Cheating: ৭০ হাজার মানুষকে ঠকাল এই দুই ভাই, বাজার থেকে তুলেছে ২৬৭৬ কোটি টাকা
Cheating: প্রতারণার জাল বিস্তারে বিনিয়োগকারীদের বলা হয়, তাঁরা যদি অন্যদের এই সংস্থায় বিনিয়োগে উৎসাহী করতে পারেন, তবে নানা পুরস্কার পাবেন। তার মধ্যে ছিল ল্যাপটপ, বাইক, গাড়ি। আবার কোনও বিনিয়োগকারীর আইডির মাধ্যমে কেউ সংস্থায় বিনিয়োগ করলে কমিশনও পাওয়া যেত।

জয়পুর: তাঁদের সংস্থায় বিনিয়োগ করলে ভাল রিটার্ন পাওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, ভারতের প্রথম গ্রিনফিল্ড স্মার্ট সিটিতে জমিও দেওয়া হবে বিনিয়োগকারীদের। এই প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ৭০ হাজার বিনিয়োগকারীকে প্রতারণার অভিযোগ উঠল দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। প্রায় ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি রাজস্থানের শিকার জেলার। অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের নাম সুভাষ বিজারানি ও রণবীর বিজারানি।
কীভাবে বিনিয়োগকারীদের প্রতারণা করেছিলেন দুই ভাই?
পুলিশ জানিয়েছে, নেক্সা এভারগ্রিন নামে একটি সংস্থা খুলেছিলেন অভিযুক্ত দুই ভাই। তাঁরা সাধারণ মানুষকে প্রলোভন দেখান, নেক্সা এভারগ্রিনে বিনিয়োগ করলে অন্য সংস্থার চেয়ে বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে। গুজরাটের ধোলেরা স্মার্ট সিটি এলাকায় প্লটও পাবেন বিনিয়োগকারীরা। ধোলেরা স্মার্ট সিটির বিভিন্ন প্রকল্পের ছবিও বিনিয়োগকারীদের দেখানো হয়।
এখানেই শেষ নয়। প্রতারণার জাল আরও বিস্তারে বিনিয়োগকারীদের বলা হয়, তাঁরা যদি অন্যদের এই সংস্থায় বিনিয়োগে উৎসাহী করতে পারেন, তবে নানা পুরস্কার পাবেন। তার মধ্যে ছিল ল্যাপটপ, বাইক, গাড়ি। আবার কোনও বিনিয়োগকারীর আইডির মাধ্যমে কেউ সংস্থায় বিনিয়োগ করলে কমিশনও পাওয়া যেত। এভাবেই প্রতারণার জাল বিস্তার করে দুই ভাই।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৪ সালে ধোলেরায় প্রথম জমি কেনেন রণবীর। প্রাক্তন সেনাকর্মী সুভাষও ৩০ লক্ষ টাকা দিয়ে সেখানে জমি কেনেন। এরপর দুই ভাই নেক্সা এভারগ্রিন সংস্থা খোলেন। ২০২১ সালে আহমেদাবাদে সংস্থার রেজিস্ট্রেশন করেন। বিনিয়োগকারীদের বলা হত, ধোলেরা স্মার্ট সিটি প্রকল্পের অংশীদার এই সংস্থা। ধোলেরা স্মার্ট সিটিতে সংস্থার ১৩০০ বিঘা জমি রয়েছে। যেখানে বিশ্বমানের শহর গড়ে উঠছে।
ধোলেরা স্মার্ট সিটিতে ফ্ল্যাট, প্লট পাওয়ার আশায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ এই দুই ভাইয়ের সংস্থায় বিনিয়োগ করেন। দেশজুড়ে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ওই সংস্থা ২ হাজার ৬৭৬ কোটি টাকা তোলে। বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করতে একাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছিল। আর তাঁদের বিশাল কমিশন দেওয়া হত। জানা গিয়েছে, কমিশন বাবদ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, বিনিয়োগকারীদের টাকায় দুই ভাই ১৩০০ বিঘা জমি কেনেন। লাক্সারি গাড়ি কেনেন। রাজস্থানে খনি ও হোটেল কেনেন। এছাড়া আহমেদাবাদে ফ্ল্যাট ও গোয়ায় ২৫টি রিসর্ট কেনেন। দুই ভাই নগদ ২৫০ কোটি টাকা নেন। এবং বাকি টাকা ২৭টি ভুয়ো সংস্থায় রাখেন।
৭০ হাজার মানুষকে প্রতারণার পর নিজেদের সব অফিস বন্ধ করে দেন সুভাষ ও রণবীর। গা ঢাকা দেন তাঁরা। তখনই বিনিয়োগকারীদের টনক নড়ে। রাজস্থানের যোধপুরে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্ত শুরু করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট ২৫টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
প্রকৃতপক্ষে ধোলেরা স্মার্ট সিটি প্রকল্প কী?
গুজরাটের আহমেদাবাদ জেলার একটি শহর ধোলেরা। এখানেই কেন্দ্র ও গুজরাট সরকার যৌথভাবে ধোলেরা স্মার্ট সিটি প্রকল্প গড়ে তুলছে। ভারতের প্রথম গ্রিনফিল্ড স্মার্ট সিটি হবে ধোলেরা। এর আয়তন দিল্লির দ্বিগুণ। এখানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কম্পানির অফিস তৈরি হচ্ছে। ২০৪২ সালের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

