নয়া দিল্লি: সিবিআইয়ের ক্ষমতা ও কার্যপদ্ধতি নিয়ে তুঙ্গে তরজা। আদৌই কি স্বাধীনভাবে কাজ করে দেশের সর্ববৃহৎ তদন্তকারী সংস্থা, নাকি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধী দলগুলি দীর্ঘ সময় ধরেই একাধিক বিষয়ে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সম্প্রতিই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এনভি রামন বলেছিলেন, বিগত কয়েক বছরে সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে। রবিবার এরই পাল্টা জবাব দিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু। তিনি বলেন, “সিবিআই আর খাঁচায় বন্দি তোতাপাখি নেই, বরং দেশের শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থা হিসাবে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে।”
রবিবার টুইটে আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু বলেন, “সম্প্রতিই দেশের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি সিবিআইয়ের তদন্ত ও ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বিষয়টি আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে শুনেছি ও চিন্তাভাবনা করেছি। একটা সময় ছিল যখন কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরাই অনেক সময় তদন্তে সমস্যা সৃষ্টি করতেন। তবে সিবিআই আর খাঁচা বন্দি তোতাপাখি নেই। তারা দেশের শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থা হিসাবে যথাযথভাবেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন। আগে তদন্ত করতে গিয়ে কিছু অফিসার যে চ্যালেঞ্জ বা প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছেন, তা এখন আর নেই।”
সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারদের প্রথম কনফারেন্সের মঞ্চে দাঁড়িয়ে কিরণ রিজিজু বলেন, “আমার স্পষ্ট মনে আছে, একটা সময় ছিল যখন সরকারের গদিতে বসা মানুষেরাই তদন্তের বাধা হয়ে দাঁড়াতেন। কিন্তু আজ প্রধানমন্ত্রী নিজেই দুর্নীতি দমনে শীর্ষ ভূমিকা পালন করছেন। যখন ক্ষমতায় থাকা মানুষেরাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন, তখন তদন্তে কী সমস্যা হয়, তা আমি জানি। তদন্তে তাদের সহযোগিতা পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে…সিবিআইয়ের জন্যও তদন্ত করা কঠিন হয়ে ওঠে। বিচার ব্যবস্থা থেকেও অতীতে আমরা বেশ কিছু তিক্ত মন্তব্য শুনেছি, কিন্তু সেই সময় আমরা অনেক আগে পেরিয়ে এসেছি।”
উল্লেখ্য, গত ১ এপ্রিল নয়া দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে সিবিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডিপি কোহলির ১৯ তম স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি এনভি রামন। সেখানেই তিনি বলেছিলেন, “ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলগুলি বদলে গেলেও প্রতিষ্ঠান হিসেবে আপনাদের স্থায়ী ও অটল থাকতে হবে। প্রাথমিকভাবে সিবিআই মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন উঠেছে।”
এর আগে ২০১৩ সালে কোলফিল্ড কেলেঙ্কারি মামলার সময়ও সুপ্রিম কোর্টের তরফে সিবিআইকে খাঁচা বন্দি তোতাপাখি বলে অ্যাখা দিয়েছিল।