নয়া দিল্লি: করোনা সংক্রমণ (COVID-19) ছড়িয়ে পড়া রুখতে অন্যতম হাতিয়ার মাস্ক(Mask)-ই। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেই মাস্ক পরার নিয়ে রয়েছে অনীহা, ছোটদের মাস্ক পরানো তো আরওই সমস্যা। কিন্তু পাঁচ বছরের কম বয়সীদের কী আদৌই মাস্ক পরার প্রয়োজন রয়েছে? নতুন নির্দেশিকায় (New Guidelines) এই সংশয়ই দূর করল কেন্দ্র।
বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য করোনা সংক্রান্ত এক নয়া নির্দেশিকা পেশ করে। সেখানেই একদিকে যেন জানানো হয় যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের করোনা চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল বা মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির প্রয়োজন নেই, তেমনই পাঁচ বছরের কম বয়সীদের মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই বলেও জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৫ বছরের কম বয়সী যারা অর্থাৎ শিশুদের মাস্ক পরার কোনও প্রয়োজন নেই। ৬ থেকে ১১ বছর বয়সীরা মাস্ক পরতে পারে, তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। তারা কতক্ষণ সুরক্ষিতভাবে মাস্ক ব্যবহার করতে পারছে, তার উপর নির্ভর করে এবং অভিভাবকদের নজরদারিতেই এই বয়সীদের মাস্ক পরানো উচিত। ১২ উর্ধ্ব সকলকেই প্রাপ্তবয়স্কদের মতো বাইরে বের হলেই সর্বদা মাস্ক পরা উচিত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রূপ বদলাচ্ছে করোনাও। বর্তমানে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণেই উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। উদ্বেগের কারণ হিসাবে চিহ্নিত এই ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সংক্রমণের চরিত্রে যে পরিবর্তন এসেছে,তা পর্যালোচনা করেই নয়া নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞের দল এই নির্দেশিকা পর্যালোচনা করেছেন বলেও জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, অন্যান্য় দেশের ওমিক্রন সংক্রমণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, ওমিক্রন সংক্রমণে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে সংক্রমণের নতুন ঢেউয়েও পরিবর্তন আসছে, সেই কারণে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। উপসর্গহীন, সামান্য, মাঝারি ও গুরুতর উপসর্গ যুক্ত করোনা রোগীদের জন্য আলাদাভাবে চিকিৎসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা অনুযায়ী, করোনা ভাইরাস একটি ভাইরাল সংক্রমণ এবং করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ বা কমাতে অ্যান্টিমাইক্রোবায়ালদের কোনও ভূমিকা নেই। উপসর্গহীন ও মৃদু উপসর্গযুক্তদের চিকিৎসায় অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মাঝারি থেকে গুরুতর উপসর্গযুক্তদের ক্ষেত্রেও বিশেষ কোনও পরিস্থিতি ছাড়া অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ব্যবহারের প্রয়োজন নেই বলেই জানানো হয়েছে। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ছোটদের করোনা চিকিৎসায় স্টেরয়েড ব্যবহার করা উচিত না, কারণ এটি উপসর্গহীন ও স্বল্প উপসর্গযুক্তদের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। কেবলমাত্র হাসপাতালে ভর্তি ও গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রেই কড়া নজরদারিতে স্টেরয়েড ব্যবহার করা যেতে পারে।
করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরও শিশুদের কীভাবে যত্ন নেওয়া উচিত এবং অভিভাবকরা করোনা আক্রান্ত হলে কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, সে সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়।