কৃষি আইন প্রয়োগে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, সমাধান খুঁজতে গঠিত হবে কমিটি

কেন্দ্র ও আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে আলোচনার জন্য চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট।

কৃষি আইন প্রয়োগে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, সমাধান খুঁজতে গঠিত হবে কমিটি
অলঙ্করন: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Jan 12, 2021 | 2:03 PM

নয়া দিল্লি: কৃষি আইন সংক্রান্ত মামলার শুনানি শুরু করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার দুই পক্ষের আইনজীবীদের বয়ান শোনার পর শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়েছিল, আজ মঙ্গলবার মামলার রায়দান করা হবে। আদালতের বিচার প্রক্রিয়ায় বিস্তারিত বিবরণী-

১.শুনানির শুরুতেই আন্দোলনকারী কৃষকদের কমিটির সিদ্ধান্ত নাকচ করে দেওয়ার সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে বলেন, “আমরা আইনগুলির বৈধতা নিয়ে ও আন্দোলনের ফলে প্রভাবিত নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরমধ্যে অন্যতম হল আইন স্থগিত করা ও কমিটি গঠন করা।”

২. তিনি কৃষকদের কমিটির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেন, “এই কমিটি আমাদের জন্য তৈরি হবে। যাঁরা এই সমস্যার সমাধান চান, তাঁরা কমিটির সামনে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করবেন। এই কমিটি কোনও নির্দেশ পাশ করবে না বা আপনাদের শাস্তি দেবে না, এরা শুধু আমাদের কাছে সামগ্রিক বিষয়ের একটি রিপোর্ট পেশ করবে। আইনী প্রক্রিয়ারই একটি অংশ হল এই কমিটি। আমরা আইনে স্থগিতাদেশ জারি করার পরিকল্পনা করছি, কিন্তু তা অনির্দিষ্টকালের জন্য নয়।”

৩. আইনজীবী এম এল শর্মা কৃষকদের বক্তব্য জানিয়ে বলেন, “বহু মানুষ আলোচনার জন্য আসছেন, কিন্তু প্রধান ব্যক্তি যিনি, প্রধানমন্ত্রী নিজেই আলোচনার জন্য আসছেন না।” এর জবাবে সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, আমরা প্রধানমন্ত্রীকে কোথাও যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিতে পারি না, তিনি এই মামলার সঙ্গে সংযুক্ত নন।

৪. সিনিয়র আইনজীবী হরিশ সালভে বলেন, “আইনে স্থগিতাদেশকে রাজনৈতিক জয় হিসাবে দেখা উচিত নয়। এটি আইনের উপর গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশের একটি প্রক্রিয়া হিসাবেই দেখা উচিত।”

৫. ৪০০টি কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী দুশ্যন্ত দাভে, এইচ এস ফুলকা, কোলিন গনসালভেস আজ শীর্ষ আদালতে উপস্থিত হননি। কমিটি গঠন নিয়ে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে আজ আদালতে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিল তাঁদের।

৬. সুপ্রিম কোর্ট জানায়, কৃষকরা যাতে দিল্লি পুলিস কমিশনারের কাছে রামলীলা ময়দান বা অন্য কোনও স্থানে আন্দোলন করার জন্য আবেদন করতে পারে, তা নির্দেশপত্রে উল্লেখ করা থাকবে।

৭.সুপ্রিম কোর্টের তরফে প্রশ্ন করা হয়, “আমাদের কাছে একটি আবেদনপত্রে বলা হয়েছে যে একটি নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠান আন্দোলনে মদত জোগাচ্ছে। এই বিষয়টি কী অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীকার করছেন?” এর জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেন, “আমরা বলেছি যে খলিস্তানিরা এই আন্দোলনে প্ররোচনা দিচ্ছে।”

৮. অ্যাটর্নি জেনারেলকে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, “যদি কোনও নিষিদ্ধ সংস্থার যুক্ত থাকার প্রমাণ থাকে বা যদি কেউ আমাদের সামনে এই বিষয়ে অভিযোগ জানায়, সে বিষয়ে আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। আগামীকালের মধ্যে এই বিষয়ে একটি হলফনামা জমা করুন।” অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, আগামীকালের মধ্যেই হলফনামা দাখিল করা হবে এবং গোয়েন্দা সংস্থার রেকর্ডও জমা করা হবে।

৯. প্রজাতন্ত্র দিবসে আন্দোলনকারী কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিল বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছিল দিল্লি পুলিস। সুপ্রিম কোর্ট সেই বিষয়ে একটি নোটিস জারি করল।

১০. আগামী নির্দেশ অবধি কৃষি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট।

১১. কেন্দ্র ও আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে আলোচনার জন্য চার সদস্য়ের একটি কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট।