Uttar Pradesh: বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া, এক মাস ধরে তালগাছের মাথায় এই ব্যক্তি, স্নান-শৌচ বন্ধ পাড়ার মহিলাদের
Uttar Pradesh man living on palm tree: গত একমাস ধরে তিনি ৮০ ফুট লম্বা তাল গাছে বসবাস করছেন স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় হতাশ উত্তর প্রদেশের এক ব্যক্তি। এদিকে তার জন্য স্নাম-শৌচকর্ম বন্ধ হওয়ার জোগার পাড়ার অন্যান্য মহিলাদের।
লখনউ: স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ কার না হয়? কিন্তু তাই বলে স্বামী তাল গাছের মাথায় চড়ে বসবেন! শুনলে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে ঠিক এমনটাই ঘটেছে। স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত ঝগড়া-বিবাদে ক্লান্ত ওই ব্যক্তি শুধু একটি ৮০ ফুট দীর্ঘ তাল গাছের মাথায় চড়ে বসেননি, গত একমাস ধরে তিনি সেখানেই বসবাস করছেন। এদিকে, তার জন্য পাড়ার অন্যান্য বাড়ির মেয়ে-বউদের স্নান-শৌচকৃত্য মাথায় উঠেছে। অত্যদ্ভুত এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর প্রদেশের মৌ জেলার কোপাগঞ্জের এক গ্রামে।
সূীত্রের খবর, ৪২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির নাম রাম প্রবেশ। তাঁর অভিযোগ গত ছয় মাস ধরে তার স্ত্রী সমানে তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করতেন। সকাল থেকেই বাড়িতে অশান্তি লেগে থাকত। স্ত্রী তাঁকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেছেন, মারধর করেছেন বলে দাবি করেছেন রাম প্রবেশ। স্ত্রীর এই প্রকার আচরণে প্রচণ্ড হতাশ রাম প্রবেশ একটু শান্তির খোঁজে, প্রায় এক মাস আগে ওই তালগাছটির মাথায় উঠে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে তিনি সেখানেই বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। উপর থেকে একটি দড়ি ঝুলিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর পরিবারের লোকজন সেই দড়ির সঙ্গেই খাবার ও জল বেঁধে দেন। রাম প্রবেশ তালগাছের উপর থেকেই দড়ি টেনে সেই খাবার ও জল উপরে তুলে নেন। আর গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন, গভীর রাতে কোনও এক সময় তিনি গাছ থেকে নিচে নেমে আসেন। মলত্যাগ করেন, আবার তিনি গাছে উঠে যান।
এদিকে, রাম প্রবেশ গত একমাস ধরে গাছের উপরে থাকায়, মহা-সমস্যায় পড়েছেন গ্রামবাসীরা। গাছের উপর থেকে আশপাশের বাড়ির ভিতরের দৃশ্য সবই প্রায় নজরে যায় তাঁর। ফলে, গোপনীয়তা বলে আর কিছু থাকছে না তাঁর প্রতিবেশিদের। গ্রামের প্রধান দীপক কুমার বলেছেন, “গ্রামবাসীরা তাঁর তালগাছের উপর বসবাস করার বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। ওই গাছটির আশেপাশে বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। সেই সব বাড়িতে বসবাসকারীরা বাড়ির ভিতর কখন কী করছেন, সবই তিনি উপর থেকে পর্যবেক্ষণ করেন। এতে গ্রামবাসীদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে।” অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে গ্রামের মেয়ে-বউরা স্নান করা, শৌচকর্ম করা প্রায় বন্ধই করে দিয়েছেন। পাছে, রাম প্রবেশের চোখ যায়!
এই অবস্থায় গত একমাসে প্রায় রোজই এসে গ্রামবাসীরা রাম প্রবেশকে নীচে নেমে আসার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু, কে শোনে কার কথা? নিজের জেদে অনড় তিনি। বউ এমন অপমান করেছেন, যে তিনি গাছের উপরেই থাকবেন। এরপর বাধ্য হয়ে গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, পুলিশের ভয়ে রাম প্রবেশ হয়ত নীচে নামবেন। কিন্তু এই ক্ষেত্রে পুলিশও ব্যার্থ হয়েছে। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, পুলিশ এসে তাঁকে বারবার করে নীচে নেমে আসার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু, তাদের কড়া কথাতেও টলেনি রাম প্রবেশ। ৮০ ফুট উঁচু গাছের উপরে থাকায় পুলিশের লম্বা হাতও তাঁকে ছুঁতে পারেনি। রাম প্রবেশ কথা না শোনায় পুলিশ শেষে গোটা ঘটনাটার একটি ভিডিও রেকর্ড করে ফিরে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের সমস্যা দূর হয়নি।
রাম প্রবেশের বাবা শ্রীকিশুন রাম জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে রাম প্রবেশের এই ধনুর্ভাঙা পণের কথা গ্রামের আশেপাশেও ছড়িয়ে পড়ছে। আশপাশের গ্রামের লোকজন প্রতিদিনই তাঁকে দেখতে ওই স্থানে আসেন। রোজই ভিড় বাড়ছে। এর আগে জুলিয়া লরেন হিল নামে এক মার্কিন পরিবেশ কর্মী, ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি ১৮০ ফুট লম্বা রেডউড গাছে, ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে ৭৩৮ দিন ধরে বসবাস করেছিলেন। তবে তিনি গাছটিতে বসবাস করেছিলেন যাতে গাছটি না কাটা পড়ে। রাম প্রবেশ আর কতদিন তাল গাছে বাস করেন, সেটাই দেখার।