Uttar Pradesh: ২ বউ, ৯ সন্তান আর ৬ প্রেমিকা, পেট চালাতে জালিয়াতি ইনফ্লুয়েন্সায়ের
UP Social media influencer arrested: বুধবার রাতে নৈশভোজের টেবিল থেকেই উত্তর প্রদেশের এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে গ্রেফতার করেছে সরোজিনীনগর থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল বীমা এবং চিটফান্ডের মাধ্যমে লোক ঠকানো এবং জাল ভারতীয় মুদ্রা ছড়ানো-সহ মোট নয়টি ভিন্ন ভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, কেন অপরাধের জগতে পা বাড়াল এই ষষ্ঠ শ্রেণি অবধি স্কুলে পড়া ইনফ্লুয়েন্সার? অজিত জানিয়েছে, দুই বউ, নয় সন্তান এবং ছয় প্রেমিকার মুখে খাবার তুলে দিতে, এছাড়া তার উপায় ছিল না!
লখনউ: বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে, বউকে নিয়ে এক দামি হোটেলে নৈশভোজে ব্যস্ত ছিল ৪১ বছরের অজিত মৌর্য। সেই সঙ্গে চলছিল নিউ ইয়ারের সময় বিদেশের কোনও সমুদ্র তীরবর্তী শহরে উড়ে গিয়ে ছুটি কাটানোর। কিন্তু, সেই পরিকল্পনা আপাতত বিশ বাঁও জলে। কারণ, বুধবার রাতে নৈশভোজের টেবিল থেকেই উত্তর প্রদেশের এই সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারকে গ্রেফতার করেছে সরোজিনীনগর থানার পুলিশ। তার বিরুদ্ধে জাল বীমা এবং চিটফান্ডের মাধ্যমে লোক ঠকানো এবং জাল ভারতীয় মুদ্রা ছড়ানো-সহ মোট নয়টি ভিন্ন ভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু, কেন অপরাধের জগতে পা বাড়াল এই ষষ্ঠ শ্রেণি অবধি স্কুলে পড়া ইনফ্লুয়েন্সার? মিলেছে চমকে দেওয়া উত্তর। তদন্তকারীদের অজিত জানিয়েছে, দুই বউ, নয় সন্তান এবং ছয় প্রেমিকার মুখে খাবার তুলে দিতে, এছাড়া তার উপায় ছিল না!
জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত রিল ভিডিয়ো পোস্ট করত অজিত। তবে, তার আড়ালেই চলত তার অপরাধ। ধর্মেন্দ্র কুমার নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন। চিটফান্ডে টাকা রেখে, সেই অর্থ দ্বিগুণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে, তাঁর সঙ্গে ৩ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছে অজিত বলে, অভিযোগ করেছিলেন তিনি। সরোজিনিনগর থানার স্টেশন হাউস অফিসার, শৈলেন্দ্র গিরি জানিয়েছেন, আগে মুম্বইয়ে প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে ফলস সিলিং তৈরির কাজ করত অজিত। সেখানেই, ২০০০ সালে প্রথম বিয়ে করেছিল সে। ৪০ বছরের সঙ্গীতার সঙ্গে সাত সন্তান আছে তার। কিন্তু ফলস সিলিং তৈরির কাজে বিশেষ সাফল্য পায়নি সে। ২০১৬-য় তার কাজ চলে গিয়েছিল। তারপর সে গোন্ডায় তার গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছিল এবং সেই সময় থেকেই হাত পাকিয়েছিল অপরাধে।
২০১৬-তেই গোন্ডায় তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল চুরি ও অনুপ্রবেশের। কিন্তু, কোনওভাবে সে আইনের হাত থেকে বেঁচে গিয়েছিল। আর তাতেই অপরাধের জগতের আরও গভীরে প্রবেশ করা শুরু করেছিল সে। ২০১৮ সালে সুশিলা নামে এক ৩০ বছরের যুবতীর সংস্পর্শে এসে, তাঁর জালিয়াতি ব্যবসা অন্য স্তরে উন্নীত হয়েছিল। ওই সময় থেকেই সে জাল নোট ছড়ানো এবং জাল চিটফান্ডের কারবার শুরু করে। তাদের দুজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল আরও কয়েকজন অপরাধী। এক বছর পরই সুশিলাকে বিয়ে করেছিল অজিত। অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবন যাপন করত তারা। এই সময় দুই সন্তানের জন্ম দেন সুশিলা।
মজার বিষয় হল, সুশিলাকে বিয়ে করলেও, সঙ্গীতাকে রাস্তায় ফেলে দেয়নি অজিত। পুলিশ জানিয়েছে, দুই স্ত্রীর জন্য সে দুটি আলাদা আলাদা বাড়ি তৈরি করেছিল। তবে, নিজে থাকত একটি অন্য ভাড়া বাড়িতে। দুই স্ত্রীকেই দারুণ বিলাসবহুলভাবে রেখেছিল সে। জালিয়াতির আয় দু’জনের মধ্যে সমানভাবে ভাগ করে দিত। এখানেই শেষ নয়, অজিতের কল লিস্ট যাচাই করে পুলিশ তার আরও ৬ প্রেমিকার খোঁজ পেয়েছে। এই মহিলাদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি কাটাতে যেত অজিত। পুলিশ আরও জানিয়েছে, তার জালিয়াতির ফাঁদে যাতে আরও মানুষ এসে ধরা দেয়, তার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় তার উপস্থিতিকে কাজে লাগাত অজিত।