ত্র? তাহলে পশ্চিমবঙ্গে যে সন্ত্রাস চলছে তা সে রাজ্যের সরকার পরিচালিত? মন্ত্রী নিজেই তো বলছেন!”
তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের অভিযোগ, “পুলিশকে দিয়ে অপকর্ম করছে বিজেপি। সুবলবাবুকে কাজ ছেড়ে থানায় বসে থাকতে হচ্ছে। পুলিশ নোটিস দেখাতে পারছে না। তারা ঠিক করতে পারছে না, কোন সেকশনে নোটিস দেবে।”
এদিকে এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কটাক্ষ, ত্রিপুরার জনসভায় ৫০০ লোক আনতে গেলেও কষ্ট করতে হচ্ছে তৃণমূলকে। ত্রিপুরায় বিজেপির বিরোধী বলে কেউ থাকলে সেটা সিপিএম, তৃণমূল নয়, দাবি তাঁর।