আগরতলা: জামিন পেলেন ত্রিপুরায় ধৃত ১৪ জন তৃণমূল নেতা। মূল মামলায় জামিন পেলেন সুদীপ রাহা, জয়া দত্ত, দেবাংশু ভট্টাচার্যরা। জামিন মঞ্জুর করল ত্রিপুরার খোয়াই আদালত। ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে এই জামিন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জামিন অযোগ্য মামলা খারিজ করে দেন বিচারক। অতিরিক্ত মামলা শুনতে নারাজ তিনি। তবে জামিন পেলেও হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতারা।
রবিবার খোয়াই আদালতে বিচারকের কাছে তৃণমূলের তরফে আইনজীবী আবেদন করেন, জামিন হলেও সমস্ত আইনি কাজকর্ম সেরে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। কিন্তু পথে তৃণমূল নেতারা নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না। মোড়ে মোড়ে বিজেপি নেতারা দাঁড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি করেন তৃণমূল নেতাদের আইনজীবী। বিচারকের কাছে নিরাপত্তার দিকটি খতিয়ে দেখার আবেদন করা হয়।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। এদিন ত্রিপুরায় গিয়েছিলেন তৃণমূলের একদল যুবনেতা। মূলত যোগদান কর্মসূচি ও বেশ কিছু জনসংযোগ কর্মসূচি নিয়েই এই ত্রিপুরা সফর দেবাংশু, জয়াদের। সঙ্গে ছিলেন ত্রিপুরার তৃণমূল নেতা আশিসলাল সিং। অভিযোগ, আগরতলা থেকে আমবাসা যাওয়ার পথে তৃণমূলের এই নেতাদের গাড়িতে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। তৃণমূলের অভিযোগ বিজেপির লোকজন এই হামলা চালায়। প্রতিরোধের ডাক দিয়ে পাল্টা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন তৃণমূল নেতারাও।
The GOONS of @BJP4Tripura have shown their TRUE COLOURS!
This barbaric attack on Trinamool workers reveals the ‘GOONDA RAJ’ in #Tripura under @BjpBiplab‘s Govt.!
Your threats and attacks only prove your inhumanity.
DO WHAT YOU CAN.. Trinamool will not budge an INCH! pic.twitter.com/9K6ZPECrNq— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) August 7, 2021
অভিযোগ, এর পরই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। হুড়োহুড়ি, ছোটাছুটি শুরু হয়। ইটের আঘাতে তৃণমূলের সুদীপ রাহার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে বলে ফেসবুক লাইভ করে দাবি করেন তিনি। এরপরই পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তা দিয়ে হোটেলে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় বলে তৃণমূলের দাবি। কিন্তু যে পথে তাঁদের ফেরার কথা ছিল পুলিশ তাঁদের নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে অন্য পথে নিয়ে যান বলে তৃণমূল নেতা দাবি কুণাল ঘোষের।
এরপরই এক পাহাড়ি রাস্তা ধরে তাঁদের নিয়ে যায় পুলিশ। রাত প্রায় ৮টা সাড়ে ৮টা নাগাদ সে পথেও ফের হামলা চলে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। দেবাংশুরা অভিযোগ তোলেন, পুলিশ সব জেনে শুনে তাঁদের বিপদে ফেলছে। এদিকে স্থানীয় খোয়াই থানার পুলিশ তৃণমূলের ১৪ জন নেতাকে খোয়াই পুলিশ লাইনে নিয়ে গিয়ে তোলে। পুলিশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে রাতভর সেখানে প্রতিবাদ জানান তৃণমূল নেতারা।
অভিযোগ, ভোরের দিকে অতিমারি আইন ভাঙার অভিযোগে ১৪ জন তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করে খোয়াই থানার পুলিশ। এর মধ্যে সুদীপ রাহা, দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, আশিসলাল সিংরা ছিলেন। খবর পেয়ে সকালেই বিমানে ত্রিপুরা পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যান ব্রাত্য বসু, দোলা সেন, কুণাল ঘোষও। খোয়াই থানায় রীতিমত অবস্থানে বসেন অভিষেক। দলীয় নেতারা জামিন না পেলে তিনি থানা থেকে নড়বেন না বলে দাবি তোলেন। এসবের মধ্যেই রবিবার ধৃত ১৪ জনকে খোয়াই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। ৫০ হাজার টাকার বন্ডে জামিনও মঞ্জুর হয়।
ত্রিপুরার ঘটনা ও অভিষেকের থানায় অবস্থান প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যেখানে খুশি ধরনা দিতে পারেন, তাতে বিজেপির কিছু যায় আসে না। অভিষেক চাইলে মঙ্গল গ্রহেও ধরনায় বসতে পারেন। তৃণমূল ত্রিপুরার ঘটনাকে জাতীয় স্তরে তুলে আনতে চাইছে। তারা এটা চেষ্টা করতেই পারে। তবে বিজেপি অনেক রক্ত ঝরিয়ে তবেই ত্রিপুরায় সরকারে এসেছে। এত সহজে ত্রিপুরা ছেড়ে যাবে না।” আরও পড়ুন: এবার তালিবানদের মুঠোয় আফগানিস্তানের সরকারি ভবন, কুন্দুজ ক্ষমতা কায়েম সন্ত্রাসীদের