নয়া দিল্লি: নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগে সংসদ (Parliament) মুলতুবি হয়ে যাওয়া অসন্তুষ্ট কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী (Prahlad Joshi)। শুক্রবার তিনি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, “সংসদে বিরোধীরা কী করেছে, তা সকলেই দেখেছে। মনে হচ্ছে ওনারা স্থির করেই এসেছিলেন যে রাজ্যসভায় কোনও কাজ হতে দেবেন না।”
গত ২৯ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছিল সংসদের শীতকালীন অধিবেশন(Winter Session of Parliament)। আগামী ২৩ ডিসেম্বর অধিবেশন চলার কথা ছিল। কিন্তু বিরোধীদের বিক্ষোভের জেরে তা একদিন আগেই মুলতুবি করে দিতে হয়। শীতকালীন অধিবেশনের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাংসদদের উদ্দেশ্য়ে বলেছিলেন, “সরকার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে প্রস্তুত। আমরা চাই সংসদে আলোচনা হোক, তবে শান্তিও যেন বজায় থাকে। সরকারের বিরুদ্ধে হোক বা সরকারের কোনও সিদ্ধান্ত- প্রশ্ন উঠতেই পারে। তবে সংসদের অধ্যক্ষ ও স্পিকারের সম্মান যাতে রক্ষা হয়, তাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের এমন আচরণ বজায় রাখা উচিত, যা পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।”
তবে প্রধানমন্ত্রীরই বলাই সার, অধিবেশন শুরুর প্রথম দিন থেকেই বিরোধীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে সংসদের দুই কক্ষ। অধিবেশনের প্রথমদিনই লোকসভা ও রাজ্যসভায় কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পেশ করা হলে, বিরোধীরা এই বিল নিয়ে আলোচনার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। বাধ্য হয়ে ধ্বনি ভোটের মাধ্যমেই এই বিল পাশ করাতে হয়।
এরপর বাদল অধিবেশনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য রাজ্য়সভার ১২ জন সাংসদকে গোটা শীতকালীন অধিবেশনের জন্য সাসপেন্ড করা হলে ফের সুর চড়ায় বিরোধীরা। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু বরখাস্ত হওয়া সাংসদদের ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চাওয়ার প্রস্তাব দিলেও, তারা সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয় এবং সংসদের বাইরে, গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে। গোটা অধিবেশন জুড়েই বরখাস্ত হওয়া সাংসদরা অবস্থান বিক্ষোভ চালান। বাধ্য হয়েই সংসদ অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়।
শুক্রবার একটি বিবৃতি জারি করে কেন্দ্রীয় সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, “দেশের সমস্ত মানুষ এমনকি ইতিহাসও সাক্ষী রয়েছে সংসদে কী ধরনের চিৎকার-চেঁচামেচি ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেছিল বিরোধীরা। সংসদে এইধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করাই তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সংসদে যাতে সুষ্ঠভাবে অধিবেশন না হয়, তার জন্য তারা যেকোনও সুযোগ পেলেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন। গণতন্ত্রের মন্দিরকে রাস্তায় লড়াইয়ের আখাড়ায় পরিণত করেছেন বিরোধীরা, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। ”
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু যে বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলে সংসদে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন, সে কথাও তিনি উল্লেখ করে বলেন, “রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও বিরোধীদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু কংগ্রেসের সাংসদরা কথা বলতেও রাজি হননি। তারাই চাননি যে সুষ্ঠভাবে অধিবেশন পরিচালিত হোক।”
তিনি বিবৃতিতে বলেন, “সংসদের বিরোধী দলগুলির সাংসদদের অনুরোধ করছি আপনারা বিরোধীর ভূমিকা গ্রহণ করুন এবং শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পরিচালনার কাজে সহযোগিতা করুন। অসত্য বিবৃতি দেবেন না।”