চাকরির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেই ধুন্ধুমার, শিক্ষক-পুলিশ সংঘর্ষে আহত কমপক্ষে ১০০
বাম জমানায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কারণে ত্রিপুরা হাইকোর্ট ১০ হাজার ৩২৩টি পদে শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে দেয়। নতুন চাকরির দাবিতে বিগত ৫২ দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্ণা দিচ্ছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা।
আগরতলা: চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব (Biplab Deb)-র বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাঁধল আন্দোলনকারী শিক্ষকদের। ঘটনায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মিলিয়ে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে ২০০-রও বেশি আন্দোলনকারীকে। আগরতলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
ত্রিপুরা পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল অরিন্দম নাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে যে সংঘর্ষ বাঁধে, তাতে কমপক্ষে ৮৭ জন শিক্ষক ও ১৭ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। ২২৩ জন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য।”
বাম জমানায় শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কারণে ত্রিপুরা হাইকোর্ট ১০ হাজার ৩২৩টি পদে শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করে দেয়। পরে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হলে সেখানেও একই নির্দেশ বহাল রাখা হয়। দুই বছরের সময় দিলেও তারপর মেয়াদ বাড়াতে অস্বীকার করে আদালত।
Tripura: Police used water cannon & teargas to disperse teachers protesting near CM’s residence in Agartala against their termination.
Section 144 of CrPC imposed in Agartala in wake of ongoing agitation of Joint Movement Committee of 10323 (a group of terminated teachers) pic.twitter.com/My2chlgHmX
— ANI (@ANI) January 27, 2021
আরও পড়ুন: সাতসকালেই ভূমিকম্প রাজধানীতে, কেঁপে উঠল পশ্চিম দিল্লি
বিগত ৫২ দিন ধরে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে ধর্ণা দিচ্ছিলেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। তাঁদের দাবি, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল নতুন চাকরির। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে হবে। এদিকে, বুধবার সকালে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব বিধানসভা চত্বরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারপরই আন্দোলনকারীদের হটাতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামানের ব্যবহার শুরু করে। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে বাধা দিতে চাইলে কাঁদানে গ্যাসও ব্যবহার করা হয়। রণক্ষেত্রের রূপ নেয় আন্দোলনস্থল।
পুলিশের দাবি, আন্দোলনকারীরা পুলিশের উপর চড়াও হওয়ায় বাধ্য হয়ে লাঠি চার্জ ও জলকামানের ব্যবহার করতে হয়েছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৮৭ জন শিক্ষক ও ১৭ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। তাঁদের আগরতলা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য।
আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক ডালিয়া দাস বলেন, “চাকরি থেকে বরখাস্ত করা ১০ হাজার ৩২৩ জন শিক্ষকের মধ্যে ৮৪ জন নানা অসুস্থতায় মারা গিয়েছেন ও ৩জন আত্মহত্যা করেছেন চাকরি হারানোর পর। ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি ক্ষমতায় এলে সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা পূরণ করেনি।” যদিও শাসক দলের তরফে অভিযোগ, বিরোধী দল সিপিএমই আন্দোলনকারীদের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির বাইরে ঝামেলা করতে উসকে ছিল।
আরও পড়ুন: ‘আমি করোনার উৎস’, দুই মেয়ের মাথা থেঁতলে খুন গোল্ড মেডালিস্টের